ঢাকা ০৮:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শেখ মুজিবের মেয়ে পালাতে জানে না বলেও পালিয়েছেন: মাসুদ সাঈদী

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:১৪:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ২৩ বার
পিরোজপুর পৌরসভার মেয়র ও জামায়াত নেতা মাসুদ সাঈদী বলেছেন, শেখ হাসিনা বলেছিল, আমি শেখ মুজিবের মেয়ে, আমি পালাতে জানি না। সেই তিনি ছাত্র আন্দোলনের মুখে হেলিকপ্টার দিয়ে গণভবন থেকে পালিয়েছে।

রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) পিরোজপুর পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডে নূরানী তালিমুল কুরআন মাদরাসা ময়দানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘গত ১৭ বছরে জামায়াত-বিএনপির প্রায় এক হাজার লোককে গুম করে হত্যা করা হয়েছে। ৭০ লাখ মানুষের ওপর মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনার জুলুম নির্যাতনে কোনো রাজনৈতিক নেতাকর্মী নিজ বাসা বাড়িতে ঘুমাতে পারতো না।’

মাসুদ সাঈদী বলেন, ‘বাংলার মানুষ পাকিস্তান আমল থেকে মুক্তির সংগ্রাম করে আসছে। আমরা ভেবেছিলাম, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর আমাদের মুক্তির সংগ্রাম শেষ হয়েছে। কিন্তু কষ্ট নিয়ে আজ বলতে হয়, আমাদের এখনো সংগ্রাম করতে হয় গণতন্ত্রের জন্য, ভোটের অধিকারের জন্য, ইসলামী ঐতিহ্য রক্ষার জন্য। স্বাধীনতার সময় আমাদের যে লক্ষ্য ছিল, তা আজও পূরণ হয়নি। যেমন, স্বাধীনতার আগে ২২ পরিবারের হাতে সম্পদ কুক্ষিগত ছিল, তেমনি আজও আওয়ামী লীগের মুষ্টিমেয় কিছু লোকের হাতে রয়েছে দেশের সম্পদের অধিকাংশ। এক হিসাব বলছে, বর্তমানে ১ শতাংশ ধনীর হাতে জাতীয় আয়ের ১৬ শতাংশ কেন্দ্রীভূত। দেশে আজ প্রায় ৩ থেকে ৪ কোটি লোক দরিদ্র। অন্যদিকে, বাড়ছে বেকারত্বের হার।’

মাসুদ সাঈদী বলেন, ‘গত ১৭ বছর শেখ হাসিনা বিনা ভোটে ক্ষমতায় থেকে নিজেকে এ দেশের রাজা মনে করেছিল। দেশের মানুষকে হাসিনা প্রজা মনে করতো। শেখ হাসিনা দেশ শাসন নয় শোষন করতে এসেছিল। তারা ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করেছে। তারা পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করেছে। ক্ষমতাকে ধরে রাখার জন্য প্রশাসন, বিচার ব্যবস্থা, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, সবকিছুকে তারা ব্যবহার করেছে। সাংবিধানিক সব প্রতিষ্ঠানকে তারা ধ্বংস করেছে। শেখ হাসিনা আর তার দলের নেতারা দুর্নীতির নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে। শেখ হাসিনা ধরে নিয়েছিল তিনি সারা জীবন ক্ষমতায় থাকবেন। তারা চেয়েছিল মানুষের উপর অত্যাচার নির্যাতন করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করবেন এবং সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলবেন।’

তিনি বলেন, ‘এখনো আওয়ামী লীগ আর তাদের দোসরের বিভিন্ন রকমের ষড়যন্ত্র করছে। সামনে দুর্গাপূজা আসছে। এই দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে হাসিনার সন্ত্রাসীরা দেশে নৈরাজ্য ও অশান্তি তৈরি করতে পারে। সেদিকে সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।’

কোরআনের পাখি আল্লামা সাঈদীকে শেখ হাসিনা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘শুধু আল্লামা সাঈদী-ই নন, এ দেশের সকল মত ও পথের অসংখ্য আলেমকে গ্রেপ্তার করে শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন তিনি তার পিতার মতোই আলেম বিদ্ধেষী, ইসলাম বিদ্ধেষী। আজকের এই সভা থেকে আমরা বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, অনতিবিলম্বে শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ধরে এনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিচার করে বাংলাদেশের আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে।’

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পিরোজপুর পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড সভাপতি ইকবাল হোসেনের সভাপতিত্বে ও  ৮ নং ওয়ার্ড সেক্রেটারি হাসান মাতুব্বরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পিরোজপুর জেলা শাখার আমীর বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ তাফাজ্জল হোসেন ফরিদ। আরও উপস্থিত জেলা নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুর রব, জেলা সেক্রেটারি অধ্যক্ষ জহিরুল হক, পৌর আমীর মাওলানা আব্দুর রাজ্জাকসহ স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াত নেতৃবৃন্দ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

শেখ মুজিবের মেয়ে পালাতে জানে না বলেও পালিয়েছেন: মাসুদ সাঈদী

আপডেট টাইম : ১১:১৪:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
পিরোজপুর পৌরসভার মেয়র ও জামায়াত নেতা মাসুদ সাঈদী বলেছেন, শেখ হাসিনা বলেছিল, আমি শেখ মুজিবের মেয়ে, আমি পালাতে জানি না। সেই তিনি ছাত্র আন্দোলনের মুখে হেলিকপ্টার দিয়ে গণভবন থেকে পালিয়েছে।

রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) পিরোজপুর পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডে নূরানী তালিমুল কুরআন মাদরাসা ময়দানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘গত ১৭ বছরে জামায়াত-বিএনপির প্রায় এক হাজার লোককে গুম করে হত্যা করা হয়েছে। ৭০ লাখ মানুষের ওপর মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনার জুলুম নির্যাতনে কোনো রাজনৈতিক নেতাকর্মী নিজ বাসা বাড়িতে ঘুমাতে পারতো না।’

মাসুদ সাঈদী বলেন, ‘বাংলার মানুষ পাকিস্তান আমল থেকে মুক্তির সংগ্রাম করে আসছে। আমরা ভেবেছিলাম, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর আমাদের মুক্তির সংগ্রাম শেষ হয়েছে। কিন্তু কষ্ট নিয়ে আজ বলতে হয়, আমাদের এখনো সংগ্রাম করতে হয় গণতন্ত্রের জন্য, ভোটের অধিকারের জন্য, ইসলামী ঐতিহ্য রক্ষার জন্য। স্বাধীনতার সময় আমাদের যে লক্ষ্য ছিল, তা আজও পূরণ হয়নি। যেমন, স্বাধীনতার আগে ২২ পরিবারের হাতে সম্পদ কুক্ষিগত ছিল, তেমনি আজও আওয়ামী লীগের মুষ্টিমেয় কিছু লোকের হাতে রয়েছে দেশের সম্পদের অধিকাংশ। এক হিসাব বলছে, বর্তমানে ১ শতাংশ ধনীর হাতে জাতীয় আয়ের ১৬ শতাংশ কেন্দ্রীভূত। দেশে আজ প্রায় ৩ থেকে ৪ কোটি লোক দরিদ্র। অন্যদিকে, বাড়ছে বেকারত্বের হার।’

মাসুদ সাঈদী বলেন, ‘গত ১৭ বছর শেখ হাসিনা বিনা ভোটে ক্ষমতায় থেকে নিজেকে এ দেশের রাজা মনে করেছিল। দেশের মানুষকে হাসিনা প্রজা মনে করতো। শেখ হাসিনা দেশ শাসন নয় শোষন করতে এসেছিল। তারা ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করেছে। তারা পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করেছে। ক্ষমতাকে ধরে রাখার জন্য প্রশাসন, বিচার ব্যবস্থা, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, সবকিছুকে তারা ব্যবহার করেছে। সাংবিধানিক সব প্রতিষ্ঠানকে তারা ধ্বংস করেছে। শেখ হাসিনা আর তার দলের নেতারা দুর্নীতির নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে। শেখ হাসিনা ধরে নিয়েছিল তিনি সারা জীবন ক্ষমতায় থাকবেন। তারা চেয়েছিল মানুষের উপর অত্যাচার নির্যাতন করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করবেন এবং সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলবেন।’

তিনি বলেন, ‘এখনো আওয়ামী লীগ আর তাদের দোসরের বিভিন্ন রকমের ষড়যন্ত্র করছে। সামনে দুর্গাপূজা আসছে। এই দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে হাসিনার সন্ত্রাসীরা দেশে নৈরাজ্য ও অশান্তি তৈরি করতে পারে। সেদিকে সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।’

কোরআনের পাখি আল্লামা সাঈদীকে শেখ হাসিনা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘শুধু আল্লামা সাঈদী-ই নন, এ দেশের সকল মত ও পথের অসংখ্য আলেমকে গ্রেপ্তার করে শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন তিনি তার পিতার মতোই আলেম বিদ্ধেষী, ইসলাম বিদ্ধেষী। আজকের এই সভা থেকে আমরা বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, অনতিবিলম্বে শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ধরে এনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিচার করে বাংলাদেশের আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে।’

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পিরোজপুর পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড সভাপতি ইকবাল হোসেনের সভাপতিত্বে ও  ৮ নং ওয়ার্ড সেক্রেটারি হাসান মাতুব্বরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পিরোজপুর জেলা শাখার আমীর বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ তাফাজ্জল হোসেন ফরিদ। আরও উপস্থিত জেলা নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুর রব, জেলা সেক্রেটারি অধ্যক্ষ জহিরুল হক, পৌর আমীর মাওলানা আব্দুর রাজ্জাকসহ স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াত নেতৃবৃন্দ।