বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, সব বাধা-বিপত্তিকে পাশ কাটিয়ে যত দ্রুত একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে অন্তবর্তীকালীন সরকার হাঁটবে, ততই ভালো।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীর মোমিনবাগে ডেমোক্রেসি অডিটরিয়ামে দ্য মিলিনিয়াম ইউনিভার্সিটি আয়োজিত ‘ছাত্র-জনতার বিপ্লবের ১০০দিন’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
মঈন খান বলেন, ‘আমরা যে সংঘাত দেখতে পাচ্ছি, এই সংঘাত পরিহার করতে হবে। পথে বাধা কম সেই পথটা বেছে নিতে হবে-এই গুরুদায়িত্বটা এসে পৌঁছেছে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর।
এই সরকার উচিত, সব বাধা-বিপত্তি কাটিয়ে যত দ্রুত সম্ভব মানুষকে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া। সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি জনগণের নির্বাচিত সরকার গঠন করতে হবে, এই সরকারকে সেই পথে পা রাখতে হবে। যত দ্রুত এগিয়ে যাবে, ততই ভালো।’আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর দেশের মানুষ সবাই বলেছিল, ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের দায়িত্ব গ্রহণ করি।
কিন্তু দেশের একটি রাজনৈতিক রাজনৈতিক দল তাতে সাড়া দেয়নি। সেই একই রাজনৈতিক দল গত ১৫ বছর বাংলাদেশকে লুণ্ঠন করে তারা পালিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ‘এই অবস্থায় আমাদের ব্যক্তি-দলীয় স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনগণের রাষ্ট্রে পরিণত করতে হবে। সবাইকে এই শপথ নিতে হবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ১০০ দিনের প্রসঙ্গে টেনে মঈন খান বলেন, তাদের যে ভিত্তি ডকট্রিন অব নেসেসিটি দিয়েই নির্ধারিত হয়ে গেছে। এখানে কোনো আইনের প্রশ্ন তোলা অবান্তর। তাহলে কি এ সরকার তিন মাস পরে এসে কোনো কারণে তারা নিজেদের অস্তিত্ব নিয়ে উদ্বিগ্ন?
তিনি আরো বলেন, তারা তো ছাত্র-জনতার ম্যান্ডেট নিয়েই এসেছে। এবং ছাত্র-জনতার প্রত্যাশা এ সরকারের মূল দায়িত্ব হচ্ছে বাংলাদেশকে স্বৈরশাসন থেকে গণতান্ত্রিক শাসনে রূপান্তরিত করা।আমাদের মূল কাজটি হচ্ছে রাজনীতি উল্লেখ করে নাগরিক কমিটির সভাপতি মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে স্লোগানটা সামনে এসেছে আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই।
’ তিনি বলেন, যারা স্টেকহোল্ডার আছে তারা ধৈর্য ও বিচক্ষণতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলা করা দরকার। যাতে করে গণতন্ত্রটা আমরা করতে পারি। এটা যদি না হয়, তাহলে আমাদের সামনে খারাপ দিন অপেক্ষা করছে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, এ পর্যন্ত রাষ্ট্র সংস্কারে ১০টি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। প্রত্যেকটি কমিশনই বলেছে তারা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে না। আপনাদের সময় তিন মাস। সেখানে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসবেন না, তাহলে কী করবেন?
গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, সংস্কার কমিশনগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেই সংস্কার প্রস্তাব তৈরি করতে হবে। তা না হলে একটি বড় ধরনের গ্যাপ তৈরি হতে পারে।গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো ভূমিকা না রাখলে এ আন্দোলন (জুলাই গণ-অভ্যুত্থান) কোনো অবস্থায় সফল হতো না।
মিলিনিয়াম ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব গভর্ন্যান্স অ্যাডভোকেট রোকসানা খন্দকারের সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকে আরো অংশ নেন গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, বিএনপির আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, প্রফেসর রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, ড. অভিনয় চন্দ্র সাহা, প্রফেসর সাজ্জাদুল হক, প্রফেসর হুমায়ুন পাটোয়ারী, শামসুল আলম লিটন, শাখায়াত হোসেন শান্তা প্রমুখ।