ঢাকা ০১:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
সৌদির কনসার্টে গাইবেন পড়শী আসছে নতুন গান আ.লীগের রাজনীতি করা নিয়ে যা বললেন মান্না দোসরদের গ্রেফতার করা না গেলে মুক্তি পাবে না পুরান ঢাকার সাধারণ মানুষ সেলিমের চেয়েও ভয়ঙ্কর দুই পুত্র সোলায়মান ও ইরফান বাতাসে ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকি, ঢাকার অবস্থা কি শাকিবের ‘দরদ’ নিয়ে যা বললেন অপু বিশ্বাস ‘ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সফল হলেই ভারতের স্বার্থ রক্ষিত’ ভারতীয় ব্যবসায়ীর সাক্ষাৎকার আইপিএল নিলামের চূড়ান্ত তালিকায় ১২ বাংলাদেশি ফিলিপাইনের দিকে ধেয়ে আসছে সুপার টাইফুন আগামীর বাংলাদেশ হবে ন্যায়বিচার, মানবাধিকার ও বাক-স্বাধীনতার: প্রধান উপদেষ্টা আজিমপুরে ডাকাতির সময় অপহৃত সেই শিশু উদ্ধার

ছয় জেলায় তীব্র নদীভাঙন বিলীন বেড়িবাঁধ, ঘরবাড়ি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৩২:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ অগাস্ট ২০১৬
  • ৩৪৮ বার

ভোলা, চাঁদপুর, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, ফরিদপুর ও বাগেরহাটে নদীভাঙন তীব্র হয়েছে। ভোলায় দুই দিন ধরে মেঘনার তীর সংরক্ষণ বাঁধের দুই কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন চলছে। বাগেরহাটে এক সপ্তাহে ৫০০ বসতবাড়ি মধুমতী নদীতে বিলীন হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল রবিবার এক দিনেই নদীগর্ভে গেছে ২৪টি বসতবাড়ি ও একটি কবরস্থান। জোয়ারের প্রভাবে সুগন্ধা, বিষখালী ও ভাসণ্ডা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গতকাল ঝালকাঠি সদরের অলিগলিতেও পানি ঢুকে পড়েছে। উত্তরাঞ্চলে বন্যার পানি কমা অব্যাহত রয়েছে। তবে গতকালও উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোয় অসংখ্য গ্রাম পানিতে নিমজ্জিত ছিল। বন্যার পানিতে ডুবে গতকাল কুড়িগ্রাম, জামালপুর ও শেরপুরে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বন্যায় মৃতের সংখ্যা ৭০ জন ছাড়িয়ে গেছে।

ভোলা : ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে মেঘনা তীর সংরক্ষণ বাঁধের আড়াই কিলোমিটার এলাকায় ফের ধস দেখা দিয়েছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার এক কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। তিন কিলোমিটার ভাঙা বাঁধ মেরামতের কাজ করতে স্রোতের সঙ্গে সমানতালে যুদ্ধ করছে শ্রমিকরা। পাউবোর জরুরি কাজের আওতায় দিন-রাত প্রায় অর্ধশত শ্রমিক মেরামতকাজ করছে। প্রবল বেগে জোয়ারের পানি সদ্য মেরামত করা বাঁধের ওপর আছড়ে পড়ায় অনেক জায়গা ফের ধসে পড়েছে। প্রমত্তা মেঘনার করাল গ্রাসে গত তিন-চার দিনে উপজেলার বড়মানিকা

ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডসংলগ্ন দক্ষিণ বাটামারা গ্রামসংলগ্ন মেঘনার তীর সংরক্ষণ বাঁধে এই ভাঙন পরিস্থিতি চলছে। ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বাবুল আখতার জানান, বাঁধ মেরামতের সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে পানি একটু কমলে কাজে আর ব্যাঘাত ঘটবে না।

ঝালকাঠি : উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের বন্যার পানি নামতে থাকা এবং জোয়ারের প্রভাবে ঝালকাঠিতে সুগন্ধা, বিষখালী ও ভাসণ্ডা নদীর পানি গতকালও বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পানি ঢুকে পড়েছে শহরের অলিগলিতেও। এতে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। তলিয়ে গেছে নিচু এলাকার বসতঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ফসলের ক্ষেত। অন্যদিকে কাঁঠালিয়ার আমুয়া এবং নলছিটি উপজেলার ষাটপাকিয়া ফেরিঘাটের গ্যাংওয়ে ডুবে থাকায় বামনা-পাথরঘাটা-কাঁঠালিয়া এবং ঝালকাঠি-নলছিটি রুটে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

বাগেরহাট : বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার বড়বাড়িয়া ইউনিয়নের পরানপুর গ্রাম লাগোয়া মধুমতী নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। প্রতি মুহূর্তে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি। গত এক সপ্তাহে অন্তত ২৫টি বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। প্রায় ৫০ বিঘা জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। অন্তত পাঁচ শতাধিক পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। নদী ভাঙনে সর্বস্ব হারানো বিধবা শরীফা বেগম বলেন, ‘মা-বাবা, দাদির কবরসহ ৫০টি কবর ও দামি দামি গাছপালা এবং জায়গাজমি সব হারিয়েছি ভাঙনে। বর্তমানে অন্যের বাড়ি থাকি। আমাকে কেউ দেখার নেই।’ চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনোয়ার পারভেজ জানিয়েছেন, নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

চাঁদপুর : চাঁদপুরে বন্যার পানি সরে যাচ্ছে। তবে স্রোত বেশি থাকায় মেঘনার পশ্চিম পাড়ের চরাঞ্চলে ভাঙন অব্যাহত আছে। অন্যদিকে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের মোহনপুরে বেড়িবাঁধের ১০ মিটার এলাকায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে তা ঝুঁকিমুক্ত ঘোষণা করেছে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। চাঁদপুরে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আতাউর রহমান জানান, আগামী দিনগুলোতে ভারি বৃষ্টিপাত না হলে চাঁদপুরে মেঘনার পানি দ্রুত কমে যাবে।

শরীয়তপুর : শরীয়তপুরে পানি কমতে শুরু করলেও পদ্মার পানি গতকালও বিপত্সীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বাড়িঘরে পানি থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে বন্যা ও ভাঙনকবলিত গ্রামের মানুষ। বন্যায় শরীয়তপুরের ৩০টি ইউনিয়নের ১০০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে।

মাদারীপুর : জেলার শিবচর উপজেলায় বন্যার পানি কমলেও নদীভাঙন বেড়েছে। পদ্মার পানি গতকাল মাদারীপুরের শিবচরে বিপত্সীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পানি কমলেও গত পাঁচ দিনে পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদের তীরে ভাঙন বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে চার শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ফরিদপুর : ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার নাসিরাবাদ ইউনিয়নের দরগাবাজার এলাকায় আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। গতকাল ভোরে বাজারের পূর্ব পাশের মোড় এলাকায় ১০০ মিটার অংশ নদের গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এ সময় একটি দোকানও নদের গর্ভে চলে গেছে। বাজার এলাকার বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম জানান, গতকাল ভোর ৪টার দিকে ওই অংশে নতুন করে ভাঙন শুরু হয়। মাত্র আধাঘণ্টার মধ্যে ১০০ মিটার অংশ বিলীন হয়ে যায়।

জামালপুর : জেলার ইসলামপুর উপজেলার গাইবান্ধা ইউনিয়নের ঢেংগুরচর গ্রামে বন্যার পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান আনছারী জানান, গ্রামের কালামের ছেলে হৃদয় (৮) গতকাল বিকেলে বাড়ির পাশে বন্যার পানিতে ডুরে মারা যায়।

কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামে বন্যার পানি কমতে থাকায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো উন্নতি হয়েছে। তবে চিলমারী ও উলিপুরের চারটি ইউনিয়নের প্রায় ৩০টি গ্রাম এখনো নিমজ্জিত। বন্যার পানিতে ডুবে গতকাল আরো দুজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলো উলিপুর উপজেলার বামনাছড়া গ্রামের লামাইয়া (১০) ও চাঁদনী বজরা গ্রামের লাবণী (২)।

রৌমারী (কুড়িগ্রাম) : রৌমারী উপজেলার ইছাকুড়ি গ্রামে বন্যার পানিতে ডুবে ফারিয়া আক্তার নামের আড়াই বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রবিবার বাড়ির পাশে খেলতে গিয়ে বন্যার পানিতে পড়ে যায় সে।

শেরপুর : শেরপুরে বন্যার পানিতে জাগ দেওয়া পাট ধুতে গিয়ে স্রোতের টানে পানিতে ডুবে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকাল ৭টার দিকে শেরপুর সদর উপজেলার কামারের চর বাজারসংলগ্ন শুক্রামদি বিলে এ ঘটনা ঘটে। মারা যাওয়া কৃষক ওসমান মিয়া (৫০) চরমুচারিয়া ইউনিয়নের চরবাবনা গ্রামের রজব আলীর ছেলে। অন্যদিকে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কমে যাওয়ায় সদর উপজেলার চরাঞ্চলের ছয় ইউনিয়নের বন্যাকবলিত ৪০ গ্রামের পানি নামতে শুরু করেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

সৌদির কনসার্টে গাইবেন পড়শী আসছে নতুন গান

ছয় জেলায় তীব্র নদীভাঙন বিলীন বেড়িবাঁধ, ঘরবাড়ি

আপডেট টাইম : ১২:৩২:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ অগাস্ট ২০১৬

ভোলা, চাঁদপুর, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, ফরিদপুর ও বাগেরহাটে নদীভাঙন তীব্র হয়েছে। ভোলায় দুই দিন ধরে মেঘনার তীর সংরক্ষণ বাঁধের দুই কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন চলছে। বাগেরহাটে এক সপ্তাহে ৫০০ বসতবাড়ি মধুমতী নদীতে বিলীন হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল রবিবার এক দিনেই নদীগর্ভে গেছে ২৪টি বসতবাড়ি ও একটি কবরস্থান। জোয়ারের প্রভাবে সুগন্ধা, বিষখালী ও ভাসণ্ডা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গতকাল ঝালকাঠি সদরের অলিগলিতেও পানি ঢুকে পড়েছে। উত্তরাঞ্চলে বন্যার পানি কমা অব্যাহত রয়েছে। তবে গতকালও উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোয় অসংখ্য গ্রাম পানিতে নিমজ্জিত ছিল। বন্যার পানিতে ডুবে গতকাল কুড়িগ্রাম, জামালপুর ও শেরপুরে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বন্যায় মৃতের সংখ্যা ৭০ জন ছাড়িয়ে গেছে।

ভোলা : ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে মেঘনা তীর সংরক্ষণ বাঁধের আড়াই কিলোমিটার এলাকায় ফের ধস দেখা দিয়েছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার এক কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। তিন কিলোমিটার ভাঙা বাঁধ মেরামতের কাজ করতে স্রোতের সঙ্গে সমানতালে যুদ্ধ করছে শ্রমিকরা। পাউবোর জরুরি কাজের আওতায় দিন-রাত প্রায় অর্ধশত শ্রমিক মেরামতকাজ করছে। প্রবল বেগে জোয়ারের পানি সদ্য মেরামত করা বাঁধের ওপর আছড়ে পড়ায় অনেক জায়গা ফের ধসে পড়েছে। প্রমত্তা মেঘনার করাল গ্রাসে গত তিন-চার দিনে উপজেলার বড়মানিকা

ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডসংলগ্ন দক্ষিণ বাটামারা গ্রামসংলগ্ন মেঘনার তীর সংরক্ষণ বাঁধে এই ভাঙন পরিস্থিতি চলছে। ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বাবুল আখতার জানান, বাঁধ মেরামতের সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে পানি একটু কমলে কাজে আর ব্যাঘাত ঘটবে না।

ঝালকাঠি : উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের বন্যার পানি নামতে থাকা এবং জোয়ারের প্রভাবে ঝালকাঠিতে সুগন্ধা, বিষখালী ও ভাসণ্ডা নদীর পানি গতকালও বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পানি ঢুকে পড়েছে শহরের অলিগলিতেও। এতে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। তলিয়ে গেছে নিচু এলাকার বসতঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ফসলের ক্ষেত। অন্যদিকে কাঁঠালিয়ার আমুয়া এবং নলছিটি উপজেলার ষাটপাকিয়া ফেরিঘাটের গ্যাংওয়ে ডুবে থাকায় বামনা-পাথরঘাটা-কাঁঠালিয়া এবং ঝালকাঠি-নলছিটি রুটে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

বাগেরহাট : বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার বড়বাড়িয়া ইউনিয়নের পরানপুর গ্রাম লাগোয়া মধুমতী নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। প্রতি মুহূর্তে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি। গত এক সপ্তাহে অন্তত ২৫টি বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। প্রায় ৫০ বিঘা জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। অন্তত পাঁচ শতাধিক পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। নদী ভাঙনে সর্বস্ব হারানো বিধবা শরীফা বেগম বলেন, ‘মা-বাবা, দাদির কবরসহ ৫০টি কবর ও দামি দামি গাছপালা এবং জায়গাজমি সব হারিয়েছি ভাঙনে। বর্তমানে অন্যের বাড়ি থাকি। আমাকে কেউ দেখার নেই।’ চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনোয়ার পারভেজ জানিয়েছেন, নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

চাঁদপুর : চাঁদপুরে বন্যার পানি সরে যাচ্ছে। তবে স্রোত বেশি থাকায় মেঘনার পশ্চিম পাড়ের চরাঞ্চলে ভাঙন অব্যাহত আছে। অন্যদিকে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের মোহনপুরে বেড়িবাঁধের ১০ মিটার এলাকায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে তা ঝুঁকিমুক্ত ঘোষণা করেছে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। চাঁদপুরে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আতাউর রহমান জানান, আগামী দিনগুলোতে ভারি বৃষ্টিপাত না হলে চাঁদপুরে মেঘনার পানি দ্রুত কমে যাবে।

শরীয়তপুর : শরীয়তপুরে পানি কমতে শুরু করলেও পদ্মার পানি গতকালও বিপত্সীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বাড়িঘরে পানি থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে বন্যা ও ভাঙনকবলিত গ্রামের মানুষ। বন্যায় শরীয়তপুরের ৩০টি ইউনিয়নের ১০০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে।

মাদারীপুর : জেলার শিবচর উপজেলায় বন্যার পানি কমলেও নদীভাঙন বেড়েছে। পদ্মার পানি গতকাল মাদারীপুরের শিবচরে বিপত্সীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পানি কমলেও গত পাঁচ দিনে পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদের তীরে ভাঙন বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে চার শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ফরিদপুর : ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার নাসিরাবাদ ইউনিয়নের দরগাবাজার এলাকায় আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। গতকাল ভোরে বাজারের পূর্ব পাশের মোড় এলাকায় ১০০ মিটার অংশ নদের গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এ সময় একটি দোকানও নদের গর্ভে চলে গেছে। বাজার এলাকার বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম জানান, গতকাল ভোর ৪টার দিকে ওই অংশে নতুন করে ভাঙন শুরু হয়। মাত্র আধাঘণ্টার মধ্যে ১০০ মিটার অংশ বিলীন হয়ে যায়।

জামালপুর : জেলার ইসলামপুর উপজেলার গাইবান্ধা ইউনিয়নের ঢেংগুরচর গ্রামে বন্যার পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান আনছারী জানান, গ্রামের কালামের ছেলে হৃদয় (৮) গতকাল বিকেলে বাড়ির পাশে বন্যার পানিতে ডুরে মারা যায়।

কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামে বন্যার পানি কমতে থাকায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো উন্নতি হয়েছে। তবে চিলমারী ও উলিপুরের চারটি ইউনিয়নের প্রায় ৩০টি গ্রাম এখনো নিমজ্জিত। বন্যার পানিতে ডুবে গতকাল আরো দুজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলো উলিপুর উপজেলার বামনাছড়া গ্রামের লামাইয়া (১০) ও চাঁদনী বজরা গ্রামের লাবণী (২)।

রৌমারী (কুড়িগ্রাম) : রৌমারী উপজেলার ইছাকুড়ি গ্রামে বন্যার পানিতে ডুবে ফারিয়া আক্তার নামের আড়াই বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রবিবার বাড়ির পাশে খেলতে গিয়ে বন্যার পানিতে পড়ে যায় সে।

শেরপুর : শেরপুরে বন্যার পানিতে জাগ দেওয়া পাট ধুতে গিয়ে স্রোতের টানে পানিতে ডুবে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকাল ৭টার দিকে শেরপুর সদর উপজেলার কামারের চর বাজারসংলগ্ন শুক্রামদি বিলে এ ঘটনা ঘটে। মারা যাওয়া কৃষক ওসমান মিয়া (৫০) চরমুচারিয়া ইউনিয়নের চরবাবনা গ্রামের রজব আলীর ছেলে। অন্যদিকে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কমে যাওয়ায় সদর উপজেলার চরাঞ্চলের ছয় ইউনিয়নের বন্যাকবলিত ৪০ গ্রামের পানি নামতে শুরু করেছে।