ঢাকা ০৫:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মন্তব্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য-ভিসা বন্ধ রাখলে দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে পারবে না ভারত

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:৩৬:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৮ বার

বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য-ভিসা বন্ধ রাখলে ভারত দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সাহিত্যিক ও সাংবাদিক কালাম ফয়েজী রচিত ‘নেতা ও কবি’ বইয়ের প্রকাশনা উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও ভিসা বন্ধ রাখলে ভারতে যে দুর্ভিক্ষ হবে, তা ঠেকাতে পারবে না ভারত। নরেন্দ্র মোদি ও সোনিয়া গান্ধী সবাই বসে কপাল ঠোকাঠুকি করতে পারবে কিন্তু দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে পারবে না। ’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি ৯০ শতাংশ। আমরা শুধু ইলিশ মাছ পাঠাই, তারা সবকিছুই পাঠায়। সুতরাং ভিসা ও এলসি এসব যদি বন্ধ থাকে, তাহলে ভারতের দুর্ভিক্ষ ঠেকানো সম্ভব না।’

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমাদের একটা পররাষ্ট্রনীতি আছে। আমরা বলেছি, সব দেশের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব কিন্তু কোনো প্রভুত্ব না। শুধু ভারতের সঙ্গে নয়, পুরো বিশ্বের সঙ্গে আমাদের পররাষ্ট্রনীতি থাকতে হবে। ছোট-বড় দেশ বলে কোনো কথা নাই। প্রতিটা দেশই কারও না কারও ওপর নির্ভরশীল। আমেরিকা এত বড় একটা দেশ, তাদের অস্ত্র বানানো ছাড়া কোনো কারখানা নেই, কিন্তু তাদের পোশাকের জন্য বাংলাদেশ ভিয়েতনামসহ বিভিন্ন দেশের ওপর নির্ভর করতে হয়। সুতরাং ভারত যা করছে, তারা নিজেদের পায়ে নিজেরা কুড়াল মারছে।’

তিনি বলেন, ‘ভারত যদি বাংলাদেশের মানুষের মনোভাব না বোঝে, তাহলে দুই দেশের সম্পর্ক হবে মুখোমুখি। আজ তারা নেপালের সঙ্গে বন্ধুত্ব হারিয়েছে, মালদ্বীপের সঙ্গেও হারিয়েছে, এমনকি ভুটানের সঙ্গেও বন্ধুত্ব হারিয়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক অনেক আগেই হারিয়েছে। এখন বাংলাদেশের সঙ্গে…। তাদের ভাবতে হবে দক্ষিণ এশিয়ার ভেতর সবগুলো দেশের সঙ্গে সম্পর্কে হারিয়ে তারা কীভাবে চলবে। কোনো দেশই ভারতের সঙ্গে আপোস করছে না। ভারতের অবস্থা বাঘ ও শিয়ালের গল্পের মতো হয়ে গেছে।’

ভারতীয় গণমাধ্যমের উদ্দেশে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘ভারতের গণমাধ্যম জেনেশুনেবাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তারা বাংলাদেশ সম্পর্কে নানা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। বাংলাদেশের গণমাধ্যম কেন আমাদের দেশের পক্ষে লিখেন না? তাহলে কী ধরে নেব সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নাম করে যা কিছু করছে ভারতীয় গণমাধ্যম, কেন এই নিয়ে বাংলাদেশের গণমাধ্যম চুপ। এ বিষয়ে গণমাধ্যমের সাংবাদিক ও মালিকদের বিশেষ নজর দেওয়ার জন্য আহ্বান জানাই। কারণ এখন তো গণমাধ্যম স্বাধীন।’

দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গ টেনে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘সংস্কারের কোনো শেষ নেই। কিন্তু আসল কথা কেউ বলছে না। অর্থাৎ নির্বাচন নিয়ে সুনির্দিষ্ট কথা কেউ বলেন না। এখন দুনিয়ার সব পণ্ডিতরা একত্রিত হয়েছে, কিন্তু কেউ রাজনীতিবিদ নয়। সবসময় সব দেশের রাজনৈতিক সমস্যার রাজনীতিবিদরাই সমাধান করেন। যারা অন্তর্বর্তী সরকার হয়েছে, তারা যদি মনে করেন তারাই সব তাহলে কীভাবে হবে।’

মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমিটি এ আয়োজন করে।সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন শাহিনের সভাপতিত্বে ও দৈনিক খোলাবাজার পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক মো. জহিরুল ইসলাম কলিমের পরিচালনায় আরও  বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বইয়ের লেখক কালাম ফয়েজী, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের রহমত উল্লাহ প্রমুখ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মন্তব্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য-ভিসা বন্ধ রাখলে দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে পারবে না ভারত

আপডেট টাইম : ০৫:৩৬:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য-ভিসা বন্ধ রাখলে ভারত দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সাহিত্যিক ও সাংবাদিক কালাম ফয়েজী রচিত ‘নেতা ও কবি’ বইয়ের প্রকাশনা উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও ভিসা বন্ধ রাখলে ভারতে যে দুর্ভিক্ষ হবে, তা ঠেকাতে পারবে না ভারত। নরেন্দ্র মোদি ও সোনিয়া গান্ধী সবাই বসে কপাল ঠোকাঠুকি করতে পারবে কিন্তু দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে পারবে না। ’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি ৯০ শতাংশ। আমরা শুধু ইলিশ মাছ পাঠাই, তারা সবকিছুই পাঠায়। সুতরাং ভিসা ও এলসি এসব যদি বন্ধ থাকে, তাহলে ভারতের দুর্ভিক্ষ ঠেকানো সম্ভব না।’

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমাদের একটা পররাষ্ট্রনীতি আছে। আমরা বলেছি, সব দেশের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব কিন্তু কোনো প্রভুত্ব না। শুধু ভারতের সঙ্গে নয়, পুরো বিশ্বের সঙ্গে আমাদের পররাষ্ট্রনীতি থাকতে হবে। ছোট-বড় দেশ বলে কোনো কথা নাই। প্রতিটা দেশই কারও না কারও ওপর নির্ভরশীল। আমেরিকা এত বড় একটা দেশ, তাদের অস্ত্র বানানো ছাড়া কোনো কারখানা নেই, কিন্তু তাদের পোশাকের জন্য বাংলাদেশ ভিয়েতনামসহ বিভিন্ন দেশের ওপর নির্ভর করতে হয়। সুতরাং ভারত যা করছে, তারা নিজেদের পায়ে নিজেরা কুড়াল মারছে।’

তিনি বলেন, ‘ভারত যদি বাংলাদেশের মানুষের মনোভাব না বোঝে, তাহলে দুই দেশের সম্পর্ক হবে মুখোমুখি। আজ তারা নেপালের সঙ্গে বন্ধুত্ব হারিয়েছে, মালদ্বীপের সঙ্গেও হারিয়েছে, এমনকি ভুটানের সঙ্গেও বন্ধুত্ব হারিয়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক অনেক আগেই হারিয়েছে। এখন বাংলাদেশের সঙ্গে…। তাদের ভাবতে হবে দক্ষিণ এশিয়ার ভেতর সবগুলো দেশের সঙ্গে সম্পর্কে হারিয়ে তারা কীভাবে চলবে। কোনো দেশই ভারতের সঙ্গে আপোস করছে না। ভারতের অবস্থা বাঘ ও শিয়ালের গল্পের মতো হয়ে গেছে।’

ভারতীয় গণমাধ্যমের উদ্দেশে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘ভারতের গণমাধ্যম জেনেশুনেবাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তারা বাংলাদেশ সম্পর্কে নানা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। বাংলাদেশের গণমাধ্যম কেন আমাদের দেশের পক্ষে লিখেন না? তাহলে কী ধরে নেব সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নাম করে যা কিছু করছে ভারতীয় গণমাধ্যম, কেন এই নিয়ে বাংলাদেশের গণমাধ্যম চুপ। এ বিষয়ে গণমাধ্যমের সাংবাদিক ও মালিকদের বিশেষ নজর দেওয়ার জন্য আহ্বান জানাই। কারণ এখন তো গণমাধ্যম স্বাধীন।’

দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গ টেনে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘সংস্কারের কোনো শেষ নেই। কিন্তু আসল কথা কেউ বলছে না। অর্থাৎ নির্বাচন নিয়ে সুনির্দিষ্ট কথা কেউ বলেন না। এখন দুনিয়ার সব পণ্ডিতরা একত্রিত হয়েছে, কিন্তু কেউ রাজনীতিবিদ নয়। সবসময় সব দেশের রাজনৈতিক সমস্যার রাজনীতিবিদরাই সমাধান করেন। যারা অন্তর্বর্তী সরকার হয়েছে, তারা যদি মনে করেন তারাই সব তাহলে কীভাবে হবে।’

মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমিটি এ আয়োজন করে।সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন শাহিনের সভাপতিত্বে ও দৈনিক খোলাবাজার পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক মো. জহিরুল ইসলাম কলিমের পরিচালনায় আরও  বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বইয়ের লেখক কালাম ফয়েজী, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের রহমত উল্লাহ প্রমুখ।