টাঙ্গাইলে স্ত্রীকে তালাক দেয়ার পর পুরনো স্মৃতি ভুলে থাকতে ও নিজেকে ‘পবিত্র’ করতে দুধগোসল করেছেন খোকন জমাদ্দার নামের এক যুবক। দুধগোসলের ধারণ করা ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর ঘটনাটি এখন ভূঞাপুরসহ জেলার সর্বত্র আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
শুক্রবার ভূঞাপুর উপজেলার বামনহাটা গ্রামে এক সালিসে খোকন জমাদ্দার ও সুমি আক্তারের তালাক সম্পন্ন হয়। এইচ মোবাইল হসপিটালের স্বত্বাধিকারী খোকন জমাদ্দার উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের হযরত জমাদ্দারের ছেলে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, খোকন জমাদ্দার লেখাপড়া শেষ করে ভূঞাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মার্কেটে কে এইচ মোবাইল হসপিটাল নামে একটি দোকান খুলে ব্যবসা করছেন। গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি পারিবারিকভাবে একই গ্রামের দুদু মিয়ার মেয়ে সুমি আক্তারের সঙ্গে বিয়ে হয়। নিজেদের পছন্দে বিয়ে হলেও সাংসারিক জীবনে তাদের মধ্যে প্রায়ই লেগে থাকত কলহ। এরই ধারাবাহিকতায় গত ঈদুল ফিতরের কয়েক দিন পর ঝগড়ার ঘটনায় বাপের বাড়ি চলে যান সুমি আক্তার।
এরপর খোকনের পরিবার সুমিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।
অবশেষে দুই পক্ষের লোকজনকে নিয়ে শুক্রবার উপজেলার বামনহাটা গ্রামে গাবসারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনিরের উপস্থিতিতে এক সালিস বসে। কিন্তু সালিসেও সমঝোতা না হওয়ায় তালাকে গড়ায় খোকন-সুমির সম্পর্ক। সালিসে স্ত্রীকে দেনমোহর বাবদ ১ লাখ ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করে তালাক দেন খোকন।
পরে পুরনো সবকিছু ভুলে থাকার জন্য এবং নিজেকে পবিত্র করে তুলতে কলসি ভর্তি দুধ দিয়ে গোসল করেন খোকন। তার গোসলের দৃশ্য স্থানীয় কয়েকজন ভিডিও করলে তা শনিবার নিজের ফেসবুক পেজে তোলেন খোকন। আর তাতে ঘটনাটি প্রকাশ পেয়ে এলাকায় সৃষ্টি হয় চাঞ্চল্যের।
দুধগোসলের বিষয়ে খোকন জামাদ্দার ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বুক ভরা আশা নিয়ে পারিবারিকভাবে গত বছর সুমিকে বিয়ে করেছিলাম। কিন্তু সামান্য মনোমালিন্য হলেই আমাকে না জানিয়ে বাপের বাড়িতে চলে যেত সুমি। এরপর আমাদের বাড়িতে আসতে নানা রকম টালবাহানা করত। আমি আমার জীবনের চেয়েও সুমিকে বেশি ভালোবাসতাম। কখনো ভাবিনি আমার জীবন থেকে সুমিকে এভাবে হারাতে হবে। তাই পুরনো সব স্মৃতি ভুলে থাকার জন্য এবং নিজেকে পবিত্র করতে দুধ দিয়ে গোসল করে নিয়েছি।’
গাবসারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।