ঢাকা ১২:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাত কোটি টাকার স্বর্ণ ফেরত দিলেন বাংলাদেশি ড্রাইভার

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:২০:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ অক্টোবর ২০১৬
  • ২২৯ বার

প্যাসেঞ্জারের ফেলে যাওয়া সাত কোটি টাকার সোনা পেয়েও ফিরিয়ে দিলেন এক বাংলাদেশি ট্যাক্সিক্যাব ড্রাইভার। দুবাইয়ে বাংলাদেশি ক্যাব ড্রাইভার লিটন চন্দ্র নাথ পালের এমন সততায় মুগ্ধ সে দেশের কর্তৃপক্ষ।

লিটনকে নিয়ে ‘দুবাই ক্যাবি রিটার্নস ২৫ কেজি গোল্ড টু প্যাসেঞ্জার’ শিরোনামে খবর প্রকাশ করেছে গালফ নিউজ।
সততার এমন উদারহরণ রাখায় লিটনকে পুরস্কৃত করেছে দুবাইয়ের কর্তৃপক্ষ।

দেশটির পরিবহন কর্তৃপক্ষের (আরটিএ)র প্রধান নির্বাহী ড. ইউসুফ আল আলী লিটনকে তাৎক্ষণিকভাবে ১ হাজার দিরহাম পুরস্কার এবং এক বছরের জন্য ফ্রি হাউজিংয়ের সুবিধা ঘোষণা করেন। এছাড়া আরটিএর রেল শাখার সিইও আব্দুল মোহসিন ইবরাহীম ইউনুস লিটনকে ৫ হাজার দিরহাম পুরস্কার দেন। সততার স্বীকৃতিস্বরূপ একটি সার্টিফিকেটও তাকে প্রদান করে কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশি ক্যাব ড্রাইভার লিটন কাজ করেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ট্যাক্সি কর্পোরেশনের অধীনস্থ দুবাই ট্যাক্সি কর্পোরেশনে। অন্যান্য দিনের মতই মধ্যরাতের শেষ শিফটে ডিউটি করছিলেন লিটন। দুবাই বিমানবন্দর থেকে দেইরার মুরাক্কাবাতে তার ট্যাক্সি করে চার যাত্রী পরিবহণের সময় ওই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে। ট্যাক্সি ড্রাইভার লিটন যাত্রীদের রাত প্রায় ২.৪৫ মিনিটে গন্তব্যে পৌঁছে দেন। তাদের কাছে ছিলো চারটি ব্যাগ।সাত কোটি টাকার স্বর্ণ ফেরত দিলেন বাংলাদেশি ড্রাইভার

প্যাসেঞ্জারদের যথাস্থানে নামিয়ে দিয়ে পুনরায় নিজের ডিউটিতে ফিরে যান লিটন। এ সময় ট্যাক্সিক্যাবের রেডিওতে আরটিএর কাস্টমার সেন্টার থেকে ব্যাগ হারানোর বিষয়টি জানানো হয় সকল ক্যাব ড্রাইভারদের। টরে নিজের ক্যাবের ট্র্যাংকে ব্যাগটি খুঁজে পান লিটন।
আমিরাতের স্থানীয় মুদ্রায় সোনার বারগুলোর দাম কমপক্ষে ৩৫ লাখ দিরহাম। বাংলাদেশি টাকায় সাত কোটিরও বেশি। তবে এত টাকার সোনা দেখেও সততা টলেনি লিটনের। যথারীতি রেডিওতে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের হাতে সোনার বারগুলো তুলে দিয়ে আসেন লিটন।

লিটন বলেন, তখনকার মতো আমার ডিউটি প্রায় শেষ। ওই সময় আরটিএর কাস্টমার সাপোর্ট থেকে ফোন পাই। আমার ট্যাক্সিতে কোনো যাত্রীর ব্যাগ আছে কিনা জানতে চায় দুবাই পুলিশ। বললাম, চেক করে দেখছি। পরে একটি ধূসর রঙের ল্যাপটপের ব্যাগ দেখতে পাই যার ভেতরে স্বর্ণের বারগুলো রাখা ছিল। তখনই কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাই। পরে আরটিএর কাছে ব্যাগটি হস্তান্তর করি।

লিটন আরো বলেন, ব্যাগের মধ্যে আটটি স্বর্ণের বার থেকে আমি আশ্চর্য হয়ে যাই। কর্তৃপক্ষ মাপ দেওয়ার পর দেখেন তাতে ২৫ কেজি স্বর্ণ আছে। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ আমরা স্বর্ণগুলো ফিরিয়ে দিই। স্বর্ণের মালিক শ্বেতাঙ্গ সেই লোকটি লিবিয়ার নাগরিক।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সাত কোটি টাকার স্বর্ণ ফেরত দিলেন বাংলাদেশি ড্রাইভার

আপডেট টাইম : ০১:২০:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ অক্টোবর ২০১৬

প্যাসেঞ্জারের ফেলে যাওয়া সাত কোটি টাকার সোনা পেয়েও ফিরিয়ে দিলেন এক বাংলাদেশি ট্যাক্সিক্যাব ড্রাইভার। দুবাইয়ে বাংলাদেশি ক্যাব ড্রাইভার লিটন চন্দ্র নাথ পালের এমন সততায় মুগ্ধ সে দেশের কর্তৃপক্ষ।

লিটনকে নিয়ে ‘দুবাই ক্যাবি রিটার্নস ২৫ কেজি গোল্ড টু প্যাসেঞ্জার’ শিরোনামে খবর প্রকাশ করেছে গালফ নিউজ।
সততার এমন উদারহরণ রাখায় লিটনকে পুরস্কৃত করেছে দুবাইয়ের কর্তৃপক্ষ।

দেশটির পরিবহন কর্তৃপক্ষের (আরটিএ)র প্রধান নির্বাহী ড. ইউসুফ আল আলী লিটনকে তাৎক্ষণিকভাবে ১ হাজার দিরহাম পুরস্কার এবং এক বছরের জন্য ফ্রি হাউজিংয়ের সুবিধা ঘোষণা করেন। এছাড়া আরটিএর রেল শাখার সিইও আব্দুল মোহসিন ইবরাহীম ইউনুস লিটনকে ৫ হাজার দিরহাম পুরস্কার দেন। সততার স্বীকৃতিস্বরূপ একটি সার্টিফিকেটও তাকে প্রদান করে কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশি ক্যাব ড্রাইভার লিটন কাজ করেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ট্যাক্সি কর্পোরেশনের অধীনস্থ দুবাই ট্যাক্সি কর্পোরেশনে। অন্যান্য দিনের মতই মধ্যরাতের শেষ শিফটে ডিউটি করছিলেন লিটন। দুবাই বিমানবন্দর থেকে দেইরার মুরাক্কাবাতে তার ট্যাক্সি করে চার যাত্রী পরিবহণের সময় ওই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে। ট্যাক্সি ড্রাইভার লিটন যাত্রীদের রাত প্রায় ২.৪৫ মিনিটে গন্তব্যে পৌঁছে দেন। তাদের কাছে ছিলো চারটি ব্যাগ।সাত কোটি টাকার স্বর্ণ ফেরত দিলেন বাংলাদেশি ড্রাইভার

প্যাসেঞ্জারদের যথাস্থানে নামিয়ে দিয়ে পুনরায় নিজের ডিউটিতে ফিরে যান লিটন। এ সময় ট্যাক্সিক্যাবের রেডিওতে আরটিএর কাস্টমার সেন্টার থেকে ব্যাগ হারানোর বিষয়টি জানানো হয় সকল ক্যাব ড্রাইভারদের। টরে নিজের ক্যাবের ট্র্যাংকে ব্যাগটি খুঁজে পান লিটন।
আমিরাতের স্থানীয় মুদ্রায় সোনার বারগুলোর দাম কমপক্ষে ৩৫ লাখ দিরহাম। বাংলাদেশি টাকায় সাত কোটিরও বেশি। তবে এত টাকার সোনা দেখেও সততা টলেনি লিটনের। যথারীতি রেডিওতে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের হাতে সোনার বারগুলো তুলে দিয়ে আসেন লিটন।

লিটন বলেন, তখনকার মতো আমার ডিউটি প্রায় শেষ। ওই সময় আরটিএর কাস্টমার সাপোর্ট থেকে ফোন পাই। আমার ট্যাক্সিতে কোনো যাত্রীর ব্যাগ আছে কিনা জানতে চায় দুবাই পুলিশ। বললাম, চেক করে দেখছি। পরে একটি ধূসর রঙের ল্যাপটপের ব্যাগ দেখতে পাই যার ভেতরে স্বর্ণের বারগুলো রাখা ছিল। তখনই কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাই। পরে আরটিএর কাছে ব্যাগটি হস্তান্তর করি।

লিটন আরো বলেন, ব্যাগের মধ্যে আটটি স্বর্ণের বার থেকে আমি আশ্চর্য হয়ে যাই। কর্তৃপক্ষ মাপ দেওয়ার পর দেখেন তাতে ২৫ কেজি স্বর্ণ আছে। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ আমরা স্বর্ণগুলো ফিরিয়ে দিই। স্বর্ণের মালিক শ্বেতাঙ্গ সেই লোকটি লিবিয়ার নাগরিক।