ঢাকা ০৮:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজধানীর ১৫টি খাল খননে দূর হবে ৮০ শতাংশ জলাবদ্ধতা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:২৯:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪
  • ২৪ বার
রাজধানীর দখল হয়ে যাওয়া খালগুলোর মধ্যে মাত্র ১৫টি খাল খনন করলেই অবিরাম জলাবদ্ধতা সমস্যার প্রায় ৮০ শতাংশের সমাধান হতে পারে বলে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার (আরডিআরসি) সম্প্রতি রাজধানীর ৯টি জলাবদ্ধতাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে চলমান সমস্যার সমাধান দিয়েছে।

আরডিআরসি যেসব খাল খননের জন্য সুপারিশ করেছে সেগুলো হলো রূপনগর মেইন খাল, বাউনিয়া খাল, বাইশতেকি খাল, সাংবাদিক কলোনি খাল, কল্যাণপুর খাল, ইব্রাহিমপুর খাল, পান্থপথ বক্স কালভার্ট খাল, রায়েরবাজার খাল, জিরানী খাল, রামপুরা খালের দক্ষিণ প্রান্ত, দোলাই খাল, কদমতলী খাল ও মান্দা খাল।

গবেষণায় জলাবদ্ধতার ৯টি ‘হটস্পট’ চিহ্নিত করা হয়েছে।

সেগুলো হলো পল্লবী শিয়ালবাড়ী, রূপনগর ও ইস্টার্ন হাউজিং; কালশী ও মিরপুর-১১; টোলারবাগ, আহমেদনগর ও পাইকপাড়া; শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া ও কাফরুল; কলাবাগান, ধানমণ্ডি ২৭, কাঁঠালবাগান, গ্রিন রোড ও হাতিরপুল; হাজারীবাগ, নবাবগঞ্জ, রায়েরবাজার, পশ্চিম ধানমণ্ডি ও ঢাকা নিউ মার্কেট; রামপুরা ও বাড্ডা; সূত্রাপুর, ওয়ারী, নবাবপুর, কাজী আলাউদ্দিন রোড, সিদ্দিক বাজার, নারিন্দা ও তাঁতীবাজার এবং জুরাইন, সিদ্ধিরগঞ্জ, জাকের মঞ্জিল, শ্যামপুর, পূর্ব জুরাইন, সাদ্দাম মার্কেট ও রায়েরবাগ।চলতি বছরের জুলাই মাসে ‘ঢাকা শহরে জলাবদ্ধতা ও আমাদের দখলকৃত খাল’ শীর্ষক গবেষণাটি করা হয়। আরডিআরসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘একসময় ঢাকা থেকে বৃষ্টির পানি সরতে পারে এমন ৭৭টি খাল ও লেক ছিল। এখন এগুলোর বেশির ভাগই আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে দখল করা হয়েছে।

চিহ্নিত ১৫টি খাল খনন করতে পারলে নগরীর জলাবদ্ধতা সমস্যার ৮০ শতাংশ সমাধান হবে।’এসব জলাশয় পরিষ্কার করতে হলে স্থানীয় জনগণ ও কমিউনিটির সম্পৃক্ততা এবং দৃঢ় রাজনৈতিক অঙ্গীকার প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। খালগুলো পুনরুদ্ধারের জন্য মোহাম্মদ এজাজ একটি মডেল অনুসরণ করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশনসংশ্লিষ্ট খাল এলাকা এবং তীরগুলোর পুনরুদ্ধার ও স্থাপত্যের পরিকল্পনা করার জন্য স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা করলে তারপর উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।

তিনি আরো বলেন, মডেলটিতে বলা হয়েছে জনগণকে জলাশয়ের নিজ নিজ অংশ ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণের নিশ্চয়তা দিয়ে জলাশয় তৈরিতে উৎসাহিত করতে হবে।’

মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘যেসব এলাকায় বেশি জলাবদ্ধতা দেখা যায়, খননের জন্য চিহ্নিত খালগুলোর ওই সব এলাকার সঙ্গে যুক্ত কি না, সেটি খেয়াল রাখা হয়েছে। ১৫টি খালের মধ্যে পল্লবী শিয়ালবাড়ী, রূপনগর ও ইস্টার্ন হাউজিংয়ের জলাবদ্ধতা নিরসনে রূপনগর মেইন খাল খনন করতে হবে। বাউনিয়া খাল, বাইশতেকি খাল ও সাংবাদিক কলোনি খাল খনন করলে কালশী ও মিরপুর-১১-এর জলাবদ্ধতা নিরসন হবে।’

বাগ, আহমেদনগর ও পাইকপাড়ার জন্য কল্যাণপুর খাল; শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া ও কাফরুলের জন্য ইব্রাহিমপুর খাল ও কল্যাণপুর খাল, কলাবাগান, ধানমণ্ডি ২৭, কাঁঠালবাগান, গ্রিন রোড ও হাতিরপুলের জন্য পান্থপথ বক্স কালভার্ট খাল খনন করতে হবে।

পাশাপাশি রামপুরা ও বাড্ডার জন্য রামপুরা খালের দক্ষিণ প্রান্ত; হাজারীবাগ, নবাবগঞ্জ, রায়েরবাজার, পশ্চিম ধানমণ্ডি ও ঢাকা নিউ মার্কেটের জন্য রায়েরবাজার খাল ও জিরানী খালের শেষ অংশ; সূত্রাপুর, ওয়ারী, নবাবপুর, কাজী আলাউদ্দিন রোড, সিদ্দিক বাজার, নারিন্দা ও তাঁতীবাজারের জন্য দোলাই খাল এবং জুরাইন, সিদ্ধিরগঞ্জ, জাকের মঞ্জিল, শ্যামপুর, পূর্ব জুরাইন, সাদ্দাম মার্কেট ও রায়েরবাগের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য কদমতলী খাল ও মান্দা খাল খনন করতে হবে।’
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

রাজধানীর ১৫টি খাল খননে দূর হবে ৮০ শতাংশ জলাবদ্ধতা

আপডেট টাইম : ১১:২৯:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪
রাজধানীর দখল হয়ে যাওয়া খালগুলোর মধ্যে মাত্র ১৫টি খাল খনন করলেই অবিরাম জলাবদ্ধতা সমস্যার প্রায় ৮০ শতাংশের সমাধান হতে পারে বলে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার (আরডিআরসি) সম্প্রতি রাজধানীর ৯টি জলাবদ্ধতাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে চলমান সমস্যার সমাধান দিয়েছে।

আরডিআরসি যেসব খাল খননের জন্য সুপারিশ করেছে সেগুলো হলো রূপনগর মেইন খাল, বাউনিয়া খাল, বাইশতেকি খাল, সাংবাদিক কলোনি খাল, কল্যাণপুর খাল, ইব্রাহিমপুর খাল, পান্থপথ বক্স কালভার্ট খাল, রায়েরবাজার খাল, জিরানী খাল, রামপুরা খালের দক্ষিণ প্রান্ত, দোলাই খাল, কদমতলী খাল ও মান্দা খাল।

গবেষণায় জলাবদ্ধতার ৯টি ‘হটস্পট’ চিহ্নিত করা হয়েছে।

সেগুলো হলো পল্লবী শিয়ালবাড়ী, রূপনগর ও ইস্টার্ন হাউজিং; কালশী ও মিরপুর-১১; টোলারবাগ, আহমেদনগর ও পাইকপাড়া; শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া ও কাফরুল; কলাবাগান, ধানমণ্ডি ২৭, কাঁঠালবাগান, গ্রিন রোড ও হাতিরপুল; হাজারীবাগ, নবাবগঞ্জ, রায়েরবাজার, পশ্চিম ধানমণ্ডি ও ঢাকা নিউ মার্কেট; রামপুরা ও বাড্ডা; সূত্রাপুর, ওয়ারী, নবাবপুর, কাজী আলাউদ্দিন রোড, সিদ্দিক বাজার, নারিন্দা ও তাঁতীবাজার এবং জুরাইন, সিদ্ধিরগঞ্জ, জাকের মঞ্জিল, শ্যামপুর, পূর্ব জুরাইন, সাদ্দাম মার্কেট ও রায়েরবাগ।চলতি বছরের জুলাই মাসে ‘ঢাকা শহরে জলাবদ্ধতা ও আমাদের দখলকৃত খাল’ শীর্ষক গবেষণাটি করা হয়। আরডিআরসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘একসময় ঢাকা থেকে বৃষ্টির পানি সরতে পারে এমন ৭৭টি খাল ও লেক ছিল। এখন এগুলোর বেশির ভাগই আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে দখল করা হয়েছে।

চিহ্নিত ১৫টি খাল খনন করতে পারলে নগরীর জলাবদ্ধতা সমস্যার ৮০ শতাংশ সমাধান হবে।’এসব জলাশয় পরিষ্কার করতে হলে স্থানীয় জনগণ ও কমিউনিটির সম্পৃক্ততা এবং দৃঢ় রাজনৈতিক অঙ্গীকার প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। খালগুলো পুনরুদ্ধারের জন্য মোহাম্মদ এজাজ একটি মডেল অনুসরণ করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশনসংশ্লিষ্ট খাল এলাকা এবং তীরগুলোর পুনরুদ্ধার ও স্থাপত্যের পরিকল্পনা করার জন্য স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা করলে তারপর উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।

তিনি আরো বলেন, মডেলটিতে বলা হয়েছে জনগণকে জলাশয়ের নিজ নিজ অংশ ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণের নিশ্চয়তা দিয়ে জলাশয় তৈরিতে উৎসাহিত করতে হবে।’

মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘যেসব এলাকায় বেশি জলাবদ্ধতা দেখা যায়, খননের জন্য চিহ্নিত খালগুলোর ওই সব এলাকার সঙ্গে যুক্ত কি না, সেটি খেয়াল রাখা হয়েছে। ১৫টি খালের মধ্যে পল্লবী শিয়ালবাড়ী, রূপনগর ও ইস্টার্ন হাউজিংয়ের জলাবদ্ধতা নিরসনে রূপনগর মেইন খাল খনন করতে হবে। বাউনিয়া খাল, বাইশতেকি খাল ও সাংবাদিক কলোনি খাল খনন করলে কালশী ও মিরপুর-১১-এর জলাবদ্ধতা নিরসন হবে।’

বাগ, আহমেদনগর ও পাইকপাড়ার জন্য কল্যাণপুর খাল; শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া ও কাফরুলের জন্য ইব্রাহিমপুর খাল ও কল্যাণপুর খাল, কলাবাগান, ধানমণ্ডি ২৭, কাঁঠালবাগান, গ্রিন রোড ও হাতিরপুলের জন্য পান্থপথ বক্স কালভার্ট খাল খনন করতে হবে।

পাশাপাশি রামপুরা ও বাড্ডার জন্য রামপুরা খালের দক্ষিণ প্রান্ত; হাজারীবাগ, নবাবগঞ্জ, রায়েরবাজার, পশ্চিম ধানমণ্ডি ও ঢাকা নিউ মার্কেটের জন্য রায়েরবাজার খাল ও জিরানী খালের শেষ অংশ; সূত্রাপুর, ওয়ারী, নবাবপুর, কাজী আলাউদ্দিন রোড, সিদ্দিক বাজার, নারিন্দা ও তাঁতীবাজারের জন্য দোলাই খাল এবং জুরাইন, সিদ্ধিরগঞ্জ, জাকের মঞ্জিল, শ্যামপুর, পূর্ব জুরাইন, সাদ্দাম মার্কেট ও রায়েরবাগের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য কদমতলী খাল ও মান্দা খাল খনন করতে হবে।’