ঢাকা ০৮:১৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বুলবুলিতে ধান খায় না

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৪৫:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ অক্টোবর ২০১৬
  • ৪২০ বার

বুলবুলি বাংলাদেশের খুব পরিচিত পাখি। মানুষকে এরা ভয় পায় না। মাঠে ঘাটে বাড়িতে শহরে সব জায়গায় এদের দেখা যায়। এই পাখিরা ফল খায়। তাই ফলজ গাছের আশ পাশে এদের খুব দেখা যায়। খেজুর, ডুমুর, বট, আম, জাম, পেয়ারা, পেঁপে, তেলাকুচো এদের খুব প্রিয় ফল। এদের নিয়ে একটা প্রবাদ আছে। ‘বুলবুলিতে ধান খেয়েছে, খাজনা দিব কী সে!’ এই প্রবাদ শুনে মনে হয়, বুলবুলি বুঝি ধান খায়। কিন্তু বুলবুলি ধান খেতে পারে না।

শুধু ধান নয় কোনো শস্যই বুলবুলি খেতে পারে না। শস্যদানা খাওয়ার জন্য শক্ত ঠোঁট দরকার। চড়ুই পাখিদের এ ধরনের ঠোঁট থাকে। কিন্তু বুলবুলির সেরকম ঠোঁট নেই। তবে ছোট ছোট পোকা খায় বাংলা বুলবুলি। পোকা ধরার জন্য গাছের ডালে বসে থাকে। পোকা দেখলেই সামান্য উড়ে যায়। তার একপাকে পোকাটাকে ধরের আবার আগের জায়গায় ফিরে আসে। শীতকালে খেজুর রসের নলীতে বসে রস খায়। ‘কিয়াককুয়িক’ স্বরে ডাকে। ভয় পেলে তীক্ষ্ণ কণ্ঠে ‘পীপ… পীপ’ চিৎকার করে।

বাংলাদেশে বেশ কয়েক জাতের বুলবুলি আছে। বাংলা বুলবুলিই সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। বাংলা বুলবুলির দৈর্ঘ্য ২০ সেন্টিমিটার। ওজন ৪২ গ্রাম। প্রাপ্ত বয়স্ক বুলবুলির মাথা কালো। দেহ কালো। ডানা, লেজ, বুক কালচে বাদামি। পেটের দিকটা সাদাটে। পা বাদামি, ঠোঁট কালো। পেটের নিচের দিকে টকটকে লালএকটা পট্টি। এই লালপট্টিটাই সবার আগে চোখে পড়ে।

এদের মাথায় আছে রাজকীয় ঝুটি। ছোট গাছে বাসা বাঁধে। ঝোপ ঝাড়, বাড়ির ডালিম এমনকি ফুলগাছেও বাসা বাঁধে। বাসাটা ভারি সুন্দর। গোল বাটির মতো। গাছের শিকড়, শুকনো ঘাস, মানুষের মাথার চুল আর মাকড়সার জাল জড়িয়ে বাসা বানায়।

বসন্ত কালে তিনটি ডিম পাড়ে। ডিমের রঙ সাদা। পনেরো থেকে বিশদিনের মধ্যে ডিম থেকে ছানা বের হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বুলবুলিতে ধান খায় না

আপডেট টাইম : ১১:৪৫:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ অক্টোবর ২০১৬

বুলবুলি বাংলাদেশের খুব পরিচিত পাখি। মানুষকে এরা ভয় পায় না। মাঠে ঘাটে বাড়িতে শহরে সব জায়গায় এদের দেখা যায়। এই পাখিরা ফল খায়। তাই ফলজ গাছের আশ পাশে এদের খুব দেখা যায়। খেজুর, ডুমুর, বট, আম, জাম, পেয়ারা, পেঁপে, তেলাকুচো এদের খুব প্রিয় ফল। এদের নিয়ে একটা প্রবাদ আছে। ‘বুলবুলিতে ধান খেয়েছে, খাজনা দিব কী সে!’ এই প্রবাদ শুনে মনে হয়, বুলবুলি বুঝি ধান খায়। কিন্তু বুলবুলি ধান খেতে পারে না।

শুধু ধান নয় কোনো শস্যই বুলবুলি খেতে পারে না। শস্যদানা খাওয়ার জন্য শক্ত ঠোঁট দরকার। চড়ুই পাখিদের এ ধরনের ঠোঁট থাকে। কিন্তু বুলবুলির সেরকম ঠোঁট নেই। তবে ছোট ছোট পোকা খায় বাংলা বুলবুলি। পোকা ধরার জন্য গাছের ডালে বসে থাকে। পোকা দেখলেই সামান্য উড়ে যায়। তার একপাকে পোকাটাকে ধরের আবার আগের জায়গায় ফিরে আসে। শীতকালে খেজুর রসের নলীতে বসে রস খায়। ‘কিয়াককুয়িক’ স্বরে ডাকে। ভয় পেলে তীক্ষ্ণ কণ্ঠে ‘পীপ… পীপ’ চিৎকার করে।

বাংলাদেশে বেশ কয়েক জাতের বুলবুলি আছে। বাংলা বুলবুলিই সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। বাংলা বুলবুলির দৈর্ঘ্য ২০ সেন্টিমিটার। ওজন ৪২ গ্রাম। প্রাপ্ত বয়স্ক বুলবুলির মাথা কালো। দেহ কালো। ডানা, লেজ, বুক কালচে বাদামি। পেটের দিকটা সাদাটে। পা বাদামি, ঠোঁট কালো। পেটের নিচের দিকে টকটকে লালএকটা পট্টি। এই লালপট্টিটাই সবার আগে চোখে পড়ে।

এদের মাথায় আছে রাজকীয় ঝুটি। ছোট গাছে বাসা বাঁধে। ঝোপ ঝাড়, বাড়ির ডালিম এমনকি ফুলগাছেও বাসা বাঁধে। বাসাটা ভারি সুন্দর। গোল বাটির মতো। গাছের শিকড়, শুকনো ঘাস, মানুষের মাথার চুল আর মাকড়সার জাল জড়িয়ে বাসা বানায়।

বসন্ত কালে তিনটি ডিম পাড়ে। ডিমের রঙ সাদা। পনেরো থেকে বিশদিনের মধ্যে ডিম থেকে ছানা বের হয়।