ঢাকা ০৭:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাইডেনের বিকল্প কে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:১৯:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ জুলাই ২০২৪
  • ৩৯ বার

যুক্তরাষ্ট্রে নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রথম সরাসরি বিতর্কে ট্রাম্পের কাছে ধরাশায়ী হওয়ার পর বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ঘিরে ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এছাড়া বিতর্কের পর মর্নিং কনসাল্ট প্রো পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, ৬০ শতাংশ নিবন্ধিত ভোটার ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে বাইডেনের বিকল্প প্রার্থী চান। এ অবস্থায় বাইডেনের সম্ভাব্য বিকল্প নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে চলছে নানা জল্পনা। কে হতে পারেন জো বাইডেনের বিকল্প?

মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকোর খবরে বলা হয়েছে, বিতর্কে ট্রাম্পের কাছে বাইডেন ধরাশায়ী হলে তাদের কাছে একের পর এক বার্তা আসতে থাকে। এসব বার্তা পাঠিয়েছেন দলের ভোটার ও অর্থদাতারা। সেসব বার্তায় দেখা গেছে, আতঙ্ক থেকে তারা বাইডেনের বিকল্প হিসাবে কে নির্বাচন করতে পারেন, তা নিয়ে সক্রিয়ভাবে আলোচনা শুরু করেছেন।

জো বাইডেন এই বছরের শুরুতে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রাইমারি জিতেছেন। তবে এখনো তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট হিসাবে দলের প্রার্থী মনোনীত হননি। ১৯-২২ আগস্ট শিকাগোতে অনুষ্ঠেয় ২০২৪ সালের ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কনভেনশনে তাকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে।

একজন অনুমানযোগ্য মনোনীত প্রার্থী হিসাবে বাইডেনের স্থানে অন্য কাউকে প্রতিস্থাপন করার আনুষ্ঠানিক কোনো ব্যবস্থা নেই। এ ধরনের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হলে, সেটা হবে আধুনিক মার্কিন রাজনৈতিক ইতিহাসে এমন প্রথম পদক্ষেপ।

কার্যত এ অবস্থায় একমাত্র বিকল্প হচ্ছে বাইডেনের স্বেচ্ছায় সরে যাওয়া এবং যেসব প্রতিনিধি তাকে প্রাইমারিতে মনোনীত করেছিলেন, তাদের অন্য কাউকে বেছে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া।

বাইডেন যদি সরে দাঁড়ান, এক্ষেত্রে তিনি হয়তো পছন্দের কোনো প্রার্থীর নাম বলে যেতে পারেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস হতে পারেন তার পছন্দের প্রার্থী। প্রার্থী হিসাবে তিনি বেশ যোগ্য প্রার্থী, সন্দেহ নেই। কিন্তু ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধিরা তাকে মনোনীত করতে বাধ্য নন।

এছাড়া বাইডেনের জন্য সবচেয়ে কঠোর পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের পদ থেকে পদত্যাগ করা। এ অবস্থায় কমলা হ্যারিস প্রেসিডেন্টের স্থলাভিষিক্ত হবেন। তবে তিনি ২০২৪ সালের জন্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসাবে গণতান্ত্রিকভাবে মনোনীত হবেন না।

এ পর্যায়ে শিকাগোর কনভেনশনেই যদি প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বাছাই করতে হয়, সেটা হবে আধুনিক মার্কিন রাজনীতিতে বিরল ঘটনা। দলের ভেতরের ৭০০ সদস্য, যারা নিজেদের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ না হলেও নতুন একজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী চূড়ান্ত করবেন। নভেম্বরের নির্বাচনের আগে তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে নতুন মনোনীত প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণার জন্য সময় পাবেন মাত্র তিন মাস।

এ পরিস্থিতিতে বাইডেনের বিকল্প হিসাবে এগিয়ে থাকা কোনো প্রার্থী নেই। তবে বেশ কয়েকজন প্রার্থী রয়েছেন। তার বিকল্প হিসাবে নামের তালিকায় এগিয়ে আছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। কিন্তু তার জনপ্রিয়তার হার অনেক কম। বাইডেন প্রশাসনে নিজের সক্রিয় ভূমিকা না রাখার কারণে তার সমালোচনাও রয়েছে। প্রার্থী মনোনীত হলে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তাকে নির্বাচনি প্রচারণা চালাতেই যথেষ্ট ঘাম ঝরাতে হবে।

এর বাইরে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে তালিকায় রয়েছেন ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর ৫৬ বছর বয়সি গ্যাভিন নিউসাম। বৃহস্পতিবার টেলিভিশন বিতর্ক চলার সময় বাইডেনের বিকল্প হিসাবে তার নাম নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছিল।

ইলিওনয়ের ৫৯ বছরের গভর্নর জে বি প্রিটজকার হতে পারেন সবচেয়ে বিত্তশালী প্রার্থী। গর্ভপাতের অধিকারের পক্ষে সোচ্চার প্রিটজকার তার স্টেটকে গর্ভপাত ঘটাতে আগ্রহী নারীদের জন্য ‘স্বর্গরাজ্যে’ পরিণত করতে পারেন। অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের পক্ষেও তার জোরালো অবস্থান রয়েছে।

মিশিগানের ৫২ বছরের গভর্নর গ্রেটচেন হোয়াইটমার ২০২০ সালে বাইডেনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ার তালিকায় ছিলেন। তিনিও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন জোরালো করার পক্ষে রয়েছেন।

৭১ বছর বয়সি ওয়াইয়োর সিনেটর শেরড ব্রাউন হতে পারেন দলের অন্যতম প্রবীণ প্রার্থী। ২০২০ সালে দলের মনোনয়নে আগ্রহ প্রকাশ না করায় অনেকে অবাক হয়েছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন, মানুষের জন্য কাজ করার জন্য ওহাইয়োই তার জন্য সবচেয়ে ভালো জায়গা।

এরপরও প্রশ্ন উঠেছে, ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে বাইডেনকে চ্যালেঞ্জ করতে পারেন এমন প্রার্থী কি আসলেই আছেন? প্রাথমিক ভোটের পর সেটা করা আরও বেশি অসম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে। প্রাথমিক ভোটে দলীয় প্রার্থীদের পছন্দের ক্ষেত্রে ভোটাররা নিজেদের মতামত দিতে পারেন।

সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন ও অ্যামি ক্লোবুচারের পক্ষে কাজ করা কৌশলী টিম হোগ্যান মনে করেন, এ সময় বাইডেনকে চ্যালেঞ্জ করা সাংগঠনিকভাবে অসম্ভব। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রাথমিক ভোটের দুমাস আগে তিনি বলেছিলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে এটা আত্মঘাতী অভিযাত্রা।’

মার্কিন নির্বাচনে একজন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে প্রাথমিক ভোটে সফল হওয়াই অনেক কঠিন

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

বাইডেনের বিকল্প কে

আপডেট টাইম : ১০:১৯:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ জুলাই ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্রে নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রথম সরাসরি বিতর্কে ট্রাম্পের কাছে ধরাশায়ী হওয়ার পর বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ঘিরে ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এছাড়া বিতর্কের পর মর্নিং কনসাল্ট প্রো পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, ৬০ শতাংশ নিবন্ধিত ভোটার ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে বাইডেনের বিকল্প প্রার্থী চান। এ অবস্থায় বাইডেনের সম্ভাব্য বিকল্প নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে চলছে নানা জল্পনা। কে হতে পারেন জো বাইডেনের বিকল্প?

মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকোর খবরে বলা হয়েছে, বিতর্কে ট্রাম্পের কাছে বাইডেন ধরাশায়ী হলে তাদের কাছে একের পর এক বার্তা আসতে থাকে। এসব বার্তা পাঠিয়েছেন দলের ভোটার ও অর্থদাতারা। সেসব বার্তায় দেখা গেছে, আতঙ্ক থেকে তারা বাইডেনের বিকল্প হিসাবে কে নির্বাচন করতে পারেন, তা নিয়ে সক্রিয়ভাবে আলোচনা শুরু করেছেন।

জো বাইডেন এই বছরের শুরুতে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রাইমারি জিতেছেন। তবে এখনো তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট হিসাবে দলের প্রার্থী মনোনীত হননি। ১৯-২২ আগস্ট শিকাগোতে অনুষ্ঠেয় ২০২৪ সালের ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কনভেনশনে তাকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে।

একজন অনুমানযোগ্য মনোনীত প্রার্থী হিসাবে বাইডেনের স্থানে অন্য কাউকে প্রতিস্থাপন করার আনুষ্ঠানিক কোনো ব্যবস্থা নেই। এ ধরনের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হলে, সেটা হবে আধুনিক মার্কিন রাজনৈতিক ইতিহাসে এমন প্রথম পদক্ষেপ।

কার্যত এ অবস্থায় একমাত্র বিকল্প হচ্ছে বাইডেনের স্বেচ্ছায় সরে যাওয়া এবং যেসব প্রতিনিধি তাকে প্রাইমারিতে মনোনীত করেছিলেন, তাদের অন্য কাউকে বেছে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া।

বাইডেন যদি সরে দাঁড়ান, এক্ষেত্রে তিনি হয়তো পছন্দের কোনো প্রার্থীর নাম বলে যেতে পারেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস হতে পারেন তার পছন্দের প্রার্থী। প্রার্থী হিসাবে তিনি বেশ যোগ্য প্রার্থী, সন্দেহ নেই। কিন্তু ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধিরা তাকে মনোনীত করতে বাধ্য নন।

এছাড়া বাইডেনের জন্য সবচেয়ে কঠোর পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের পদ থেকে পদত্যাগ করা। এ অবস্থায় কমলা হ্যারিস প্রেসিডেন্টের স্থলাভিষিক্ত হবেন। তবে তিনি ২০২৪ সালের জন্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসাবে গণতান্ত্রিকভাবে মনোনীত হবেন না।

এ পর্যায়ে শিকাগোর কনভেনশনেই যদি প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বাছাই করতে হয়, সেটা হবে আধুনিক মার্কিন রাজনীতিতে বিরল ঘটনা। দলের ভেতরের ৭০০ সদস্য, যারা নিজেদের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ না হলেও নতুন একজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী চূড়ান্ত করবেন। নভেম্বরের নির্বাচনের আগে তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে নতুন মনোনীত প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণার জন্য সময় পাবেন মাত্র তিন মাস।

এ পরিস্থিতিতে বাইডেনের বিকল্প হিসাবে এগিয়ে থাকা কোনো প্রার্থী নেই। তবে বেশ কয়েকজন প্রার্থী রয়েছেন। তার বিকল্প হিসাবে নামের তালিকায় এগিয়ে আছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। কিন্তু তার জনপ্রিয়তার হার অনেক কম। বাইডেন প্রশাসনে নিজের সক্রিয় ভূমিকা না রাখার কারণে তার সমালোচনাও রয়েছে। প্রার্থী মনোনীত হলে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তাকে নির্বাচনি প্রচারণা চালাতেই যথেষ্ট ঘাম ঝরাতে হবে।

এর বাইরে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে তালিকায় রয়েছেন ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর ৫৬ বছর বয়সি গ্যাভিন নিউসাম। বৃহস্পতিবার টেলিভিশন বিতর্ক চলার সময় বাইডেনের বিকল্প হিসাবে তার নাম নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছিল।

ইলিওনয়ের ৫৯ বছরের গভর্নর জে বি প্রিটজকার হতে পারেন সবচেয়ে বিত্তশালী প্রার্থী। গর্ভপাতের অধিকারের পক্ষে সোচ্চার প্রিটজকার তার স্টেটকে গর্ভপাত ঘটাতে আগ্রহী নারীদের জন্য ‘স্বর্গরাজ্যে’ পরিণত করতে পারেন। অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের পক্ষেও তার জোরালো অবস্থান রয়েছে।

মিশিগানের ৫২ বছরের গভর্নর গ্রেটচেন হোয়াইটমার ২০২০ সালে বাইডেনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ার তালিকায় ছিলেন। তিনিও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন জোরালো করার পক্ষে রয়েছেন।

৭১ বছর বয়সি ওয়াইয়োর সিনেটর শেরড ব্রাউন হতে পারেন দলের অন্যতম প্রবীণ প্রার্থী। ২০২০ সালে দলের মনোনয়নে আগ্রহ প্রকাশ না করায় অনেকে অবাক হয়েছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন, মানুষের জন্য কাজ করার জন্য ওহাইয়োই তার জন্য সবচেয়ে ভালো জায়গা।

এরপরও প্রশ্ন উঠেছে, ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে বাইডেনকে চ্যালেঞ্জ করতে পারেন এমন প্রার্থী কি আসলেই আছেন? প্রাথমিক ভোটের পর সেটা করা আরও বেশি অসম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে। প্রাথমিক ভোটে দলীয় প্রার্থীদের পছন্দের ক্ষেত্রে ভোটাররা নিজেদের মতামত দিতে পারেন।

সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন ও অ্যামি ক্লোবুচারের পক্ষে কাজ করা কৌশলী টিম হোগ্যান মনে করেন, এ সময় বাইডেনকে চ্যালেঞ্জ করা সাংগঠনিকভাবে অসম্ভব। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রাথমিক ভোটের দুমাস আগে তিনি বলেছিলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে এটা আত্মঘাতী অভিযাত্রা।’

মার্কিন নির্বাচনে একজন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে প্রাথমিক ভোটে সফল হওয়াই অনেক কঠিন