প্রথম দফার ভোটে ফ্রান্সের ডানপন্থি দল ন্যাশনাল র্যালি (আরএন) এগিয়ে থাকলেও গতকাল রোববার দ্বিতীয় দফার ভোটে পিছিয়ে পড়েছে। বুথফেরত জরিপ বলছে, জয়ের পথে এগিয়ে গেছে বামপন্থিদের জোট নিউ পপুলার ফ্রান্ট (এনএফপি)।
বিবিসি জানিয়েছে, বুথফেরত জরিপে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর এনসেম্বল জোট দ্বিতীয় এবং কট্টর ডানপন্থি দল আরএর তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে।
আরএন নেতা জর্ডান বারডেলা বলেছেন, তার দল পরাজিত হয়েছে এবং ফ্রান্স ‘অনিশ্চয়তা ও অস্থিতিশীলতার’ মধ্যে ঢুকে পড়েছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, বুধফেরত জরিপ অনুযায়ী বাম জোট নিউ পপুলার ফ্রান্ট ৫৭৭ আসনের মধ্যে ১৮৪ থেকে ১৯৮টি আসন পেতে পারে। আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসন পেতে যাচ্ছে ম্যাক্রোঁর মধ্যপন্থী জোট টুগেদার অ্যালায়েন্স। বলা হচ্ছে, এ জোটটি ১৬০ থেকে ১৬৯টি আসন পেতে পারে এবং ১৩৫ থেকে ১৪৩টি আসন নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে থাকতে পারে ন্যাশনাল র্যালি।
ফ্রান্সে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজন ২৮৯টি আসন। এক্ষেত্রে বাম জোটকে সরকার গঠনের জন্য অন্যদের সমর্থন নিতে হবে। এতে করে দেশটির পার্লামেন্ট ঝুলন্ত অবস্থা থাকবে।
এর আগে গত রোববার অনুষ্ঠিত প্রথম দফার ভোটে ৩৩ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে ছিল কট্টর ডানপন্থি হিসেবে পরিচিত মারিন লো পেনের দল ন্যাশনাল র্যালি (আরএন)। পরবর্তীতে এ দলের জয় ঠেকাতে মাঠে নামে ফ্রান্সের উদার ও মধ্যপন্থিরা। আরএনকে ঠেকাতে বামপন্থিদের জোট এনপিই ও ম্যাক্রোঁর জোট টুগেদার অ্যালায়েন্সের মধ্যে আপস হয়। তারা শতাধিক প্রার্থীকে ভোটের লড়াই থেকে প্রত্যাহার করে নেয়। এতে দুই দলের সমর্থকদের ভোট একজন প্রার্থীর বাক্সেই পড়ে। বাম ও মধ্যপন্থিদের এই কৌশল অবশেষে কাজে দিয়েছে।
এরই মধ্যে পরাজয় স্বীকার করে নিয়ে ম্যাক্রোঁর পক্ষের নেতা ও ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল আতাল পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আগামীকাল প্রেসিডেন্টের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন তিনি।
২০২৭ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবেন ম্যাক্রোঁ। বামপন্থিদের সাথে তার নীতির ব্যবধান থাকায় আগামী আড়াই বছর তার জন্য খুব সহজ হবে না। পার্লামেন্টে বামপন্থি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে, পদে পদে বাধা পেতে হবে ম্যাক্রোঁকে। বস্তুত, গত কয়েকবছরে অনেকটাই জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন ম্যাক্রোঁ। এবারের নির্বাচনে তার সরাসরি প্রভাব পড়েছে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।