ঢাকা ০৭:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নেতানিয়াহুকে হত্যায় ইসরায়েলিকে নিয়োগ ইরানের! সন্দেহভাজন গ্রেপ্তার

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:৫০:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ২৪ বার
এক ইসরায়েলি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাকে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ শীর্ষ ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের হত্যার পরিকল্পনার জন্য ইরান নিয়োগ দিয়েছিল। দেশটির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেট ও পুলিশ বৃহস্পতিবার এক যৌথ বিবৃতিতে এসব তথ্য জানিয়েছে বলে এএফপির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি ব্যক্তিদের হত্যার পরিকল্পনার জন্য ইরানি গোয়েন্দা সংস্থা একজন ইসরায়েলি নাগরিককে নিয়োগ করেছিল। তাকে দুইবার ইরানে পাচার করা হয়।

মিশন সম্পাদনের জন্য তাকে অর্থও দেওয়া হয়েছে। তার হত্যাকাণ্ডের লক্ষ্যের মধ্যে ছিলেন নেতানিয়াহু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট এবং শিন বেটের প্রধান রনেন বার। এ ছাড়া অন্য শীর্ষ কর্মকর্তাকেও হত্যার পরিকল্পনা ছিল।অন্যদিকে এএফপি বৃহস্পতিবার আদালতের যে নথি দেখেছে, সেখানে ওই ব্যক্তির পরিচয় হিসেবে মর্দেখাই মামান নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যিনি আসকালানের বাসিন্দা।

তার জন্ম ১৯৫২ সালে। তবে তার জন্ম তারিখ নির্দিষ্ট করা হয়নি। এ ছাড়া তাকে ২৯ আগস্ট থেকে আটক করা হয়েছে বলে নথিতে উল্লেখ রয়েছে।পুলিশ ও শিন বেটের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মামান একজন ব্যবসায়ী।

তিনি দীর্ঘ সময় তুরস্কে বসবাস করেছেন এবং তুর্কি ও ইরানিদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছেন, যারা তাকে ফোনের মাধ্যমে এডি নামের এক ইরানি ব্যবসায়ীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। সন্দেহভাজন প্রথমবার ২০২৪ সালের মে মাসে এডির সঙ্গে দেখা করতে ইরানে ভ্রমণ করেন। পরবর্তী সময়ে এডি ইরান ছাড়ার চেষ্টা করতে গিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হন। এ ছাড়া তিনি হাজ্জা নামের একজনের সঙ্গে দেখা করেন, যিনি ইরানের একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত ছিলেন।এই ভ্রমণের সময় সন্দেহভাজনকে ইসরায়েলে নিরাপত্তা মিশন সম্পাদনের জন্য অনুরোধ করা হয়, যার মধ্যে ‘অর্থ বা অস্ত্র স্থানান্তর করা’, জনাকীর্ণ স্থানের ছবি তোলা এবং তেহরানের নিয়োগকৃত অন্য ইসরায়েলিদের হুমকি দেওয়া অন্তর্ভুক্ত ছিল বলেও বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

আগস্টে পুলিশ ও শিন বেটের তদন্তে জানা যায়, সন্দেহভাজনকে একটি লরির মাধ্যমে ইরানে পাচার করা হয়েছিল আরেকবার ভ্রমণের জন্য। সেখানে তিনি ‘আরো কিছু ইরানি গোয়েন্দা এজেন্টদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারা তাকে ইসরায়েলের মাটিতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য অনুরোধ করেন, যার মধ্যে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত ছিল। প্রস্তাবিত কিছু হত্যাকাণ্ডকে হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যিনি জুলাই মাসে তেহরানে নিহত হয়েছিলেন। ইরান ও হামাস হানিয়ার মৃত্যুর জন্য ইসরায়েলকে দোষারোপ করে। তবে ইসরায়েল এই হত্যার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

এ ছাড়া সন্দেহভাজনকে আরো কিছু কাজ করতে বলা হয়েছিল, যার মধ্যে ইসরায়েলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের সদস্যদের দ্বৈত এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ করা অন্তর্ভুক্ত ছিল। পাশাপাশি এক মিলিয়ন ডলার অগ্রিম চাওয়ার পর সন্দেহভাজনকে বৈঠকে অংশ নেওয়ার জন্য পাঁচ হাজার ইউরো দেওয়া হয়েছিল এবং ভবিষ্যতে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে বলে জানানো হয়েছিল।

শিন বেটের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘এটি অত্যন্ত গুরুতর একটি ঘটনা, যা ইসরায়েলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিকল্পনার জন্য ইসরায়েলি নাগরিকদের নিয়োগ করতে ইরানি গোয়েন্দা এজেন্টদের বিশাল প্রচেষ্টাকে উদাহরণস্বরূপ উপস্থাপন করে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

নেতানিয়াহুকে হত্যায় ইসরায়েলিকে নিয়োগ ইরানের! সন্দেহভাজন গ্রেপ্তার

আপডেট টাইম : ০৬:৫০:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
এক ইসরায়েলি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাকে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ শীর্ষ ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের হত্যার পরিকল্পনার জন্য ইরান নিয়োগ দিয়েছিল। দেশটির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেট ও পুলিশ বৃহস্পতিবার এক যৌথ বিবৃতিতে এসব তথ্য জানিয়েছে বলে এএফপির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি ব্যক্তিদের হত্যার পরিকল্পনার জন্য ইরানি গোয়েন্দা সংস্থা একজন ইসরায়েলি নাগরিককে নিয়োগ করেছিল। তাকে দুইবার ইরানে পাচার করা হয়।

মিশন সম্পাদনের জন্য তাকে অর্থও দেওয়া হয়েছে। তার হত্যাকাণ্ডের লক্ষ্যের মধ্যে ছিলেন নেতানিয়াহু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট এবং শিন বেটের প্রধান রনেন বার। এ ছাড়া অন্য শীর্ষ কর্মকর্তাকেও হত্যার পরিকল্পনা ছিল।অন্যদিকে এএফপি বৃহস্পতিবার আদালতের যে নথি দেখেছে, সেখানে ওই ব্যক্তির পরিচয় হিসেবে মর্দেখাই মামান নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যিনি আসকালানের বাসিন্দা।

তার জন্ম ১৯৫২ সালে। তবে তার জন্ম তারিখ নির্দিষ্ট করা হয়নি। এ ছাড়া তাকে ২৯ আগস্ট থেকে আটক করা হয়েছে বলে নথিতে উল্লেখ রয়েছে।পুলিশ ও শিন বেটের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মামান একজন ব্যবসায়ী।

তিনি দীর্ঘ সময় তুরস্কে বসবাস করেছেন এবং তুর্কি ও ইরানিদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছেন, যারা তাকে ফোনের মাধ্যমে এডি নামের এক ইরানি ব্যবসায়ীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। সন্দেহভাজন প্রথমবার ২০২৪ সালের মে মাসে এডির সঙ্গে দেখা করতে ইরানে ভ্রমণ করেন। পরবর্তী সময়ে এডি ইরান ছাড়ার চেষ্টা করতে গিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হন। এ ছাড়া তিনি হাজ্জা নামের একজনের সঙ্গে দেখা করেন, যিনি ইরানের একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত ছিলেন।এই ভ্রমণের সময় সন্দেহভাজনকে ইসরায়েলে নিরাপত্তা মিশন সম্পাদনের জন্য অনুরোধ করা হয়, যার মধ্যে ‘অর্থ বা অস্ত্র স্থানান্তর করা’, জনাকীর্ণ স্থানের ছবি তোলা এবং তেহরানের নিয়োগকৃত অন্য ইসরায়েলিদের হুমকি দেওয়া অন্তর্ভুক্ত ছিল বলেও বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

আগস্টে পুলিশ ও শিন বেটের তদন্তে জানা যায়, সন্দেহভাজনকে একটি লরির মাধ্যমে ইরানে পাচার করা হয়েছিল আরেকবার ভ্রমণের জন্য। সেখানে তিনি ‘আরো কিছু ইরানি গোয়েন্দা এজেন্টদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারা তাকে ইসরায়েলের মাটিতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য অনুরোধ করেন, যার মধ্যে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত ছিল। প্রস্তাবিত কিছু হত্যাকাণ্ডকে হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যিনি জুলাই মাসে তেহরানে নিহত হয়েছিলেন। ইরান ও হামাস হানিয়ার মৃত্যুর জন্য ইসরায়েলকে দোষারোপ করে। তবে ইসরায়েল এই হত্যার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

এ ছাড়া সন্দেহভাজনকে আরো কিছু কাজ করতে বলা হয়েছিল, যার মধ্যে ইসরায়েলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের সদস্যদের দ্বৈত এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ করা অন্তর্ভুক্ত ছিল। পাশাপাশি এক মিলিয়ন ডলার অগ্রিম চাওয়ার পর সন্দেহভাজনকে বৈঠকে অংশ নেওয়ার জন্য পাঁচ হাজার ইউরো দেওয়া হয়েছিল এবং ভবিষ্যতে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে বলে জানানো হয়েছিল।

শিন বেটের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘এটি অত্যন্ত গুরুতর একটি ঘটনা, যা ইসরায়েলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিকল্পনার জন্য ইসরায়েলি নাগরিকদের নিয়োগ করতে ইরানি গোয়েন্দা এজেন্টদের বিশাল প্রচেষ্টাকে উদাহরণস্বরূপ উপস্থাপন করে।’