অতিসম্প্রতি (২৫ অক্টোবর) ফেনীর মিজান ময়দানে অরাজনৈতিক দল হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্লামা শাহ মুহাম্মদ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর দেয়া ‘জামায়াত মদিনার ইসলাম নয়; মওদুদীর ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে চায়’ শীর্ষক মন্তব্যে জামায়াতের নেতৃত্বে ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে জোট গঠনে প্রাথমিক ধাক্কা লেগেছে বলে প্রতিভাত হচ্ছে। হেফাজত আমীরের এ বিস্ফোরক মন্তব্যের পর গত ২৯ অক্টোবর জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর শাহজাহান চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ফটিকছড়ি’র বাবুনগর মাদ্রাসায় হেফাজত আমীরের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে গিয়ে ‘এই মুহুর্তে এ ধরণের মন্তব্য না করতে ওনাকে অনুরোধ করায়’ বিষয়টি আরো প্রকাশ্যে চলে আসে বলে প্রতিয়মান হচ্ছে। ইসলামী অঙ্গনের অন্দরমহলে এ নিয়ে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ বৈঠক নিয়ে ৩০ অক্টোবর হেফাজত আমীর পরিচালিত বাবুনগর মাদ্রাসা শিক্ষক ও নাতনী জামাই মাওলানা ফরিদুল আলম আমিনী কর্তৃক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেয়া একটি স্ট্যাটাস আরো খোলাসা করে দিয়েছে বিষয়টি। তার স্ট্যাটাসটি ছিল এ রকম ‘একটি তিক্ত অভিজ্ঞতার সাক্ষী’
“গতকাল ২৯ শে অক্টোবর রোজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে নয়টার সময় জামিয়া বাবুনগরে একটি গুরুত্বপূর্ণ মজলিস বসে। কাকতালীয় সে বৈঠক সম্পর্কে কারো প্রস্তুতি ছিলোনা। মূলত গত ২৫ শে অক্টোবর জুমাবার ফেনির মিজান ময়দানে হেফাজতের উদ্যোগে আয়োজিত মহাসম্মেলনে আমীরে হেফাজত মুজাহিদে মিল্লাত আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী হাফিজাহুল্লাহ সময়ের অতীব প্রয়োজনীয় যদিও তিক্ত একটি মহাসত্য অত্যন্ত সাহসিকতা ও বাস্তবতার নিরিখে ঘোষণা দেন যে, জামায়াতে ইসলামীকে ওলামায়ে দেওবন্দ ইসলামী দল মনে করে না।
আমীরে হেফাজতের এই দুঃসাহসিক বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সারাদেশের কিছু দেওবন্দী চেতনা তথা আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাতের বিরোধী মানস্পটে মারাত্মকভাবে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ চট্টগ্রাম সাতকানিয়ার সাবেক এমপি জনাব শাহজাহান চৌধুরীর নেতৃত্বে আমীরে হেফাজতের সাক্ষাতে মিলিত হন। তারা সম্প্রতি জামায়াতের সাথে ঐক্য প্রক্রিয়ায় সংযুক্ত কিছু আলেমের নাম মেনশন করে তার বিপরীতে আমীরে হেফাজতের বক্তব্যের হাল হাকীকত, যথার্থতা জানতে চান। আমীরে হেফাজত বলেন, আমি আমার শায়খ ও মুরশিদ শায়খুল ইসলাম হযরত হুসাইন আহমদ মাদানী রাহিমাহুল্লাহর জবানে সরাসরি একাধিকবার উপরোক্ত কথাগুলো শুনেছি, যা আমরা সব দেওবন্দী ওলামায়ে কেরাম মনে প্রাণে বিশ্বাস করি। এতে তারা জানতে চান যে, হযরত মাদানী রাহিমাহুল্লাহর আরো অনেক শাগরিদ ও খলীফা এমন রয়েছেন যারা জামায়াতে ইসলামী বা মাওলানা মওদূদী রাহিমাহুল্লাহর সাথে কাজ করেছেন, সহযোগিতা করেছেন। তখন আমীরে হেফাজত বললেন, আমি যখন দেওবন্দ যাই তখন হযরত মাদানী রাহিমাহুল্লাহর প্রায় শেষ অবস্থা। মাওলানা মওদূদীর সাথে প্রথম দিকে হযরত মাদানী রাহিমাহুল্লাহর ভালো সম্পর্ক ছিলো, সাথে আরো অনেক দেওবন্দী ওলামায়ে কেরামের সাথে সুসম্পন্ন ছিলো। যেমন মাওলানা মনজুর নোমানী রাহ., মাওলানা সাইয়িদ আবুল হাসান আলী নদভী রাহ. প্রমূখ। তবে মাওলানা মওদূদীর সাথে ওলামায়ে দেওবন্দের সম্পর্কের গভীরতায় মাওলানা মওদুদির অনেক হাকীকত ও দ্বীনী মুদাহানাত, গোমরাহি ধরা পড়ে। যদ্দরূণ প্রায়জন শেষ পর্যন্ত মাওলানা মওদূদীর জামায়াত থেকে বেরিয়ে আসেন। সুতরাং হযরত মাদানী রাহিমাহুল্লাহর শুরুর দিকে অনেক খুলাফা, মুরীদান হয়তো সে সুবাদে তার সাথে সুসম্পর্ক রাখতেন। আর মানুষের শেষ অবস্থানই আসল।
আমীরে হেফাজত বরাবরের মতো তার দৃঢ়চেতা মনোবল ও আকীদার প্রশ্নে অটুট থাকেন। এতে তারা বিভিন্ন ছলচাতুরীর আশ্রয় নেন। তারা বারংবার এ কথা খুব দৃঢ়তার সাথে বুঝাতে থাকেন যে, সত্তর বছরের ইতিহাসে এভাবে কোনো দেওবন্দী আলেম জনসমক্ষে এ রকম কথা বলেননি, যা আপনি বলেছেন। তখন আমীরে হেফাজত বললেন, বিষয়টি আসলে তেমন নয়। যুগে যুগে হক্কানী ওলামায়ে দেওবন্দ তাদের বক্তব্য, লেখনী ও নানা মাধ্যমে মওদূদীর গোমরাহি সম্পর্কে জাতিকে সতর্ক করেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় আমার এ অবস্থান। তখন উনারা একথা ঘুরেফিরে বলতে থাকেন যে, জামায়াতের সাথে অতীতে অনেক দেওবন্দী আলেমদের সাথে সুসম্পর্ক বা জোট গঠন হয়েছিল। যেমন শায়খুল হাদীস আজিজুল হক রাহ., মুফতি ফজলুল হক আমিনী রাহ., মাওলানা মুহিউদ্দীন খান রাহ. প্রমূখ। বিগত সময়ে আমীরে হেফাজত আল্লামা আহমদ শফি রাহ., আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী রাহ. ও হাল জমানার হেফাজত নেতৃবৃন্দের সাথে সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেন। তখন আমীরে হেফাজত বলেন, এসব সম্পর্ক অতীতেও ছিলো, এখনো আছে হয়তো আগামীতেও থাকবে। কারণ এগুলো ভূ-রাজনৈতিক বা সময়ের সমীকরণে সম্পর্ক, আকীদাগত সম্পর্ক বা জোট নয়।
সম্মানিত মেহমানবৃন্দ বারবার জানতে চান যে, আপনাদের সাথে আমাদের বিরোধ কোথায়? তখন জামিয়া বাবুনগরের সম্মানিত শায়খুল হাদীস ও প্রধান মুফতি আল্লামা মুফতি মাহমূদ হাসান হাফিজাহুল্লাহ বলেন, বিরোধ মূলত কিছু ঈমান কেন্দ্রিক আকীদাগত বিষয়ে। যেমন ইসমতে আম্বিয়া, মিয়ারে হক ইত্যাদি। তখন উনারা বলেন, এগুলো সত্তর বছরের মীমাংসিত ইস্যু। তখন হযরত মুফতি সাহেব হুজুর, জামিয়ার নায়েবে মুহতামিম সাহেব হুজুর ও বিশিষ্ট মুহাদ্দিস হযরত মুফতি মীর হুসাইন রামগড়ী হুজর বললেন, যদি সত্যিকারে আপনারা ঘোষণা দেন যে, মাওলানা মওদূদীর গোমরাহি আকীদার সাথে জামায়াতে ইসলামী একমত নন, তাহলে তো আর কোনো বিরোধ থাকেনা বা আপনাদের সাথে ঐক্য হওয়ার পথে কোনো বাধা, বিপত্তি থাকেনা। তখন তারা বলেন যে, আমরা আপনাদের সাথে মুনাযারা বা তর্ক করার জন্য আসিনি; বরং আমরা হুজুরের নিকট দুআ নিতে এসেছি। যখন হুজুরদের পক্ষ থেকে বলা হলো, আপনারা মুখে মওদূদীর আকীদার কথা না মানার কথা বলেছেন, বাস্তবতা তার বিপরীত। কারণ মাওলানা মওদূদী জামায়াতের ফাউন্ডার ফাদার বা প্রতিষ্ঠাতা। তখন মেহমানবৃন্দ বলেন, জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা একজন নন। বরং পঁচাত্তর জন। তাদের সবার চিন্তা, চেতনায় জামায়াতের উদ্ভব ঘটে। এক কথায় হুজুরদের পক্ষ থেকে যতবার উনাদের আকীদাগত ত্রæটি তুলে ধরা হয় উনারা বলেন, আমরা বহসের জন্য আসিনি। অথচ উনারা মাওলানা মরহুম কারী ইলিয়াছ সাহেবের লিখিত কিতাব মাওলানা মওদূদী ওলামায়ে দেওবন্দ কি নযর মে কিতাবটিসহ আরো বই সাথে নিয়ে আসেন।
এ প্রথম জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথে সরাসরি কোনো মজলিস। যেখান থেকে বুঝলাম তারা রাজনৈতিকভাবে যথেষ্ট পরিপক্ব ও রাজনৈতিক দুরভিসন্ধিতে উস্তাদ। তবে আকীদাগতভাবে কাঙ্গাল। তাদের একটি দিক আমার ভালো লেগেছ, সেটা হলো জনাব শাহজাহান চৌধুরী যখন কথা বলেন তখন তারা সবাই নিশ্চুপ থাকেন। সবচে কয়েকটি ভাবনার বিষয় হলো,
এক. তারা দীর্ঘ ইতিহাস ফিরিস্তি তুলে ধরেও আমীরে হেফাজতের দৃঢ় মনোবলের কাছে ধরাশায়ী হলেন।
দুই. আরো অনেকের মতো তারাও ভাব দেখিয়ে আমীরে হেফাজতের আখলাকে হাসানাহ’র কাছে পরাজিত হন (তিনি যেহেতু কুরাইশী গোত্রের উত্তরাধিকারী, তাই উচ্চ আখলাকে হাসানাহ ও তাওহীদে খালেসের ব্যাপারে তিনি অটল থাকেন। তার আখলাকে হাসানাহ’র কারণে বহু শত্রুও পরে ভুল বুঝতে পেরে ফিরে আসেন। তার আখলাকে হাসানাহ কেমন, তার সাথে সাক্ষাত কিংবা কথা বললে বুঝা যায়। তার শত্রæরাও তার আখলাকের কথা নির্দ্বিধায় স্বীকার করেন)।
তিন. তারা হয়তো মনে করেছেন যে, আমীরে হেফাজত এরকম বক্তব্য কারো কানাঘুষা বা প্ররোচনায় প্ররোচিত হয়ে প্রদান করেছেন, আশাকরি পরিশেষে তারা বুঝতে সক্ষম হন যে, তিনি কারো ফাঁদে পা দিয়ে নয়, বরং নিজের দৃঢ় অবস্থান থেকে এমন বক্তব্য দিয়েছেন (আমীরে হেফাজতের ব্যাপারে অনেকেই হয়তো ভূল বুঝতে পারেন যে, তিনি হয়তো কোনো সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে কারো কানাঘুষা দ্বারা প্ররোচিত হন। এটি সম্পূর্ণ ভূল। তিনি প্রায়শ বলেন, আমি বয়সের ভারে নুয়ে পড়লেও আকল পরিপূর্ণ ঠিক আছে। তিনি সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নিকট থেকে নিকটতম কারো কথাকে পাত্তা দেন না। যা তিনি ন্যায়সঙ্গত ও সত্য মনে করেন তাই তিনি সিদ্ধান্ত দেন। বা কারো পক্ষাবলম্বন করেন। সে সিদ্ধান্তের ফলাফল কেউ সাময়িক বুঝতে অক্ষম হলেও পরে এক সময় তার সত্যতা, বাস্তবতা বুঝে আসে। তিনি ফেরাসত বা দূরদর্শী চিন্তার অধিকারী। তাই অনেকে সেগুলো বুঝতে পারেন না, যদ্দরূণ অযথা সমালোচনা করেন)।
চার. বাংলাদেশে বর্তমানে কওমি অঙ্গনে যে সকল মুরুব্বীগণ দায়িত্বপ্রাপ্ত আছেন তাদের মাঝে সবচে বয়োজ্যেষ্ঠ, অধিক আকাবিরের দেওবন্দের সুহবতপ্রাপ্ত, সবচে আহলে ইলম ওয়াত তাকওয়া, বিজ্ঞ, প্রাজ্ঞ হচ্ছেন আমীরে হেফাজত। তিনি শুধু বয়সের দিকে সবার বড় নন, বরং ইলম, হিলম, আমল, তাকওয়া, তাহারাত, যুহদ, আখলাকে হাসানাহর, বিজ্ঞতা, প্রাজ্ঞতা ও অভিজ্ঞতার বিচারেও সবার শীর্ষে। সুতরাং এ সাক্ষাত সংক্রান্ত কোনো বিভ্রান্তি ছড়ানোর কোনো সুযোগ নাই।”
স্ট্যাটাসটির সত্যতা নিশ্চিতে গত বুধবার বিকেলে ফরিদুল আলম আমিনীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন ‘আমি আমার দেয়া স্ট্যাটাসে অবিচল আছি। ওই বৈঠকে আমি মাঝ সময় থেকে শেষ পর্যন্ত উপস্থিত ছিলাম। তারই আলোকে আমি তা সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করেছি’।
মূলত: বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে উপমহাদেশে অগ্রভাগে নেতৃত্ব দেন মাওলানা হোসাইন আহমদ মাদানী। কিন্তু দেশ স্বাধীনের সময় জিন্নাহ’র দ্বি-জাতি তত্তে¡র ভিত্তিতে পাকিস্তান আলাদা হয়ে যায়। তারও ১৫/১৬ বছর পর আমি পাকিস্তান থেকে ভারতের দেওবন্দে পড়তে যাই। সেখানে মাওলানা হোসাইন আহমদ মাদানী আমার সরাসরি শিক্ষক ছিলেন। একদিন আমার শায়খের কাছে নেজামে ইসলাম পার্টির প্রধান মাওলানা আতাহার আলীর পক্ষে ছাত্ররা পরামর্শ নিতে যান যে, মওদুদীর নেতৃত্বাধীন জামায়াতের সঙ্গে আমরা নির্বাচনী জোট গঠন করতে পারি কিনা?
এ সময় মাওলানা মাদানী পাল্টা প্রশ্ন করেন ‘জামায়াতে ইসলামী এবং নেজামে ইসলাম পাটি একি নীতিতে বিশ^াসী কিনা? তখন তারা বললেন ‘না’।
মাদানী ছাহেব বললেন- তাইলে ঐক্য কিসের ভিত্তিতে? মওদুদী যেহেতু সাহাবী এবং ইজমা-কেয়াস মানে না- সেহেতু তার সাথে ঐক্য হতে পারে না। তারই আলোকে আমি রেফারেন্স হিসেবে বলেছি ‘জামায়াত মদিনার ইসলাম চায় না; মওদুদীর ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে চায়’। ইনকিলাব সম্পাদক মঙ্গলবার তার এক সভায় আমার এ বক্তব্য সমর্থন করায় আমি তাকেও আন্তরিক মোবারকবাদ জানাই।
জামায়াতের বর্তমান নেতৃত্বে কোন আলেম নেই। আমীর চিকিৎসক আর সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক। এদের দিয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠা বা ব্যাখ্যা প্রদান কেমনে সম্ভব? এরপর বলি- নেজামে ইসলাম পার্টি যুক্তফ্রন্টের সাথে নির্বাচনে গিয়ে প্রাদেশিক ৩৫টি এবং কেন্দ্রীয় ১৫টি আসনে জিতে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের ব্যাপার- সেই নেজামে ইসলাম পার্টির জেনারেল সেক্রেটারী মাওলানা ছিদ্দিক আহমদ নিষিদ্ধ জামায়াতের আমীর মাওলানা আব্দুর রহিমের সাথে মিলে আইডিএল করে শেষ হয়ে গেছে। বলতে গেলে ‘জামায়াতের সাথে ঐক্যের কারণেই নেজামে ইসলাম পার্টি এখন বিলুপ্তপ্রায়’! তারা কিংবা কওমী অঙ্গনে কাজ করা অন্যান্য দলগুলো যদি জামায়াতের সাথে ঐক্য করে- তবে একি দশা হবে তাদেরও। আমি স্পষ্টভাষী মানুষ। কেউ যদি হেফাজতকে ছায়া হিসেবে নিয়ে জামায়াতের সঙ্গে ঐক্য করে হুকুমতে যেতে চায়- তাতে আমি নেই। হেফাজত কারো ক্ষমতার সিড়ি হবে না। আমরা রাজনৈতিক দল না। কাউকে সমর্থনও করতে পারি না। হ্যাঁ; জামায়াত একটি ভালো রাজনৈতিক দল মনে করলে জনগণ তাদের ভোট দিতে পারে। এতে আমার কোন আপত্তি নেই।
এক প্রশ্নের জবাবে হেফাজত আমীর আল্লামা শাহ মুহাম্মদ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, আওয়ামীলীগের সাথে আমাদের কোন বিরোধ ছিল না। তারা মানুষের উপর জুলুম-অত্যাচার করেছে। নৈরাজ্য সৃষ্টি করে নির্বিচারে মানুষ মেরেছে। শাপলা চত্বরে আমাদের রক্ত রঞ্জিত করেছে। শত শত আলেম-তলাবা শহীদ করেছে। সব দখল করেছে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। হাজারো মানুষ হত্যা করে অবশেষে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। আল্লাহ মহাপরিকল্পনাকারী। তার কাছে ছাড় পায়নি। এ রকম জঘন্য শাসক আর ক্ষমতায় আসতে দেয়া উচিত না। তাদের থেকে সবাইকে শিক্ষা নিতে হবে।যেভাবে ষড়যন্ত্র চলছে; সতর্ক থাকতে হবে। ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে সুযোগ দিতে হবে। তাকেও খেয়াল রাখতে হবে অপশক্তি আবার যেন দেশে আসতে না পারে।