ঢাকা ১২:১০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের গণমাধ্যমের প্রশংসায় যুক্তরাষ্ট্র

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৪৬:৪০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ জুন ২০২৪
  • ২৪ বার

সাংবাদিকদের গুরুত্বপূর্ণ কাজ থেকে বিরত রাখতে হয়রানি বা ভয়ভীতি দেখানোর যে কোনো প্রচেষ্টায় আপত্তি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতির প্রসঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের ব্রিফিংয়ে প্রশ্ন করলে এ আপত্তির কথা জানানো হয়।

স্থানীয় সময় সোমবার পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতি নিয়ে প্রশ্ন করা হয় স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথু মিলারকে। জবাবে তিনি বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদের অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের কথা জানান।

সম্প্রতি বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন পুলিশের দুর্নীতি নিয়ে রিপোর্ট করা গণমাধ্যমগুলোকে উদ্দেশ্য করে একটি হুমকিমূলক বিবৃতি দিয়েছে। শাসকগোষ্ঠীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের ব্যাপক দুর্নীতির তুলনায় এটি খুবই নগণ্য, যা নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম প্রায়ই উপেক্ষা করে। একটি শীর্ষস্থানীয় ইংরেজি দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক প্রকাশ্যে বলেছিলেন যে, তারা পরিচিত দুর্নীতির গল্পও প্রকাশ করতে পারেন না। আপনারা জানেন, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬৫তম। গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে এসব হুমকি মোকাবেলা ও দুর্নীতি মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র কী পদক্ষেপ নেবে?

সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে মিলার বলেন, ‘কার্যকর গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান বজায় রাখতে এবং সরকারের স্বচ্ছতা বাড়াতে মুক্ত ও স্বাধীন গণমাধ্যমের ভূমিকাকে আমরা দৃঢ়ভাবে সমর্থন করি। সাংবাদিকদের গুরুত্বপূর্ণ কাজ থেকে বিরত রাখতে হয়রানি বা ভয়ভীতি দেখানোর যে কোনো প্রচেষ্টায় আমরা আপত্তি জানাই।’

ব্রিফিংয়ে সাংবাদিক আরও প্রশ্ন করেন, সম্প্রিতি ভারত সফরকালে নরেন্দ্র মোদি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতায় অংশীদারিত্বের অবদানের স্বীকৃতি দিয়ে একটি মুক্ত, উন্মুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক, নিরাপদ ও নিয়মভিত্তিক ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রতি উভয় দেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়। এই প্রতিশ্রুতি কি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য অনুরূপ দৃষ্টিভঙ্গি প্রচারে মার্কিন আগ্রহকে প্রতিফলিত করে?

জবাবে মিলার বলেন, ‘আমি সেই নির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি নিয়ে কথা বলতে চাই না, কারণ আমি বিবৃতিটি পড়িনি। এটি নিয়ে এখানে আমার সহকর্মীদের সাথেও কথা হয়নি। তবে স্পষ্টতই, আমরা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ‘শান্তি ও স্থিতিশীলতা’ সমর্থন করি। ঐ অঞ্চলে আমাদের কর্মপ্রচেষ্টার এটাই এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য।’

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি গণমাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক ও বর্তমান সদস্যদের নিয়ে অনুসন্ধানমূলক ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এগুলোকে অতিরঞ্জিত, আংশিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে বিবৃতি দেয় বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন-বিপিএসএ। রিপোর্ট প্রকাশে আরও সতর্ক হওয়ারও আহ্বান জানানো হয়। বিষয়টিকে সাম্প্রতিক সময়ে ফাঁস হওয়া সাবেক শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের বিপুল পরিমাণ অর্থ-সম্পদ অর্জনের তথ্য প্রকাশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির পাশাপাশি পুলিশ বাহিনীর একাংশের দুর্নীতির সুরক্ষা দেওয়ার অপচেষ্টা হিসেবে উল্লেখ করেছে বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বাংলাদেশের গণমাধ্যমের প্রশংসায় যুক্তরাষ্ট্র

আপডেট টাইম : ১১:৪৬:৪০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ জুন ২০২৪

সাংবাদিকদের গুরুত্বপূর্ণ কাজ থেকে বিরত রাখতে হয়রানি বা ভয়ভীতি দেখানোর যে কোনো প্রচেষ্টায় আপত্তি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতির প্রসঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের ব্রিফিংয়ে প্রশ্ন করলে এ আপত্তির কথা জানানো হয়।

স্থানীয় সময় সোমবার পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতি নিয়ে প্রশ্ন করা হয় স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথু মিলারকে। জবাবে তিনি বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদের অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের কথা জানান।

সম্প্রতি বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন পুলিশের দুর্নীতি নিয়ে রিপোর্ট করা গণমাধ্যমগুলোকে উদ্দেশ্য করে একটি হুমকিমূলক বিবৃতি দিয়েছে। শাসকগোষ্ঠীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের ব্যাপক দুর্নীতির তুলনায় এটি খুবই নগণ্য, যা নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম প্রায়ই উপেক্ষা করে। একটি শীর্ষস্থানীয় ইংরেজি দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক প্রকাশ্যে বলেছিলেন যে, তারা পরিচিত দুর্নীতির গল্পও প্রকাশ করতে পারেন না। আপনারা জানেন, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬৫তম। গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে এসব হুমকি মোকাবেলা ও দুর্নীতি মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র কী পদক্ষেপ নেবে?

সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে মিলার বলেন, ‘কার্যকর গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান বজায় রাখতে এবং সরকারের স্বচ্ছতা বাড়াতে মুক্ত ও স্বাধীন গণমাধ্যমের ভূমিকাকে আমরা দৃঢ়ভাবে সমর্থন করি। সাংবাদিকদের গুরুত্বপূর্ণ কাজ থেকে বিরত রাখতে হয়রানি বা ভয়ভীতি দেখানোর যে কোনো প্রচেষ্টায় আমরা আপত্তি জানাই।’

ব্রিফিংয়ে সাংবাদিক আরও প্রশ্ন করেন, সম্প্রিতি ভারত সফরকালে নরেন্দ্র মোদি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতায় অংশীদারিত্বের অবদানের স্বীকৃতি দিয়ে একটি মুক্ত, উন্মুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক, নিরাপদ ও নিয়মভিত্তিক ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রতি উভয় দেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়। এই প্রতিশ্রুতি কি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য অনুরূপ দৃষ্টিভঙ্গি প্রচারে মার্কিন আগ্রহকে প্রতিফলিত করে?

জবাবে মিলার বলেন, ‘আমি সেই নির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি নিয়ে কথা বলতে চাই না, কারণ আমি বিবৃতিটি পড়িনি। এটি নিয়ে এখানে আমার সহকর্মীদের সাথেও কথা হয়নি। তবে স্পষ্টতই, আমরা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ‘শান্তি ও স্থিতিশীলতা’ সমর্থন করি। ঐ অঞ্চলে আমাদের কর্মপ্রচেষ্টার এটাই এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য।’

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি গণমাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক ও বর্তমান সদস্যদের নিয়ে অনুসন্ধানমূলক ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এগুলোকে অতিরঞ্জিত, আংশিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে বিবৃতি দেয় বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন-বিপিএসএ। রিপোর্ট প্রকাশে আরও সতর্ক হওয়ারও আহ্বান জানানো হয়। বিষয়টিকে সাম্প্রতিক সময়ে ফাঁস হওয়া সাবেক শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের বিপুল পরিমাণ অর্থ-সম্পদ অর্জনের তথ্য প্রকাশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির পাশাপাশি পুলিশ বাহিনীর একাংশের দুর্নীতির সুরক্ষা দেওয়ার অপচেষ্টা হিসেবে উল্লেখ করেছে বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থা।