বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘যতদিন আমরা ন্যায় ও কল্যাণের পথে থাকব, ততদিন আপনাদের সহযোগিতা চাই। আপনাদের দোয়া, পরামর্শ ও সমর্থন চাই, আপনাদের পাশে চাই। কিন্তু যদি আমাদেরকে দেখেন আমরা জনগণের প্রত্যাশা ও স্বার্থের বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করছি, অন্যায় করছি, চাঁদাবাজি করছি, দখলদারিত্ব করছি বা অন্য সকল কাজে জড়িয়ে পড়ছি, তাহলে আপনারা আমাদের কঠোর সমালোচনা করে মেরুদণ্ড সোজা করে দেবেন।’
গতকাল সোমবার রাতে নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীতে এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘যারা দেশের জন্য লড়াই করে জীবন দিয়েছে, তারা আমার ভাই? সেদিন আমাদের মায়েরা, বোনেরা, বাবারা, লক্ষ-লক্ষ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল কেন? কারণ, এ দেশের ১৮ কোটি মানুষ। একটা গোষ্ঠী ব্যতীত, সেই গোষ্ঠীটি আপনারা সকলেই চিনেন। আমরা আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই, যাতে কোনোদিন আমরা জুলুমবাজ হয়ে না যাই।’
তিনি বলেন, ‘জুলুমবাজরা আল্লাহর দুশমন। তাই তাদের প্রতি আল্লাহ তায়ালার লানত। ২০০৯ সালে যারা চৌকস, দেশপ্রেমিক ৫৭ জন সেনা অফিসারকে হত্যা করেছিল, তারা এই রাজনীতি অব্যাহত রেখেছে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত। ’
নোয়াখালীর সংগ্রামের ইতিহাস স্মরণ করে জামায়াতের আমির বলেন, ‘নোয়াখালীর মাটিতেও ২০১৩ সালে অনেক রক্ত ঝরেছে। তাদের বাড়ি বাড়ি যাওয়ার আমার সুযোগ হয়েছে। তাদের মায়ের কান্না, বাবার কান্না ও সন্তানের কান্না আমার নিজের কানে শোনার সুযোগ হয়েছে। তারা দেশকে একটা জাহান্নামে পরিণত করতে চেয়েছে।’
জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের শহীদদের স্মরণ করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন,‘যারা শহীদ হয়েছে, তাদের জন্য আমরা এই পরিবর্তন পেয়েছি, নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। তাদের মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন শহীদ হিসেবে কবুল করুন ও জান্নাতের উচ্চ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করুন এবং যারা আহত হয়েছে, তাদের আল্লাহ সুস্থতা দান করুন।’
বর্তমান সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন,‘নিহত শহীদদের যথাযথ মর্যাদা প্রদান করুন, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান করুন এবং যারা আন্দোলনে আহত হয়ে কষ্ট পাচ্ছে, তাদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। জামায়াতে ইসলামী তার সাধ্যমতো সকল ক্ষেত্রে আপনাদের সহযোগিতা করবে।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দেশ ও দেশের মানুষের জন্য রাজনীতি করে উল্লেখ করে জামায়াতের আমির বলেন, ‘আমরা দুর্নীতি ও বৈষম্যহীন সমাজ চাই, আমরা চাই না দেশে আর কোনোভাবে ফ্যাসিবাদ ফিরে আসুক। আমাদের সন্তানরা তা বুঝেছে, তাই তাদের স্লোগান ছিল—‘‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ।’’’
নোয়াখালী শহর জামায়াতের আমীর মাওলানা মো ইউসুফের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাছুম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও কুমিল্লা মহানগরীর আমীর কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য অধ্যাপক লিয়াকত আলী ভুঁইয়া, মাওলানা আলা উদ্দিন, মাওলানা শামছুদ্দিন, ফেনী জেলা আমীর মুফতী মাওলানা আব্দুল হান্নান, নোয়াখালী জেলা নায়েবে আমির মাওলানা সাইয়েদ আহাম্মদ, জেলা সেক্রেটারি মাওলানা বোরহান উদ্দিন ও নোয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির নব নির্বাচিত সভাপতি অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।