ঢাকা ০৮:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আদার বিভিন্ন গুণ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:৪২:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ অক্টোবর ২০১৬
  • ২৬৭ বার

রান্নাবান্নার কাজে আদা ব্যবহারের কথা রাঁধুনীদের কাছে অজানা নয়। মূলত সুগন্ধযুক্ত বলে এটি মসলা হিসাবে রান্নার কাজে ব্যবহৃত হয়।

প্রায় ২০০০ বছর আগে থেকে চীনা ভেষজবিদেরা পাকস্থলীর নানা সমস্যায় আদা ব্যবহার করে আসছেন৷ আদার ভেষজ গুণের উল্লেখ রয়েছে মহাভারতে ও আয়ুর্বেদ মেডিসিনেও৷ আর বর্তমানের চিকিৎসা বিজ্ঞানীরাও আদার বিভিন্ন গুণের প্রশংসায় পঞ্চমুখ৷

আদার রসে রয়েছে জিনজেরল নামের রাসায়সিক উপাদান, যা দেহের সিমপ্যাথেটিক সিস্টেমে বিটা এগনিস্ট হিসেবে কাজ করে, অর্থাৎ বন্ধ শ্বাসনালী খুলে দেয়, সাইনাসগুলোকে পরিষ্কার রাখে, শ্বাস-প্রশ্বাসে সাহায্য করে।

হাঁপানি রোগে ব্যবহৃত বিটা এগনিস্ট ওষুধের প্রায় সমান কার্যকরী এই রস যা গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। এ ছাড়া শোগাওল নামের উপাদান মস্তিষ্কের বিভিন্ন কেন্দ্রের ওপর কাজ করে বমি ভাব বা বমি অনেকটাই কমাতে পারে।

বিজ্ঞানীরা যেসব সমস্যায় আদার ব্যবহারের সুফল মেনে নিয়েছেন সেগুলো হলো:

যাত্রাকালীন অসুস্থতা বা মোশন সিকনেস কমানো এবং গর্ভবতী নারীদের মর্নিং সিকনেসে দারুণ কাজে আসে আদার রস। এটি পেটের ব্যথা, গ্যাস কমায়, রুচি বাড়াতে সাহায্য করে।

দেহের কোথাও ক্ষতস্থান থাকলে তা দ্রুত শুকাতে সাহায্য করে আদা। এতে রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি এজেন্ট, যা যেকোনো কাটাছেঁড়া, ক্ষতস্থান দ্রুত ভালো করে।

এন্টি ইনফ্লামেটেরি গুণ থাকায় বাত ব্যথার রোগীদেরও উপকারে আসে নিয়মিত আদা বা আদার রস সেবন। ফিলাডেলফিয়ায় এসিটামিনোফের বা প্যারাসিটামল ও আদার রস পাশাপাশি ব্যবহার করে ব্যথা-বেদনা কমাতে প্রায় সমান কার্যকারিতা পাওয়া গেছে।

আদা মাইগ্রেন রোগীদেরও আরাম দিতে পারে। আদার রস পাকস্থলীতে মিউকাস আবরণ তৈরিতে সাহায্য করে। এ কারণে ভারী খাবারের পর আদা চিবানো একটি প্রাচ্যদেশীয় অভ্যেস। এ ছাড়া এটি অন্ত্রে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের শোষণ বাড়ায়।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক পরিচালিত এক গবেষণায় জানা গেছে, আদা রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কার্যকরভাবে কমাতে সাহায্য করে। মূলত রক্তে অধিক মাত্রার কোলেস্টেরলের উপস্থিতি হৃদরোগ সৃষ্টির বিভিন্ন কারণের মধ্যে বিশেষ একটি। গবেষকদের মতে, আদায় রয়েছে রক্ত জমাটবিরোধী গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা রক্তনালীর ভিতরের রক্ত জমাটে বাধা দান করে। এ ছাড়াও আদা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ফলে হৃদরোগ প্রতিরোধ সহজ হয়। সুতরাং আদার গুণ ভোলার নয়।

আদার এই ভরপুর গুণ আমাদের অনেকেরই একদম অজানা৷ তাই আপনার হার্টকে সুস্থ রাখতে রোজ সকালে একটুকরো খেলে অতুলনীয় উপকৃত হবেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আদার বিভিন্ন গুণ

আপডেট টাইম : ০৮:৪২:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ অক্টোবর ২০১৬

রান্নাবান্নার কাজে আদা ব্যবহারের কথা রাঁধুনীদের কাছে অজানা নয়। মূলত সুগন্ধযুক্ত বলে এটি মসলা হিসাবে রান্নার কাজে ব্যবহৃত হয়।

প্রায় ২০০০ বছর আগে থেকে চীনা ভেষজবিদেরা পাকস্থলীর নানা সমস্যায় আদা ব্যবহার করে আসছেন৷ আদার ভেষজ গুণের উল্লেখ রয়েছে মহাভারতে ও আয়ুর্বেদ মেডিসিনেও৷ আর বর্তমানের চিকিৎসা বিজ্ঞানীরাও আদার বিভিন্ন গুণের প্রশংসায় পঞ্চমুখ৷

আদার রসে রয়েছে জিনজেরল নামের রাসায়সিক উপাদান, যা দেহের সিমপ্যাথেটিক সিস্টেমে বিটা এগনিস্ট হিসেবে কাজ করে, অর্থাৎ বন্ধ শ্বাসনালী খুলে দেয়, সাইনাসগুলোকে পরিষ্কার রাখে, শ্বাস-প্রশ্বাসে সাহায্য করে।

হাঁপানি রোগে ব্যবহৃত বিটা এগনিস্ট ওষুধের প্রায় সমান কার্যকরী এই রস যা গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। এ ছাড়া শোগাওল নামের উপাদান মস্তিষ্কের বিভিন্ন কেন্দ্রের ওপর কাজ করে বমি ভাব বা বমি অনেকটাই কমাতে পারে।

বিজ্ঞানীরা যেসব সমস্যায় আদার ব্যবহারের সুফল মেনে নিয়েছেন সেগুলো হলো:

যাত্রাকালীন অসুস্থতা বা মোশন সিকনেস কমানো এবং গর্ভবতী নারীদের মর্নিং সিকনেসে দারুণ কাজে আসে আদার রস। এটি পেটের ব্যথা, গ্যাস কমায়, রুচি বাড়াতে সাহায্য করে।

দেহের কোথাও ক্ষতস্থান থাকলে তা দ্রুত শুকাতে সাহায্য করে আদা। এতে রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি এজেন্ট, যা যেকোনো কাটাছেঁড়া, ক্ষতস্থান দ্রুত ভালো করে।

এন্টি ইনফ্লামেটেরি গুণ থাকায় বাত ব্যথার রোগীদেরও উপকারে আসে নিয়মিত আদা বা আদার রস সেবন। ফিলাডেলফিয়ায় এসিটামিনোফের বা প্যারাসিটামল ও আদার রস পাশাপাশি ব্যবহার করে ব্যথা-বেদনা কমাতে প্রায় সমান কার্যকারিতা পাওয়া গেছে।

আদা মাইগ্রেন রোগীদেরও আরাম দিতে পারে। আদার রস পাকস্থলীতে মিউকাস আবরণ তৈরিতে সাহায্য করে। এ কারণে ভারী খাবারের পর আদা চিবানো একটি প্রাচ্যদেশীয় অভ্যেস। এ ছাড়া এটি অন্ত্রে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের শোষণ বাড়ায়।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক পরিচালিত এক গবেষণায় জানা গেছে, আদা রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কার্যকরভাবে কমাতে সাহায্য করে। মূলত রক্তে অধিক মাত্রার কোলেস্টেরলের উপস্থিতি হৃদরোগ সৃষ্টির বিভিন্ন কারণের মধ্যে বিশেষ একটি। গবেষকদের মতে, আদায় রয়েছে রক্ত জমাটবিরোধী গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা রক্তনালীর ভিতরের রক্ত জমাটে বাধা দান করে। এ ছাড়াও আদা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ফলে হৃদরোগ প্রতিরোধ সহজ হয়। সুতরাং আদার গুণ ভোলার নয়।

আদার এই ভরপুর গুণ আমাদের অনেকেরই একদম অজানা৷ তাই আপনার হার্টকে সুস্থ রাখতে রোজ সকালে একটুকরো খেলে অতুলনীয় উপকৃত হবেন।