পরিবারতন্ত্রকে প্রাধান্য দিয়ে বিএনপির কমিটি

দলের ৬ষ্ঠ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হওয়ার সাড়ে চার মাস পর বিগত দিনের কমিটির চেয়ে অপেক্ষাকৃত বড় কমিটি ঘোষণা করেছে বিএনপি। শনিবার (৬ আগস্ট) দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অনুমোদিত বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেছেন। কিন্তু সেই কমিটি গঠনের পর থেকেই শুরু হয়েছে কমিটিতে ‘চেইন অব কমান্ড’ না থাকার অভিযোগ।

বিএনপির কমিটিতে পরিবারতন্ত্রকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে বলেও তৃণমূল পর্যায় থেকে অভিযোগ উঠেছে। তাদের অভিযোগ কমিটি গঠনের সময় পদের ক্ষেত্রে যেভাবে পারিবারিক নেতৃত্বকে রাজনীতিতে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে তার ফল খুব একটা শুভ হবে না। এমনকি কমিটিতে বাবা ও মেয়ে দুই জনকেই চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্ঠা হিসেবে রাখা হয়েছে। তাই পারিবারিকতন্ত্রে যে বা যারা দলের পদ পেয়েছেন তারা রাজনীতি নয়, বিভিন্ন পেশায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এবং করছেন। কাজেই রাজনীতির লেবাস পড়ে দলের জন্য কি ভূমিকা রাখবেন তা সময়েই বলে দেবে।

তবে এসব মানতে নারাজ, স্থায়ী কমিটির নতুন সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আর দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার দায়ীত্ব পাওয়া সাবেক বাম নেতা আতাউর রহমান ঢালী বলেন, সরকার বিরোধী আন্দোলনে গতি আনবে এ কমিটি।

কাউন্সিলের সাড়ে চার মাস পর ঘোষণা এলো বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি। ৫০২ সদস্যের এ জাতীয় নির্বাহী কমিটিকে দেখা হচ্ছে, দলটির রাজনৈতিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হিসেবে। যেখানে ১১৩ জন মুখই নতুন। ঠাঁই পেয়েছেন সিনিয়র নেতাদের স্ত্রী, পুত্র ও কণ্যারাও। মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস, খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ছেলে মারুফ হোসেন, তরিকুল পুত্র অনিন্দ্য ইসলাম, গয়েশ্বর কন্যা অপর্ণা রায়ের মত অনেকেই রয়েছেন এ তালিকায়। বিতর্ক আছে মানবতা বিরোধী অরপরাধে সাজা পাওয়া সাকা পুত্র হুম্মাম কাদের চৌধুরী, এবং আব্দুল আলীমের ছেলে ফয়সাল আলীমের পদ নিয়েও।

ত্যাগী ও মাঠের নেতাদের মূল্যায়ন করার কথা বলা হলেও, চমকহীন এ কমিটিতে প্রাধান্যে সেই পুরানো মুখগুলোই। আর এ দলে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। অভিযোগ আছে নেতৃত্বের জ্যেষ্ঠতার ক্রম না মানারও। এ নিয়ে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির নতুন মুখ আমীর খসুর মাহমুদ চৌধুরী বলেন, একটি কমিটিতে সব নেতাকে সমান মূল্যায়নের সুযোগ নেই। তারপরও শিগগিরই উদ্যোগ নেয়া হবে অসন্তোষ দূর করার।

ঘোষিত কমিটিকে নিয়ে সময়পযোগী কর্মসূচির মাধ্যমে দেশের জনগণের কাছে যাওয়া সম্ভব বলে বিশ্বাস নতুন দায়িত্ব পাওয়া নেতাদের। আর এর মাধ্যমেই উদ্ধার হবে দেশের গণতন্ত্র এমটাই মনে করেন তারা। পদবঞ্চিত নেতাদের দলে ভেড়ানোর জন্য বিকল্প অনেক কমিট নিয়ে এরই মধ্যে কাজ চলছে বলেও জানা গেছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর