ঢাকা ০২:৩০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ব্রিজ আছে সড়ক নেই, ভোগান্তি এলাকাবাসীর

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:২০:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ২১ বার

ব্রিজ থাকলেও নেই সংযোগ সড়ক। ব্রিজের দুই পাশের মাটি ভরাট না থাকায় ব্রিজটি কোনো কাজে তো আসছেই না উল্টো এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈল উপজেলার নন্দুয়ার ইউনিয়নের জওগাঁও লোলতই ব্রিজ থেকে গাজিরহাট ভন্ডগ্রামসহ আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের হাজারো মানুষ।

দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজটি সড়কবিহীন অবস্থায় পড়ে থাকলেও ব্রিজের দুপাশের রাস্তা পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

রাণীশংকৈল উপজেলার নন্দুয়ার ইউনিয়নের জওগাঁও লোলতই ব্রিজ থেকে গাজিরহাট ভন্ডগ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃর্ণ ৫ কিলোমিটার একটি বিল। এখানে প্রায় ২০ হাজার হেক্টরেরও বেশি কৃষি জমি জুড়ে রয়েছে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। কিন্ত যাতায়াতের কোনো রাস্তা থাকায় চরম কষ্ট আর ভোগান্তি নিয়ে করতে হয় চাষাবাদ। সেইসঙ্গে কৃষকরা যেন নিজেরাই হয়ে উঠেছেন যান্ত্রিক বাহনের বিকল্প মাধ্যম হিসাবে।

আবাদি জমির মধ্যে তৈরি করা কাঁচা রাস্তার মধ্য দিয়ে যান্ত্রিক গাড়ি চলাচল ও যাতায়াতে অসুবিধা হওয়ায় ওই এলাকার সকল কৃষক চৈত্রের খরা রোদে নিজেরাই কাঁধে করে ফসল বাসায় বহন করেন। অন্যদিকে বর্ষাকালে খেতের ফসল সাঁতার কেটে মাথায় তুলে নিয়ে যেতে হয় বলে জানান স্থানীয় কৃষকরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে বৃহত্তর বগুড়া ও দিনাজপুর জেলা ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পের আওতায় লোলতই খাল খনন করেন। এতে করে বিলের পানি খালের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় কৃষকরা বছরে আমন বোরো ধান ও সরিষাসহ কয়েকটি ফসল চাষাবাদ করতে পারছেন। কিন্তু খালের উপরে অব্যবহৃত রাস্তা পাকা না হওয়ায় মাটি পুনরায় খালে পড়ে যাওয়ায় খালটি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে পুনরায় জলবদ্ধতা তৈরি হওয়ায় কৃষকরা চাষাবাদে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

স্থানীয় কয়েকজন কৃষক বলেন, লোলতই খাল খনন করার পর এখানকার জমিতে ফসলের অনেক ভালো ফলন হচ্ছে। আগে জলাবদ্ধতার কারণে একটি ফসলের বেশি করা যেত না। এখন ওইসব জমিতে তিনটি ফসল হচ্ছে। কিন্তু ফসল ঘরে তোলার সময় অনেক দুর্ভোগ আর ভোগান্তিতে পড়তে হয় আমাদের। অনেক দূর থেকে ফসল মাথায় করে বয়ে আনতে হয় আমাদের । অনেক সময় শ্রমিক পাওয়া যায় না। সময় মতো ফসল কাটতে না পাড়লে ফসল ঝড়ে যায়। এ সময় স্থানীয়রা খালের উপরে অব্যবহৃত রাস্তাটি দ্রুত পাকা করে দেওয়ার জোর দাবি জানান।

রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি অফিসার শহিদুল ইসলাম জানান, লোলতই বিলে আগে হাঁটু সমান পানি জমে থাকার কারণে বছরে একটির বেশি ফসল ফলানো সম্ভব হতো না। বিএডিসির মাধ্যম খাল খননের ফলে ২০ হাজার হেক্টর জমিতে এখন তিনটি ফসল আবাদ করা সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু বিস্তীর্ণ এই ফসলের মাঠের আশেপাশে যাতায়াতের কোনো রাস্তা না থাকায় সময় মতো ফসল ঘরে তুলতে কৃষকদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। কৃষকদের চাষাবাদের সুবিধার্থে খালের পাড়ের ৫ কিলোমিটার রাস্তা পাকা করা হলে তারা অনেক উপকৃত হবেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ব্রিজ আছে সড়ক নেই, ভোগান্তি এলাকাবাসীর

আপডেট টাইম : ০৬:২০:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ব্রিজ থাকলেও নেই সংযোগ সড়ক। ব্রিজের দুই পাশের মাটি ভরাট না থাকায় ব্রিজটি কোনো কাজে তো আসছেই না উল্টো এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈল উপজেলার নন্দুয়ার ইউনিয়নের জওগাঁও লোলতই ব্রিজ থেকে গাজিরহাট ভন্ডগ্রামসহ আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের হাজারো মানুষ।

দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজটি সড়কবিহীন অবস্থায় পড়ে থাকলেও ব্রিজের দুপাশের রাস্তা পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

রাণীশংকৈল উপজেলার নন্দুয়ার ইউনিয়নের জওগাঁও লোলতই ব্রিজ থেকে গাজিরহাট ভন্ডগ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃর্ণ ৫ কিলোমিটার একটি বিল। এখানে প্রায় ২০ হাজার হেক্টরেরও বেশি কৃষি জমি জুড়ে রয়েছে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। কিন্ত যাতায়াতের কোনো রাস্তা থাকায় চরম কষ্ট আর ভোগান্তি নিয়ে করতে হয় চাষাবাদ। সেইসঙ্গে কৃষকরা যেন নিজেরাই হয়ে উঠেছেন যান্ত্রিক বাহনের বিকল্প মাধ্যম হিসাবে।

আবাদি জমির মধ্যে তৈরি করা কাঁচা রাস্তার মধ্য দিয়ে যান্ত্রিক গাড়ি চলাচল ও যাতায়াতে অসুবিধা হওয়ায় ওই এলাকার সকল কৃষক চৈত্রের খরা রোদে নিজেরাই কাঁধে করে ফসল বাসায় বহন করেন। অন্যদিকে বর্ষাকালে খেতের ফসল সাঁতার কেটে মাথায় তুলে নিয়ে যেতে হয় বলে জানান স্থানীয় কৃষকরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে বৃহত্তর বগুড়া ও দিনাজপুর জেলা ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পের আওতায় লোলতই খাল খনন করেন। এতে করে বিলের পানি খালের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় কৃষকরা বছরে আমন বোরো ধান ও সরিষাসহ কয়েকটি ফসল চাষাবাদ করতে পারছেন। কিন্তু খালের উপরে অব্যবহৃত রাস্তা পাকা না হওয়ায় মাটি পুনরায় খালে পড়ে যাওয়ায় খালটি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে পুনরায় জলবদ্ধতা তৈরি হওয়ায় কৃষকরা চাষাবাদে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

স্থানীয় কয়েকজন কৃষক বলেন, লোলতই খাল খনন করার পর এখানকার জমিতে ফসলের অনেক ভালো ফলন হচ্ছে। আগে জলাবদ্ধতার কারণে একটি ফসলের বেশি করা যেত না। এখন ওইসব জমিতে তিনটি ফসল হচ্ছে। কিন্তু ফসল ঘরে তোলার সময় অনেক দুর্ভোগ আর ভোগান্তিতে পড়তে হয় আমাদের। অনেক দূর থেকে ফসল মাথায় করে বয়ে আনতে হয় আমাদের । অনেক সময় শ্রমিক পাওয়া যায় না। সময় মতো ফসল কাটতে না পাড়লে ফসল ঝড়ে যায়। এ সময় স্থানীয়রা খালের উপরে অব্যবহৃত রাস্তাটি দ্রুত পাকা করে দেওয়ার জোর দাবি জানান।

রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি অফিসার শহিদুল ইসলাম জানান, লোলতই বিলে আগে হাঁটু সমান পানি জমে থাকার কারণে বছরে একটির বেশি ফসল ফলানো সম্ভব হতো না। বিএডিসির মাধ্যম খাল খননের ফলে ২০ হাজার হেক্টর জমিতে এখন তিনটি ফসল আবাদ করা সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু বিস্তীর্ণ এই ফসলের মাঠের আশেপাশে যাতায়াতের কোনো রাস্তা না থাকায় সময় মতো ফসল ঘরে তুলতে কৃষকদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। কৃষকদের চাষাবাদের সুবিধার্থে খালের পাড়ের ৫ কিলোমিটার রাস্তা পাকা করা হলে তারা অনেক উপকৃত হবেন।