ঢাকা ০৪:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অভিনয়ে পরিবারের সম্মতি ছিল না

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৫৫:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ অগাস্ট ২০১৬
  • ৩১৭ বার

সবার কাছে তিনি পরিচিত সংবাদ পাঠক হিসেবে। সম্প্রতি ‘বসগিরি’ সিনেমার মাধ্যমে নাম লিখিয়েছেন ঢাকাই সিনেমায়। গণমাধ্যমে কাজের সুবাদে মিডিয়া পরিচিতি থাকলেও চলচ্চিত্র অভিনেত্রী হিসেবে একেবারেই নতুন। সংবাদ পাঠক থেকে চলচ্চিত্রে অভিষেক। জীবনের এই বাঁক বদল নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সৈয়দ ঋয়াদ

সংবাদ পাঠক থেকে নায়িকা, অভিনয়ে পূর্বাভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলুন।

অভিনয় করব কখনো ভাবিনি, আর এমন ইচ্ছেও ছিল না। তবে ছোটবেলা থেকেই নাচ করছি। নাচের প্রতি একধরনের আগ্রহ ছিল। স্কুলে কিংবা কলেজে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রোগ্রামেও নিয়মিত ছিলাম। ফিল্মে কাজ করব কিংবা সিনেমার নায়িকা হব সেভাবে ভাবিনি তখনো।

ঢাকাই সিনেমার খুব ভালো সময় যাচ্ছে না, তারপরও চলচ্চিত্রে এসেছেন?

এটা ঠিক, আমাদের সিনেমার খুব ভালো সময় যাচ্ছে না। এর মানে কিন্তু এই নয় এখানে সিনেমা খুব খারাপ হচ্ছে। আমাদের এখানেও অনেক অভিজ্ঞ পরিচালক, সিনেমাটোগ্রাফার, এডিটর কাজ করছেন। আর সবাই যদি সিনেমার সময় ভালো যাচ্ছে না বলে বসে থাকি তাহলেও এ অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটবে না। আমি মনে করি, কাজ হলেই ঢাকাই ফিল্মের পরিবর্তন আসবে।

সিনেমায় আসার গল্পটা বলবেন?

শাকিব খানের নিজের প্র্রোডাকশনের নতুন সিনেমার জন্য নতুন মুখ খোঁজ হচ্ছিল। তার হাউজেরই কেউ একজন হয়ত আমার সংবাদ উপস্থাপন দেখে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আমি কিন্তু তখন রাজি ছিলাম না। প্রথম যে সিনেমাটিতে কাজ করার প্রস্তাব করে সেটি না করে আমাকে ‘বসগিরি’র গল্পটা দেওয়া হয়। সিনেমা করতে রাজি না হলেও গল্পটি পড়ে কিন্তু আমার বেশ ভালো লাগে। পরে আমার পরিবারের সাথে কথা বলি। এই তো।

শুনেছি আগেও কাজের অনেক প্রস্তাব পেয়েছেন?

হুম, অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছি আগেও। সেভাবে নিজেরও আগ্রহ ছিল না, অনেক ক্ষেত্রে কাজ পছন্দ হয়নি। তাছাড়া অভিনয়ের ব্যাপারে পরিবারের সম্মতি ছিল না। সব মিলিয়ে পরিস্থিতিটা নিজের এবং পরিবার কোনো দিক থেকে অনুকূলে ছিল না হয়ত সে কারণেই করা হয়নি।

পরিবার থেকে সম্মতি পেতে কষ্ট হয়েছে?

প্রথমে আমি ‘বসগিরি’র গল্প পড়ে সাঁয় দিই। আমার সম্মতি পেয়ে পরিচালক ও প্রযোজক সবাই মিলে আমার বাসায় আসেন। বাসায় এসেই আমার পরিবারের সবাইকে রাজি করান। তারা এমনটাও বলেছেন, যতি কাজ করে মনে হচ্ছে ভালো লাগেনি মাঝপথে এসে কাজ ছেড়ে দিতে পারবে। তাদের কথায় আমি ও আমার পরিবার ভালোভাবেই আশ্বস্ত হতে পেরেছি। আসলে তারা সেটা বোঝাতে পেরেছেন।

নতুন অনেকেই এসে দু-একটি কাজ করে আবার চলে যান, আপনার বেলায় তেমন হবে কি?

মাত্র তো কাজ শুরু করেছি, এটা বলতে পারি যাওয়ার জন্য আসিনি। ভালো কাজ দিয়ে শুরু করেছি আসা করি শেষটাও ভালো হবে। আর খুব বেশি কাজ করতে চাই না। হয়ত এ কথাটা সবাই বলে। পরে দেখা যায় সব ধরনের কাজ করে। ভালোমন্দের কোনো বাছ-বিচার করে না। আমি আশা করি সেটা করব না। ভালো ভালো কাজই উপহার দেব।

‘বসগিরি’ শুটিং কেমন চলছে?

সিনেমার কাজ শুরু হয়েছে বেশ অনেক দিন হলো, আমার অংশের শুটিং চলছে। এখন থেকে টানা শুটিং হবে।

অভিনয়ে সমস্যা হচ্ছে কি?

আমি অভিনয়ে সম্পূর্ণ নতুন তাই প্রতিনিয়তই শিখছি। অভিনয় করার জন্য যা যা প্রয়োজন তার সবটুকু চেষ্টাই করছি। প্রচুর সিনেমা দেখার অভ্যাস করছি এবং সিনেমা দেখছি। সেসব থেকেও নতুন নতুন জিনিস শিখছি। প্রতি মুহূর্তই নিজের স্ক্রিপ্টের ওপর চর্চা করছি। অভিনয় নিয়ে বলা যায় আমার এক্সপেরিমেন্ট চলছে। নিজের ডায়ালগ সুন্দরভাবে ডেলিভারি দেওয়ার প্র্যাকটিসও করছি। ডায়ালগ মুখস্থ করে ফেলেছি। এখন পর্যন্ত খুব সমস্যা হয়নি। তাছাড় ইউনিটের প্রত্যেকেই বেশ আন্তরিক। নিজের চরিত্রটির মধ্যে মগ্ন হয়ে যাচ্ছি। অভিনয় করছি এটা বুঝতে চাই না। এভাবে মগ্ন হয়ে যেতে চাই।

ঢাকাই ফিল্মের সবচেয়ে আলোচিত নায়কের সাথে কাজ করছেন, সে অনুভূতিটা কেমন?

নিঃসন্দেহে শাকিব খানের সাথে কাজ করা যে কারো জন্য সৌভাগ্যের ব্যাপার। সেদিক থেকে অবশ্যই আমি ভাগ্যবান। এর চেয়ে বড় কথা, তার কাছে অনেক সহযোগিতা পাচ্ছি। সব দিক থেকেই এ অনুভূতিটা আমার জন্য অসাধারণ।

চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে আমার আমিতে কী ধরনের পরিবর্তন এসেছে?

পার্থক্য কিন্তু অনেক। আপনি দেখবেন আগে আমার পরিচয়ের জায়গাটা অনেক সীমিত। যারা খবর শোনেন তাদের কেউ কেউ হয়ত আমাকে চেনেন। তবে সেই চেনার পরিধিটা খুবই সামান্য। কারণ একই সঙ্গে দেশের সব চ্যানেলেই অনেক সংবাদ পাঠক সংবাদ পড়ছেন। সেই পরিচিতিটা অনেকাংশেই ফিল্মের কাছে অনেক ছোট; কিন্তু ফিল্মের পরিধি অনেক বড়। একটি বড় ক্যানভাসের দিকে সমগ্র দেশের মানুষ চেয়ে থাকে। তাই জীবনাচারেও এর একটা প্রভাব পড়বে স্বাভাবিক। এমন পরিবর্তন তো রোজই হচ্ছে।

পড়াশোনা?

এখনো পড়াশোনা করছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ করছি, স্নাতক করেছি অর্থনীতিতে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা?

পরিকল্পনা করে সব সময় সবকিছু করা য়ায় না। প্রথমত ফিল্মে নিজের অবস্থানটা নিশ্চিত করাই প্রথম চ্যালেঞ্জ মনে করছি। অবশ্যই ভাল কাজের সাথে থাকতে চাই এবং ভাল কাজ করতে চাই। এখন পর্যন্ত পরিকল্পনা এতটুকুই।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

অভিনয়ে পরিবারের সম্মতি ছিল না

আপডেট টাইম : ১১:৫৫:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ অগাস্ট ২০১৬

সবার কাছে তিনি পরিচিত সংবাদ পাঠক হিসেবে। সম্প্রতি ‘বসগিরি’ সিনেমার মাধ্যমে নাম লিখিয়েছেন ঢাকাই সিনেমায়। গণমাধ্যমে কাজের সুবাদে মিডিয়া পরিচিতি থাকলেও চলচ্চিত্র অভিনেত্রী হিসেবে একেবারেই নতুন। সংবাদ পাঠক থেকে চলচ্চিত্রে অভিষেক। জীবনের এই বাঁক বদল নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সৈয়দ ঋয়াদ

সংবাদ পাঠক থেকে নায়িকা, অভিনয়ে পূর্বাভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলুন।

অভিনয় করব কখনো ভাবিনি, আর এমন ইচ্ছেও ছিল না। তবে ছোটবেলা থেকেই নাচ করছি। নাচের প্রতি একধরনের আগ্রহ ছিল। স্কুলে কিংবা কলেজে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রোগ্রামেও নিয়মিত ছিলাম। ফিল্মে কাজ করব কিংবা সিনেমার নায়িকা হব সেভাবে ভাবিনি তখনো।

ঢাকাই সিনেমার খুব ভালো সময় যাচ্ছে না, তারপরও চলচ্চিত্রে এসেছেন?

এটা ঠিক, আমাদের সিনেমার খুব ভালো সময় যাচ্ছে না। এর মানে কিন্তু এই নয় এখানে সিনেমা খুব খারাপ হচ্ছে। আমাদের এখানেও অনেক অভিজ্ঞ পরিচালক, সিনেমাটোগ্রাফার, এডিটর কাজ করছেন। আর সবাই যদি সিনেমার সময় ভালো যাচ্ছে না বলে বসে থাকি তাহলেও এ অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটবে না। আমি মনে করি, কাজ হলেই ঢাকাই ফিল্মের পরিবর্তন আসবে।

সিনেমায় আসার গল্পটা বলবেন?

শাকিব খানের নিজের প্র্রোডাকশনের নতুন সিনেমার জন্য নতুন মুখ খোঁজ হচ্ছিল। তার হাউজেরই কেউ একজন হয়ত আমার সংবাদ উপস্থাপন দেখে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আমি কিন্তু তখন রাজি ছিলাম না। প্রথম যে সিনেমাটিতে কাজ করার প্রস্তাব করে সেটি না করে আমাকে ‘বসগিরি’র গল্পটা দেওয়া হয়। সিনেমা করতে রাজি না হলেও গল্পটি পড়ে কিন্তু আমার বেশ ভালো লাগে। পরে আমার পরিবারের সাথে কথা বলি। এই তো।

শুনেছি আগেও কাজের অনেক প্রস্তাব পেয়েছেন?

হুম, অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছি আগেও। সেভাবে নিজেরও আগ্রহ ছিল না, অনেক ক্ষেত্রে কাজ পছন্দ হয়নি। তাছাড়া অভিনয়ের ব্যাপারে পরিবারের সম্মতি ছিল না। সব মিলিয়ে পরিস্থিতিটা নিজের এবং পরিবার কোনো দিক থেকে অনুকূলে ছিল না হয়ত সে কারণেই করা হয়নি।

পরিবার থেকে সম্মতি পেতে কষ্ট হয়েছে?

প্রথমে আমি ‘বসগিরি’র গল্প পড়ে সাঁয় দিই। আমার সম্মতি পেয়ে পরিচালক ও প্রযোজক সবাই মিলে আমার বাসায় আসেন। বাসায় এসেই আমার পরিবারের সবাইকে রাজি করান। তারা এমনটাও বলেছেন, যতি কাজ করে মনে হচ্ছে ভালো লাগেনি মাঝপথে এসে কাজ ছেড়ে দিতে পারবে। তাদের কথায় আমি ও আমার পরিবার ভালোভাবেই আশ্বস্ত হতে পেরেছি। আসলে তারা সেটা বোঝাতে পেরেছেন।

নতুন অনেকেই এসে দু-একটি কাজ করে আবার চলে যান, আপনার বেলায় তেমন হবে কি?

মাত্র তো কাজ শুরু করেছি, এটা বলতে পারি যাওয়ার জন্য আসিনি। ভালো কাজ দিয়ে শুরু করেছি আসা করি শেষটাও ভালো হবে। আর খুব বেশি কাজ করতে চাই না। হয়ত এ কথাটা সবাই বলে। পরে দেখা যায় সব ধরনের কাজ করে। ভালোমন্দের কোনো বাছ-বিচার করে না। আমি আশা করি সেটা করব না। ভালো ভালো কাজই উপহার দেব।

‘বসগিরি’ শুটিং কেমন চলছে?

সিনেমার কাজ শুরু হয়েছে বেশ অনেক দিন হলো, আমার অংশের শুটিং চলছে। এখন থেকে টানা শুটিং হবে।

অভিনয়ে সমস্যা হচ্ছে কি?

আমি অভিনয়ে সম্পূর্ণ নতুন তাই প্রতিনিয়তই শিখছি। অভিনয় করার জন্য যা যা প্রয়োজন তার সবটুকু চেষ্টাই করছি। প্রচুর সিনেমা দেখার অভ্যাস করছি এবং সিনেমা দেখছি। সেসব থেকেও নতুন নতুন জিনিস শিখছি। প্রতি মুহূর্তই নিজের স্ক্রিপ্টের ওপর চর্চা করছি। অভিনয় নিয়ে বলা যায় আমার এক্সপেরিমেন্ট চলছে। নিজের ডায়ালগ সুন্দরভাবে ডেলিভারি দেওয়ার প্র্যাকটিসও করছি। ডায়ালগ মুখস্থ করে ফেলেছি। এখন পর্যন্ত খুব সমস্যা হয়নি। তাছাড় ইউনিটের প্রত্যেকেই বেশ আন্তরিক। নিজের চরিত্রটির মধ্যে মগ্ন হয়ে যাচ্ছি। অভিনয় করছি এটা বুঝতে চাই না। এভাবে মগ্ন হয়ে যেতে চাই।

ঢাকাই ফিল্মের সবচেয়ে আলোচিত নায়কের সাথে কাজ করছেন, সে অনুভূতিটা কেমন?

নিঃসন্দেহে শাকিব খানের সাথে কাজ করা যে কারো জন্য সৌভাগ্যের ব্যাপার। সেদিক থেকে অবশ্যই আমি ভাগ্যবান। এর চেয়ে বড় কথা, তার কাছে অনেক সহযোগিতা পাচ্ছি। সব দিক থেকেই এ অনুভূতিটা আমার জন্য অসাধারণ।

চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে আমার আমিতে কী ধরনের পরিবর্তন এসেছে?

পার্থক্য কিন্তু অনেক। আপনি দেখবেন আগে আমার পরিচয়ের জায়গাটা অনেক সীমিত। যারা খবর শোনেন তাদের কেউ কেউ হয়ত আমাকে চেনেন। তবে সেই চেনার পরিধিটা খুবই সামান্য। কারণ একই সঙ্গে দেশের সব চ্যানেলেই অনেক সংবাদ পাঠক সংবাদ পড়ছেন। সেই পরিচিতিটা অনেকাংশেই ফিল্মের কাছে অনেক ছোট; কিন্তু ফিল্মের পরিধি অনেক বড়। একটি বড় ক্যানভাসের দিকে সমগ্র দেশের মানুষ চেয়ে থাকে। তাই জীবনাচারেও এর একটা প্রভাব পড়বে স্বাভাবিক। এমন পরিবর্তন তো রোজই হচ্ছে।

পড়াশোনা?

এখনো পড়াশোনা করছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ করছি, স্নাতক করেছি অর্থনীতিতে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা?

পরিকল্পনা করে সব সময় সবকিছু করা য়ায় না। প্রথমত ফিল্মে নিজের অবস্থানটা নিশ্চিত করাই প্রথম চ্যালেঞ্জ মনে করছি। অবশ্যই ভাল কাজের সাথে থাকতে চাই এবং ভাল কাজ করতে চাই। এখন পর্যন্ত পরিকল্পনা এতটুকুই।