রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাই যথেষ্ট বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
নির্বাচনের জন্য রাষ্ট্রের সংস্কার পর্যন্ত অপেক্ষার প্রসঙ্গ তুলে ধরে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, একমাত্র জনগণের সরকারই পারে একাত্তরের চেতনার বাস্তবায়ন করতে। আপনারা (অন্তর্বর্তী সরকার) শুধু প্রস্তাব দিতে পারেন, আমরা নজর রাখব সরকার কীভাবে সংস্কার করে।
রোববার (২৯ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে ‘বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্র বিনির্মাণে মুক্তিযোদ্ধাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনাসভায় এসব কথা বলেন বিএনপির এ নেতা।
হাফিজ উদ্দিন বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত ছিল একটি ভালো নির্বাচন কমিশন গঠন করা, কিন্তু তারা সেটি করেনি। কোনো রোডম্যাপ দেয়নি। শুধু ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে।
এ সময় সেনানিবাসে আওয়ামী লীগপন্থী দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তা ও পুলিশ কর্মকর্তাদেরর আশ্রয় দেওয়া উচিত হয়নি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শুধু ছাত্রদের আন্দোলনে বিপ্লব হয়নি উল্লেখ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, বিএনপি ১৭ বছর ধরে আন্দোলন করছে। তারই ধারাবাহিকতায় স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়েছে। আমি বলব, সবাইকে স্মরণ করবেন। ড. ইউনূস একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি আমেরিকায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কথা বলেছেন, কাজ করেছেন। আমি বলব, ছাত্র-জনতাসহ সবার সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অনেকেই দুর্বল সরকার মনে করে জানিয়ে তিনি বলেন, আমি বলব, আপনারা যে দুর্বল নন, সেটি প্রমাণ করতে সবার সঙ্গে মতবিনিময় করুন। মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা নিন।
সাবেক এ মন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের সবার রোগ হলো দুর্নীতি। এর বিরুদ্ধে আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশের দেশ ভারত থেকে সেটি শিখতে পারি। তাদের দেশে আইন করা আছে যে, প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রমাণিত হলে তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে সরাসরি জেলখানায় নিয়ে যাওয়া যায়। আইনের সে ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ আমাদের দিতে হবে।
পার্বত্যাঞ্চলে অস্থিরতা প্রসঙ্গেও সভায় কথা বলেন হাফিজ উদ্দিন। তিনি বলেন, পাহাড়ের লোকজন সহজ-সরল। তাদের ভুল পথে পরিচালিত করার ষড়যন্ত্র হয়। সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শক্ত পদক্ষেপের মাধ্যমে পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আমি প্রতিবেশী দেশ ভারতকে বলব, তাদের অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে উসকানি দেবেন না। যুদ্ধের জন্য দেশের সব মানুষ প্রস্তুত রয়েছে।
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ১৮ বছর বয়সীদের সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যা বিশ্বের অনেক দেশে আছে। সেসব দেশে প্রত্যেক নাগরিক দু-এক বছরের সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকেন।
মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে এদিন আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুক্তিযোদ্ধা দলের জয়নুল আবদীন, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ প্রমুখ।