ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতজনিত প্রভাবে গত সোমবার দেশের ৩ কোটির বেশি গ্রাহক বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। গত শনিবার থেকেই দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ পায়নি আরও অনেক আবাসিক, বাণিজ্যিক এবং শিল্প গ্রাহক। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত আড়াই কোটির মতো সংযোগ পুনঃস্থাপিত হয়েছে। প্রায় অর্ধ কোটির বেশি গ্রাহক এখনো সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ এবং বিতরণ সংস্থাগুলো সূত্রে জানা যায়, রেমালের আঘাতে প্রায় ৩ কোটি ১০ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। এর বাইরেও দুর্ঘটনা ও ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে শনিবার থেকে গতকাল পর্যন্ত টানা কিংবা বিরতিসহ বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল আরও কয়েক লাখ গ্রাহকের সংযোগে। এছাড়া লো ভোল্টেজের কারণেও ভুগেছেন অনেক গ্রাহক।
পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) অফিশিয়াল তথ্য অনুযায়ী, সংস্থাটির ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন ৩ কোটি ৩ লাখ ৯ হাজার ৭০২ জন গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। গতকাল সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ২ কোটি ৪২ লাখ গ্রাহককে পুনঃসংযোগ দেওয়া হয়েছে। ৬১ লাখ ৯ হাজার ৭০২টি সংযোগ বিচ্ছিন্ন আছে। প্রাথমিক মূল্যায়নে, ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে সংস্থাটির ১০৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ৭৬৬টি ৩৩ কেভির ফিডার, ১ হাজার ১০৫টি ৩৩/১১ কেভি সাবস্টেশন, ২ হাজার ৮১৮টি ট্রান্সফরমার, ৩ হাজার ৮৩৩টি বৈদ্যুতিক খুঁটি, ৫৯ হাজার ৩৯৯ মিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) ১৫ লাখ ৪৮ হাজার ১৫৪ গ্রাহকের মধ্যে ৫ লাখের মতো গ্রাহক বিচ্ছিন্ন হয়েছিল। সংযোগ পুনঃস্থাপনের পর গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ১ লাখ ৪৪ হাজার ৬২৮ গ্রাহক বিচ্ছিন্ন রয়েছে। প্রাথমিক তথ্যানুসারে ওজোপাডিকোর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৫ কোটি ৭ লাখ ৮১ হাজার ৭০২ টাকা।
বিদ্যুত্ না থাকায় গ্রাহকরা পানির সংকটসহ নানা রকম ভোগান্তিতে পড়েছেন। এছাড়া ইলেক্ট্রিক ও ইলেক্ট্রনিক পণ্য ব্যবহার করতে না পারায় দৈনন্দিন জীবনে ব্যাঘাত ঘটছে। স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করেও বিদ্যুৎ সরবরাহ না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন অনেক গ্রাহক।