ঢাকা ০৩:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

কোটা আন্দোলনে নিহত আবু সাঈদের বিষয়ে যা বলল যুক্তরাষ্ট্র

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:০৪:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই ২০২৪
  • ২০ বার

কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী ও শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ বিক্ষোভের বিরুদ্ধে যে কোনো সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের অধিকার সমুন্নত রাখার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।

বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্র এই আহ্বান জানিয়েছে।

ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারকে প্রশ্ন করেন- বাংলাদেশে ছাত্রবিক্ষোভের ওপর দমনপীড়ন চলছে। শাসক গোষ্ঠী এ পর্যন্ত কমপক্ষে ছয়জনকে হত্যা করেছে। বিশেষ করে  শাসক দলের ছাত্র বিষয়ক সংগঠন ছাত্রলীগ ছাত্রদের বিরুদ্ধে, বিশেষত নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে নৃশংসতা দেখিয়েছে। তারা গত ১৫ বছর ধরে বার বার এটা করে যাচ্ছে। আপনারা কি ছাত্রলীগকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন (টেরোরিস্ট অর্গানাইজেশন) হিসেবে বিবেচনা করবেন?

জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, সুনির্দিষ্ট করে এটা নিয়ে আমি কিছু  বলতে চাইছি না। কিন্তু আমি এটা বলব যে, ঢাকায় শুরু হওয়া ছাত্রদের প্রতিবাদ বিক্ষোভে সহিংসতার বিষয় আমরা অব্যাহতভাবে মনিটরিং করছি।

একই সঙ্গে আহ্বান জানাচ্ছি যে, প্রতিবাদ হতে হবে শান্তিপূর্ণ। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ বিক্ষোভের বিরুদ্ধে যে কোনো রকম সহিংসতার অব্যাহতভাবে নিন্দা জানাই আমরা।

সাংবাদিক আরও প্রশ্ন করেন- পুলিশের সামনে অনুসারী ছাত্রদের উদ্ধার করতে, রক্ষা করতে বুক পেতে দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের যুবক ছাত্র আবু সাঈদ। কিন্তু তাকে গুলি করতে দ্বিধা করেনি শাসকগোষ্ঠীর বাহিনী। এমনকি তার বন্ধুদের উদ্ধারের চেষ্টা যখন করছিলেন তিনি তখন সাঈদ বুঝতেও পারেননি তাকে গুলি করা হয়েছে। লজ্জজনক নির্বাচনের আগে যেমনটা করেছেন ঠিক সেইভাবে, এইভাবে ক্ষমতা রক্ষা করছেন (প্রধানমন্ত্রী) শেখ হাসিনা। তখন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন বলেছিলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করছে সারাবিশ্ব। এ জন্য প্রয়োজনীয় সব রকম পদক্ষেপ নেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু যখন জনগণের অধিকার কেড়ে নেওয়া হলো, তখন আকস্মিকভাবে আপনারা নীরব হয়ে গেলেন। এটা কেন?

জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, সবার আগে আমি বলব এ অভিযোগ সঠিক নয়। এ সপ্তাহে আমাকে অনেকবার আপনি বলতে শুনেছেন, সোমবারও বলেছি, আমার মনে হয় মঙ্গলবারও বলেছি, আজ বলছি- শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের বিরুদ্ধে যে কোনো সহিংসতার নিন্দা জানাই আমরা। আমাদের দূতাবাস এবং ওয়াশিংটনের কর্মকর্তারা এই প্রতিবাদ বিক্ষোভ মনিটরিং করছেন। তাদের মাধ্যমে আমরা খুব নিবিড়ভাবে এই বিষয় পর্যবেক্ষণ করছি। মানুষ মারা যাওয়ার রিপোর্ট দেখেছি। বিক্ষোভে মানুষ মারা হয়েছে। আমরা আরও একবার সরকারকে আহ্বান জানাব শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ বিক্ষোভে মানুষের অধিকার সমুন্নত রাখতে।

অন্য এক সাংবাদিক মিলারের কাছে জানতে চান- সোমবার থেকে এই পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে আপনি বাংলাদেশে যা হচ্ছে তা নিশ্চিত করে নিন্দা জানিয়েছেন। এরই মধ্যে ৬ জন ছাত্র নিহত হয়েছেন। যখন আমরা এখানে কথা বলছি, তখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে টেলিভিশনে বক্তব্য দিয়েছেন। তাতে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন কিভাবে এসব ছাত্র নিহত হলেন তা তদন্তে স্বাধীন বিচার বিভাগীয় কমিটি গঠন করা হবে।

তিনি আরও ঘোষণা দিয়েছেন, প্রতিটি পরিবারের দেখাশোনা করবে সরকার এবং তাদেরকে রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় আয়ের ব্যবস্থা করবে। কিন্তু আমার উদ্বেগ হলো- বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে সুযোগ পাওয়ার কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের বিষয়টি সাব জুডিশিয়ারি বিষয় এখন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিরোধী বিএনপির একজন সিনিয়র নেতার অডিও ক্লিপ ভাইরাল হযেছে। তাতে দেখা যায়, শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশকে বিঘ্নিত করতে সহিংস ছাত্র আন্দোলন করছেন তারা। এতে যুক্ত হয়েছে শিবির, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কি?

এই সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, প্রথম যেটা বলব, তাহলো ছড়িয়ে পড়া যে অডিও ক্লিপের কথা বলছেন, তা আমি দেখিনি। তাই এটা নিয়ে কোনোভাবেই আমি মন্তব্য করব না। তাছাড়া এ বিষয়ে আমি ১০ মিনিট বা ১৫ মিনিট আগে যে উত্তর দিয়েছি, তার চেয়ে বাড়তি কোনো আপডেট নেই আমার কাছে।

 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

কল্যানমুখী দেশ গড়তে সর্বশ্রেণির মানুষকে এগিয়ে আসার আহবান- এড.জুবায়ের

কোটা আন্দোলনে নিহত আবু সাঈদের বিষয়ে যা বলল যুক্তরাষ্ট্র

আপডেট টাইম : ১২:০৪:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই ২০২৪

কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী ও শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ বিক্ষোভের বিরুদ্ধে যে কোনো সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের অধিকার সমুন্নত রাখার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।

বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্র এই আহ্বান জানিয়েছে।

ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারকে প্রশ্ন করেন- বাংলাদেশে ছাত্রবিক্ষোভের ওপর দমনপীড়ন চলছে। শাসক গোষ্ঠী এ পর্যন্ত কমপক্ষে ছয়জনকে হত্যা করেছে। বিশেষ করে  শাসক দলের ছাত্র বিষয়ক সংগঠন ছাত্রলীগ ছাত্রদের বিরুদ্ধে, বিশেষত নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে নৃশংসতা দেখিয়েছে। তারা গত ১৫ বছর ধরে বার বার এটা করে যাচ্ছে। আপনারা কি ছাত্রলীগকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন (টেরোরিস্ট অর্গানাইজেশন) হিসেবে বিবেচনা করবেন?

জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, সুনির্দিষ্ট করে এটা নিয়ে আমি কিছু  বলতে চাইছি না। কিন্তু আমি এটা বলব যে, ঢাকায় শুরু হওয়া ছাত্রদের প্রতিবাদ বিক্ষোভে সহিংসতার বিষয় আমরা অব্যাহতভাবে মনিটরিং করছি।

একই সঙ্গে আহ্বান জানাচ্ছি যে, প্রতিবাদ হতে হবে শান্তিপূর্ণ। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ বিক্ষোভের বিরুদ্ধে যে কোনো রকম সহিংসতার অব্যাহতভাবে নিন্দা জানাই আমরা।

সাংবাদিক আরও প্রশ্ন করেন- পুলিশের সামনে অনুসারী ছাত্রদের উদ্ধার করতে, রক্ষা করতে বুক পেতে দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের যুবক ছাত্র আবু সাঈদ। কিন্তু তাকে গুলি করতে দ্বিধা করেনি শাসকগোষ্ঠীর বাহিনী। এমনকি তার বন্ধুদের উদ্ধারের চেষ্টা যখন করছিলেন তিনি তখন সাঈদ বুঝতেও পারেননি তাকে গুলি করা হয়েছে। লজ্জজনক নির্বাচনের আগে যেমনটা করেছেন ঠিক সেইভাবে, এইভাবে ক্ষমতা রক্ষা করছেন (প্রধানমন্ত্রী) শেখ হাসিনা। তখন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন বলেছিলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করছে সারাবিশ্ব। এ জন্য প্রয়োজনীয় সব রকম পদক্ষেপ নেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু যখন জনগণের অধিকার কেড়ে নেওয়া হলো, তখন আকস্মিকভাবে আপনারা নীরব হয়ে গেলেন। এটা কেন?

জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, সবার আগে আমি বলব এ অভিযোগ সঠিক নয়। এ সপ্তাহে আমাকে অনেকবার আপনি বলতে শুনেছেন, সোমবারও বলেছি, আমার মনে হয় মঙ্গলবারও বলেছি, আজ বলছি- শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের বিরুদ্ধে যে কোনো সহিংসতার নিন্দা জানাই আমরা। আমাদের দূতাবাস এবং ওয়াশিংটনের কর্মকর্তারা এই প্রতিবাদ বিক্ষোভ মনিটরিং করছেন। তাদের মাধ্যমে আমরা খুব নিবিড়ভাবে এই বিষয় পর্যবেক্ষণ করছি। মানুষ মারা যাওয়ার রিপোর্ট দেখেছি। বিক্ষোভে মানুষ মারা হয়েছে। আমরা আরও একবার সরকারকে আহ্বান জানাব শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ বিক্ষোভে মানুষের অধিকার সমুন্নত রাখতে।

অন্য এক সাংবাদিক মিলারের কাছে জানতে চান- সোমবার থেকে এই পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে আপনি বাংলাদেশে যা হচ্ছে তা নিশ্চিত করে নিন্দা জানিয়েছেন। এরই মধ্যে ৬ জন ছাত্র নিহত হয়েছেন। যখন আমরা এখানে কথা বলছি, তখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে টেলিভিশনে বক্তব্য দিয়েছেন। তাতে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন কিভাবে এসব ছাত্র নিহত হলেন তা তদন্তে স্বাধীন বিচার বিভাগীয় কমিটি গঠন করা হবে।

তিনি আরও ঘোষণা দিয়েছেন, প্রতিটি পরিবারের দেখাশোনা করবে সরকার এবং তাদেরকে রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় আয়ের ব্যবস্থা করবে। কিন্তু আমার উদ্বেগ হলো- বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে সুযোগ পাওয়ার কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের বিষয়টি সাব জুডিশিয়ারি বিষয় এখন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিরোধী বিএনপির একজন সিনিয়র নেতার অডিও ক্লিপ ভাইরাল হযেছে। তাতে দেখা যায়, শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশকে বিঘ্নিত করতে সহিংস ছাত্র আন্দোলন করছেন তারা। এতে যুক্ত হয়েছে শিবির, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কি?

এই সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, প্রথম যেটা বলব, তাহলো ছড়িয়ে পড়া যে অডিও ক্লিপের কথা বলছেন, তা আমি দেখিনি। তাই এটা নিয়ে কোনোভাবেই আমি মন্তব্য করব না। তাছাড়া এ বিষয়ে আমি ১০ মিনিট বা ১৫ মিনিট আগে যে উত্তর দিয়েছি, তার চেয়ে বাড়তি কোনো আপডেট নেই আমার কাছে।