অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে অর্জিত রাষ্ট্র পুনর্গঠনের সুযোগ কাজে লাগাতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ অন্তর্বর্তী সরকার।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসের আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বৈষম্যহীন, শোষণহীন, কল্যাণময় এবং মুক্ত বাতাসের রাষ্ট্রের যে স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীন করেছিলেন, আমি তাদের সেই স্বপ্ন পূরণে অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা সব রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখব। আমাদের পররাষ্ট্র নীতি হবে পারস্পারিক সম্মান, আস্থা, বিশ্বাস ও সহযোগিতা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে আমরা এক নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সব মানুষকে একটি বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। পরিবারে মতভেদ থাকবে, বাগবিতণ্ডা হবে। তবে, আমরা কেউ কারও শত্রু হবো না। কাউকে তার মতের জন্য শত্রু মনে করব না। কাউকে ধর্মের কারণে শত্রু মনে করব না। আমরা সবাই সমান, আমরা সবাই একই পরিবারের সদস্য। কেউ কারও ওপরে না, কেউ কারও নিচে না, এই ধারণা আমরা জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।
অন্তর্বর্তী সরকার সুন্দর ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে অঙ্গীকারবদ্ধ মন্তব্য করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমরা এখন থেকেই বাংলাদেশকে এমনভাবে গড়তে চাই, যেন জনগণই সব ক্ষমতার উৎস হয়। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে একটা মানবিক ও কল্যাণকর রাষ্ট্র হিসেবে সমাদৃত হয়।
এর আগে, সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা সশস্ত্র বাহিনীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন, যারা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করেছেন। তিনি শিখা অনির্বাণের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধায়।
সেনাবাহিনী, নৌ ও বিমানবাহিনীর একটি চৌকস দল সে সময় স্যালুট দেয়। এ সময় বিউগলে একটি করুণ সুর বাজানো হয়। সেখানে রাখা দর্শনার্থী বইতেও স্বাক্ষর করেন প্রধান উপদেষ্টা।
এর আগে, প্রধান উপদেষ্টা শিখা অনির্বাণে পৌঁছালে সেখানে তিন বাহিনীর প্রধান এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের (এএফডি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাকে স্বাগত জানান।