ঢাকা ০১:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বার্সেলোনার সঙ্গে খেলতে চায় বাংলাদেশ, দাবি ড. ইউনূসের কাছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:১২:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ নভেম্বর ২০২৪
  • ১৬ বার

নেপালকে তাদের মাঠে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ। শিরোপা নিয়ে গত বৃহস্পতিবার দেশে পা রাখেন বাংলার বাঘিনীরা। আজ শনিবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করতে তার বাসভবন যমুনায় যান সাফ চ্যাম্পিয়নরা।

সাক্ষাতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে নানা আকাঙ্ক্ষা ও দাবি-দাওয়ার কথা তুলে ধরেন ফুটবলাররা। যার মধ্যে উইঙ্গার কৃষ্ণা রানি সরকারের একটি অনুরোধ ছিল, এশিয়ার বাইরে তাদের জন্য যেন একটি প্রীতি ম্যাচের আয়োজন করা হয়। বিশেষ করে স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনার নারী দলের সঙ্গে বাংলাদেশ নারী দলের একটি প্রীতি ম্যাচের ব্যবস্থা যাতে প্রধান উপদেষ্টা করে দেন। মেয়েদের সর্বশেষ উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছে কাতালানরা।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা বিজয়ী খেলোয়াড়দের দাবিগুলি মনোযোগ সহকারে শুনেছেন এবং তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

উদ্বোধনী বক্তব্যে খেলোয়াড়দের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘এই সাফল্য অর্জনের জন্য আমি সমগ্র জাতির পক্ষ থেকে তোমাদের অভিনন্দন জানাই। জাতি তোমাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আমাদের দেশের মানুষ সাফল্য চায়। তোমরা আমাদের সেই সাফল্য এনে দিয়েছো।’

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন এই সংবর্ধনা আয়োজনের জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন যে, সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে তারা সম্মানিত বোধ করেছেন। তিনি বলেন, ‘অনেক বাধা অতিক্রম করে আমরা এই পর্যায়ে এসেছি। শুধু নারী ফুটবল দলই নয়, বাংলাদেশের নারীরা অনেক সংগ্রামের মুখোমুখি হয়।’

২০০৯ সালে ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু করেন সাবিনা। অনুষ্ঠানে ফুটবলকে আবেগ হিসাবে নেওয়ার সাহস দেখানোর জন্য সাবিনা তার আগের প্রজন্মের অবদানের কথা স্মরণ করেন। সাবিনা বলেন, ‘আমাদের বেতন দিয়ে আমরা খুব বেশিকিছু করতে পারি না। কারণ, আমরা তেমন কিছুই পাই না।’

 

মারিয়া মান্দার মতো তার সতীর্থদের সংগ্রামের বর্ণনা দেওয়ার সময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন সাবিনা। ময়মনসিংহের বিখ্যাত কলসিন্দুর গ্রামে বেড়ে উঠেছেন মারিয়া। এই গ্রাম থেকেই এবারের সাফজয়ী দলের ৬ সদস্য উঠে এসেছেন। মারিয়া শৈশবেই তার বাবাকে হারান। তার মা-ই তাকে লালন-পালন করেছেন।

উইঙ্গার কৃষ্ণা রানী সরকার ঢাকায় তাদের আবাসনের বিষয়টি উত্থাপন করেন। মিডফিল্ডার মানিকা চাকমা পাহাড়ঘেরা খাগড়াছড়ি জেলার প্রত্যন্ত উপজেলা লক্ষ্মীছড়ি থেকে ফুটবলার হওয়ার জন্য যে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন তার বর্ণনা করেছেন। মিডফিল্ডার স্বপ্না রানী দিনাজপুর জেলায় তার জন্মস্থান রাণীশংকৈল গ্রামের দুর্বল অবকাঠামোর বর্ণনা দিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টা প্রতিটি খেলোয়াড়কে তাদের ব্যক্তিগত আশা এবং আকাঙ্খা, সংগ্রাম এবং দাবিগুলি আলাদা কাগজে লিখে রাখতে এবং সেগুলো তার অফিসে দিতে বলেছেন। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘তোমরা যা খুশি লিখতে দ্বিধা করবে না। আমরা তোমাদের দাবি পূরণ করার চেষ্টা করব। এখন যদি কিছু সুরাহা করা যায় তবে আমরা এখনই তা করব।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নারী দলের কোচ পিটার বাটলার ও ম্যানেজার মাহমুদা আক্তার। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ, সুপ্রদীপ চাকমা, বিধান রঞ্জন রায়, নুরজাহান বেগম প্রমুখ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

বার্সেলোনার সঙ্গে খেলতে চায় বাংলাদেশ, দাবি ড. ইউনূসের কাছে

আপডেট টাইম : ০৬:১২:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ নভেম্বর ২০২৪

নেপালকে তাদের মাঠে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ। শিরোপা নিয়ে গত বৃহস্পতিবার দেশে পা রাখেন বাংলার বাঘিনীরা। আজ শনিবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করতে তার বাসভবন যমুনায় যান সাফ চ্যাম্পিয়নরা।

সাক্ষাতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে নানা আকাঙ্ক্ষা ও দাবি-দাওয়ার কথা তুলে ধরেন ফুটবলাররা। যার মধ্যে উইঙ্গার কৃষ্ণা রানি সরকারের একটি অনুরোধ ছিল, এশিয়ার বাইরে তাদের জন্য যেন একটি প্রীতি ম্যাচের আয়োজন করা হয়। বিশেষ করে স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনার নারী দলের সঙ্গে বাংলাদেশ নারী দলের একটি প্রীতি ম্যাচের ব্যবস্থা যাতে প্রধান উপদেষ্টা করে দেন। মেয়েদের সর্বশেষ উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছে কাতালানরা।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা বিজয়ী খেলোয়াড়দের দাবিগুলি মনোযোগ সহকারে শুনেছেন এবং তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

উদ্বোধনী বক্তব্যে খেলোয়াড়দের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘এই সাফল্য অর্জনের জন্য আমি সমগ্র জাতির পক্ষ থেকে তোমাদের অভিনন্দন জানাই। জাতি তোমাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আমাদের দেশের মানুষ সাফল্য চায়। তোমরা আমাদের সেই সাফল্য এনে দিয়েছো।’

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন এই সংবর্ধনা আয়োজনের জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন যে, সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে তারা সম্মানিত বোধ করেছেন। তিনি বলেন, ‘অনেক বাধা অতিক্রম করে আমরা এই পর্যায়ে এসেছি। শুধু নারী ফুটবল দলই নয়, বাংলাদেশের নারীরা অনেক সংগ্রামের মুখোমুখি হয়।’

২০০৯ সালে ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু করেন সাবিনা। অনুষ্ঠানে ফুটবলকে আবেগ হিসাবে নেওয়ার সাহস দেখানোর জন্য সাবিনা তার আগের প্রজন্মের অবদানের কথা স্মরণ করেন। সাবিনা বলেন, ‘আমাদের বেতন দিয়ে আমরা খুব বেশিকিছু করতে পারি না। কারণ, আমরা তেমন কিছুই পাই না।’

 

মারিয়া মান্দার মতো তার সতীর্থদের সংগ্রামের বর্ণনা দেওয়ার সময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন সাবিনা। ময়মনসিংহের বিখ্যাত কলসিন্দুর গ্রামে বেড়ে উঠেছেন মারিয়া। এই গ্রাম থেকেই এবারের সাফজয়ী দলের ৬ সদস্য উঠে এসেছেন। মারিয়া শৈশবেই তার বাবাকে হারান। তার মা-ই তাকে লালন-পালন করেছেন।

উইঙ্গার কৃষ্ণা রানী সরকার ঢাকায় তাদের আবাসনের বিষয়টি উত্থাপন করেন। মিডফিল্ডার মানিকা চাকমা পাহাড়ঘেরা খাগড়াছড়ি জেলার প্রত্যন্ত উপজেলা লক্ষ্মীছড়ি থেকে ফুটবলার হওয়ার জন্য যে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন তার বর্ণনা করেছেন। মিডফিল্ডার স্বপ্না রানী দিনাজপুর জেলায় তার জন্মস্থান রাণীশংকৈল গ্রামের দুর্বল অবকাঠামোর বর্ণনা দিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টা প্রতিটি খেলোয়াড়কে তাদের ব্যক্তিগত আশা এবং আকাঙ্খা, সংগ্রাম এবং দাবিগুলি আলাদা কাগজে লিখে রাখতে এবং সেগুলো তার অফিসে দিতে বলেছেন। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘তোমরা যা খুশি লিখতে দ্বিধা করবে না। আমরা তোমাদের দাবি পূরণ করার চেষ্টা করব। এখন যদি কিছু সুরাহা করা যায় তবে আমরা এখনই তা করব।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নারী দলের কোচ পিটার বাটলার ও ম্যানেজার মাহমুদা আক্তার। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ, সুপ্রদীপ চাকমা, বিধান রঞ্জন রায়, নুরজাহান বেগম প্রমুখ।