ঢাকা ০৫:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১৫ আগস্ট ব্যক্তি মুজিবকে নয়, বাংলাদেশকে হত্যা করা হয়েছিল

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৩০:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ অগাস্ট ২০১৬
  • ৩৭৫ বার

শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ব্যক্তি মুজিবকে নয় বাংলাদেশকে হত্যা করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ওইদিন মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তিরা এ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে হত্যা করে বাঙালীকে একটি উগ্র জাতিগোষ্ঠীরূপে পাকিস্তানের কলোনিতে পরিণত করতে চেয়েছিল।

তিনি আরো বলেন, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধকে মেনে নিতে পারেনি তারাই দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের সহায়তায় ১৫ আগস্টের নৃশংস হত্যাকান্ড ঘটিয়েছিল।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শিল্পমন্ত্রী এ কথা বলেন। রাজধানীর বিসিআইসি ভবন মিলনায়তনে শিল্প মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এতে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ডের (বিএবি) মহাপরিচালক মো. আবু আবদুল্লাহ্, বিসিআইসি’র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইকবাল, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জামাল আবদুল নাছের চৌধুরী ও সুসেন চন্দ্র দাস বক্তব্য রাখেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শকে হত্যা এবং বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করে পাকিস্তানী বিজাতীয় ভাবধারা চালুর উদ্দেশ্যেই একাত্তরের পরাজিত শক্তি বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড কোনো ব্যক্তির হত্যাকান্ড নয়, এটি ছিল দেশকে নব্য পাকিস্তান বানানোর একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। ১৫ আগস্ট হত্যাকান্ডের পরবর্তীতে জাতীয় চার নেতা হত্যা, সংবিধান থেকে জাতীয় চার মূলনীতি ছেঁটে ফেলা, গোলাম আজমকে নাগরিকত্ব দিয়ে রাজনীতিতে নিয়ে আসা, বেতারের নাম বদলিয়ে রেডিও বাংলাদেশ করাসহ ষড়যন্ত্রকারীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী ধারাবাহিক কর্মকান্ডই তা প্রমাণ করে।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শক্তি হচ্ছে এ দেশের জনগণ। জনগণের আস্থা ও সমর্থনে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা ঘাতক চক্রের উদ্দেশ্যকে ব্যর্থ করে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ শোষণমুক্ত অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক মূল্যায়নে বাংলাদেশ নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ২০১৮ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশেও পরিণত হবে বলে তিনি দৃঢ়তার সাথে উল্লেখ করেন।

আমু বলেন, পাকিস্তান সৃষ্টির প্রথম দিন থেকেই তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান তথা বর্তমান বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের সূত্রপাত শুরু হয়। ষড়যন্ত্রের এ জাল ছিন্ন করে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন। তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের স্থলসীমানা চূড়ান্ত করেছেন। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আদালতে লড়াই করে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমাও নির্ধারণ করেছেন। জঙ্গিবাদ ও উগ্র সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে চলমান লড়াইয়েও তিনি বিজয়ী হবেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ ও উগ্র সাম্প্রদায়িকতা কারো জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে না। বাংলাদেশের মানুষ ধার্মিক হলেও ধর্মান্ধ নয়। তিনি শোককে শক্তিতে পরিণত করে স্বাধীনতা বিরোধী ও উগ্র সাম্প্রদায়িক অপশক্তির যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সবাইকে ঐকবদ্ধ থাকার আহবান জানান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

১৫ আগস্ট ব্যক্তি মুজিবকে নয়, বাংলাদেশকে হত্যা করা হয়েছিল

আপডেট টাইম : ১১:৩০:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ অগাস্ট ২০১৬

শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ব্যক্তি মুজিবকে নয় বাংলাদেশকে হত্যা করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ওইদিন মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তিরা এ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে হত্যা করে বাঙালীকে একটি উগ্র জাতিগোষ্ঠীরূপে পাকিস্তানের কলোনিতে পরিণত করতে চেয়েছিল।

তিনি আরো বলেন, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধকে মেনে নিতে পারেনি তারাই দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের সহায়তায় ১৫ আগস্টের নৃশংস হত্যাকান্ড ঘটিয়েছিল।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শিল্পমন্ত্রী এ কথা বলেন। রাজধানীর বিসিআইসি ভবন মিলনায়তনে শিল্প মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এতে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ডের (বিএবি) মহাপরিচালক মো. আবু আবদুল্লাহ্, বিসিআইসি’র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইকবাল, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জামাল আবদুল নাছের চৌধুরী ও সুসেন চন্দ্র দাস বক্তব্য রাখেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শকে হত্যা এবং বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করে পাকিস্তানী বিজাতীয় ভাবধারা চালুর উদ্দেশ্যেই একাত্তরের পরাজিত শক্তি বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড কোনো ব্যক্তির হত্যাকান্ড নয়, এটি ছিল দেশকে নব্য পাকিস্তান বানানোর একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। ১৫ আগস্ট হত্যাকান্ডের পরবর্তীতে জাতীয় চার নেতা হত্যা, সংবিধান থেকে জাতীয় চার মূলনীতি ছেঁটে ফেলা, গোলাম আজমকে নাগরিকত্ব দিয়ে রাজনীতিতে নিয়ে আসা, বেতারের নাম বদলিয়ে রেডিও বাংলাদেশ করাসহ ষড়যন্ত্রকারীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী ধারাবাহিক কর্মকান্ডই তা প্রমাণ করে।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শক্তি হচ্ছে এ দেশের জনগণ। জনগণের আস্থা ও সমর্থনে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা ঘাতক চক্রের উদ্দেশ্যকে ব্যর্থ করে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ শোষণমুক্ত অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক মূল্যায়নে বাংলাদেশ নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ২০১৮ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশেও পরিণত হবে বলে তিনি দৃঢ়তার সাথে উল্লেখ করেন।

আমু বলেন, পাকিস্তান সৃষ্টির প্রথম দিন থেকেই তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান তথা বর্তমান বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের সূত্রপাত শুরু হয়। ষড়যন্ত্রের এ জাল ছিন্ন করে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন। তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের স্থলসীমানা চূড়ান্ত করেছেন। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আদালতে লড়াই করে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমাও নির্ধারণ করেছেন। জঙ্গিবাদ ও উগ্র সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে চলমান লড়াইয়েও তিনি বিজয়ী হবেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ ও উগ্র সাম্প্রদায়িকতা কারো জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে না। বাংলাদেশের মানুষ ধার্মিক হলেও ধর্মান্ধ নয়। তিনি শোককে শক্তিতে পরিণত করে স্বাধীনতা বিরোধী ও উগ্র সাম্প্রদায়িক অপশক্তির যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সবাইকে ঐকবদ্ধ থাকার আহবান জানান।