বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের চারটি শুল্ক স্টেশনে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দরগুলোর কার্যক্রম মোটামুটি স্বাভাবিক আছে। সীমান্তের ওপারে বিক্ষোভের জের ধরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এই শুল্ক স্টেশন দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
চলতি বছরের আগস্টের পর ভারত ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়ায় সীমান্ত ইমিগ্রেশন দিয়ে যাত্রী পারাপারের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।
বন্ধ থাকা শুল্ক স্টেশনগুলোর মধ্যে রয়েছে মৌলভীবাজারের চাতলাপুর ও বটুলি এবং সিলেটের জকিগঞ্জ ও শেওলা। চাতলাপুরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়েছে ২৭ নভেম্বর থেকে, আর বটুলিতে ২৮ নভেম্বর থেকে। জকিগঞ্জ ও শেওলার কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে গত সোমবার।
বাংলাদেশের ২২টি স্থলবন্দরের মধ্যে বর্তমানে কার্যকর রয়েছে ১৬টি। এর মধ্যে ১১টি বন্দর সচল রয়েছে, আর বাকিগুলোতে কার্যক্রম বন্ধ। এ ছাড়া প্রায় ৫০টি শুল্ক স্টেশনের মাধ্যমে পণ্য আমদানি-রপ্তানি করা হয়।
গত চার মাসে প্রধান নয়টি স্থলবন্দরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এ বছর আমদানি কমলেও রপ্তানি কিছুটা বেড়েছে। এ সময়ে ৫৯ কোটি ১১ লাখ টন পণ্য আমদানি হলেও রপ্তানির পরিমাণ ১৭৬ কোটি ৬৭ লাখ টন। অন্যদিকে, গত বছর একই সময়ে আমদানি হয়েছিল ৭৭ কোটি ৪৩ লাখ টন, আর রপ্তানি ছিল ২৮ কোটি ৯৩ লাখ টন।
সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে অনুসন্ধানে জানা গেছে, ত্রিপুরার কৈলাসহরে স্থানীয় কিছু সংগঠনের বিক্ষোভের কারণে চাতলাপুর শুল্ক স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। একইভাবে, আসামের সুতারকান্দি ও করিমগঞ্জেও স্থানীয় সংগঠনগুলোর বাধার কারণে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে গেছে।
বেনাপোলসহ বেশ কয়েকটি বন্দর দিয়ে আমদানি কমলেও রপ্তানি কিছুটা বেড়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, ব্যাংক নীতিমালার পরিবর্তন এবং ডলার সংকটের কারণে আমদানি হ্রাস পাচ্ছে। অপরদিকে, ডলার সংকটের মধ্যেও ভারতমুখী রপ্তানি বাড়ছে।
ভিসা সংকটের কারণে দুই দেশের যাত্রী পারাপারের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। ৫ আগস্টের পর যাত্রীদের বেশিরভাগই পুরোনো ভিসা নিয়ে পারাপার করছেন। নতুন ভিসা না পাওয়ায় এ সংখ্যা আরও কমবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা আশা প্রকাশ করেছেন, দ্রুত এই অচলাবস্থা কাটিয়ে দুই দেশের বাণিজ্য ও যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক হবে।