ঢাকা ০৯:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রবাসে প্রেমিক ও লালমাইয়ে নববধূর আত্মহত্যা, চিরকুটে একই কবরে দাফনের অনুরোধ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:৪৭:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৪
  • ২৪ বার

ঊর্মি (১৮) কুমিল্লার লালমাই জোড় কানন এলাকার বাসিন্দা। গত ১৩ সেপ্টেম্বর তার মতামত উপেক্ষা করে পরিবার থেকে একই উপজেলার বেক্কা দুর্গাপুর গ্রামের শাহ আলম সঙ্গে বিয়ে দেন।

বিয়ের আগে ঊর্মি সঙ্গে একই এলাকার মো. সাফায়েত নামে এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। তিনি ওমান প্রবাসী। প্রেমিকার বিয়ের খবর পেয়ে সাফায়েত গতকাল শনিবার ওমানে আত্মহত্যা করেন। পরে ঊর্মিও একই দিন সন্ধ্যায় স্বামীর বাড়িতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে আত্মহত্যা করেন।

খবর পেয়ে উপজেলার ভুলন ইউনিয়নের বেক্কা দুর্গাপুর স্বামীর বাড়ি থেকে নববধূর (ঊর্মি) ঝুলন্ত লাশ করে পুলিশ। এ সময় তার হাতে লেখা একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়। চিরকুটে তাকে প্রেমিকের সঙ্গে একই কবরে দাফনের কথা উল্লেখ করা হয়।

লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গত ১৩ সেপ্টেম্বর মৃত নববধূ ঊর্মির মতামত উপেক্ষা করে তার বাবা মো. জামাল লালমাই উপজেলার ভুলন ইউনিয়নের বেক্কা দুর্গাপুর গ্রামের শাহ আলমের সঙ্গে বিয়ে দেন। বিয়ের আগে ঊর্মির সঙ্গে একই এলাকার মো. সাফায়েত নামের এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সাফায়েত ওমান প্রবাসী। প্রেমিকার বিয়ের খবর সাফায়েত জানতে পেরে শনিবার বিকেলে ওমানে আত্মহত্যা করে। বিষয়টি ঊর্মি জানতে পেরে একই দিন সন্ধ্যায় সাড়ে ৬টায় স্বামীর বাড়িতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করে।

আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে লাশটি উদ্ধার করি এবং তার হাতের একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়।

ওসি) মো. শাহ আলম জানান, চিরকুটে ঊর্মি উল্লেখ করেন, ‍চাইছিলাম দুজনে একসঙ্গে বেঁচে থাকতে। বাঁচতে দিল না। এটা সত্যি ও আমার প্রথম সাথি। ওরে আমি বিয়ে করছি। কিন্তু ওর জায়গায় আমি অন্য কাউরে দিতে পারি নাই, পারবও না। তোমরা সুখে থেক। আমি ওকে ছাড়া বাঁচতে পারব না। ও বেঁচে থাকলেও তোমরা ওকে খুন করতে এবং ওর ফ্যামিলিকে জেলের ভাত খাওয়াইতে।

তাই নিজেও দুনিয়া ছাড়লাম। ওরে আমার সঙ্গে নিয়ে গেলাম।

চিরকুটে আরও উল্লেখ করা হয়, আপনাদের কাছে একটা শেষ ইচ্ছা থাকবে। বাবা মা ভাই বোনের কাছে একটা আবদার দুনিয়াতে যেহেতু থাকতে দেয় নাই আমাদের দাফনটা যেন একসঙ্গে হয়। একদিন আগে পরে হলেও একই কবরস্থানে যেন দাফন করে। সে চাওয়াটা যেন পুরন করেন আপনারা।’

ওসি আরও বলেন, ধারনা করা হচ্ছে, কথাগুলো ঊর্মি তার বাবা–মাকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন এবং তার মতের বাহিরে গিয়ে তাকে অন্যত্র বিয়ে দিয়েছেন। আমরা নববধুর লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

প্রবাসে প্রেমিক ও লালমাইয়ে নববধূর আত্মহত্যা, চিরকুটে একই কবরে দাফনের অনুরোধ

আপডেট টাইম : ০৬:৪৭:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৪

ঊর্মি (১৮) কুমিল্লার লালমাই জোড় কানন এলাকার বাসিন্দা। গত ১৩ সেপ্টেম্বর তার মতামত উপেক্ষা করে পরিবার থেকে একই উপজেলার বেক্কা দুর্গাপুর গ্রামের শাহ আলম সঙ্গে বিয়ে দেন।

বিয়ের আগে ঊর্মি সঙ্গে একই এলাকার মো. সাফায়েত নামে এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। তিনি ওমান প্রবাসী। প্রেমিকার বিয়ের খবর পেয়ে সাফায়েত গতকাল শনিবার ওমানে আত্মহত্যা করেন। পরে ঊর্মিও একই দিন সন্ধ্যায় স্বামীর বাড়িতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে আত্মহত্যা করেন।

খবর পেয়ে উপজেলার ভুলন ইউনিয়নের বেক্কা দুর্গাপুর স্বামীর বাড়ি থেকে নববধূর (ঊর্মি) ঝুলন্ত লাশ করে পুলিশ। এ সময় তার হাতে লেখা একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়। চিরকুটে তাকে প্রেমিকের সঙ্গে একই কবরে দাফনের কথা উল্লেখ করা হয়।

লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গত ১৩ সেপ্টেম্বর মৃত নববধূ ঊর্মির মতামত উপেক্ষা করে তার বাবা মো. জামাল লালমাই উপজেলার ভুলন ইউনিয়নের বেক্কা দুর্গাপুর গ্রামের শাহ আলমের সঙ্গে বিয়ে দেন। বিয়ের আগে ঊর্মির সঙ্গে একই এলাকার মো. সাফায়েত নামের এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সাফায়েত ওমান প্রবাসী। প্রেমিকার বিয়ের খবর সাফায়েত জানতে পেরে শনিবার বিকেলে ওমানে আত্মহত্যা করে। বিষয়টি ঊর্মি জানতে পেরে একই দিন সন্ধ্যায় সাড়ে ৬টায় স্বামীর বাড়িতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করে।

আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে লাশটি উদ্ধার করি এবং তার হাতের একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়।

ওসি) মো. শাহ আলম জানান, চিরকুটে ঊর্মি উল্লেখ করেন, ‍চাইছিলাম দুজনে একসঙ্গে বেঁচে থাকতে। বাঁচতে দিল না। এটা সত্যি ও আমার প্রথম সাথি। ওরে আমি বিয়ে করছি। কিন্তু ওর জায়গায় আমি অন্য কাউরে দিতে পারি নাই, পারবও না। তোমরা সুখে থেক। আমি ওকে ছাড়া বাঁচতে পারব না। ও বেঁচে থাকলেও তোমরা ওকে খুন করতে এবং ওর ফ্যামিলিকে জেলের ভাত খাওয়াইতে।

তাই নিজেও দুনিয়া ছাড়লাম। ওরে আমার সঙ্গে নিয়ে গেলাম।

চিরকুটে আরও উল্লেখ করা হয়, আপনাদের কাছে একটা শেষ ইচ্ছা থাকবে। বাবা মা ভাই বোনের কাছে একটা আবদার দুনিয়াতে যেহেতু থাকতে দেয় নাই আমাদের দাফনটা যেন একসঙ্গে হয়। একদিন আগে পরে হলেও একই কবরস্থানে যেন দাফন করে। সে চাওয়াটা যেন পুরন করেন আপনারা।’

ওসি আরও বলেন, ধারনা করা হচ্ছে, কথাগুলো ঊর্মি তার বাবা–মাকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন এবং তার মতের বাহিরে গিয়ে তাকে অন্যত্র বিয়ে দিয়েছেন। আমরা নববধুর লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছি।