ঢাকা ০৬:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নির্যাতনের শিকার নারীর তাৎক্ষণিক সহায়তায় চালু হচ্ছে জয় মোবাইল অ্যাপস

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:০০:৪৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৮ অগাস্ট ২০১৬
  • ৩৮১ বার

নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুদের তাৎক্ষণিক সহায়তায় সরকার চালু করতে যাচ্ছে জয় মোবাইল অ্যাপস। এই অ্যাপসের মাধ্যমে নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশু এবং তাদের পরিবার তাৎক্ষণিক সহায়তার জন্য ‘জরুরি অবস্থা’ লিখিত আইকন স্পর্শ করলেই বার্তা পৌঁছে যাবে ন্যাশনাল হেল্পলাইন সেন্টার (১০৯২১), পুলিশ কন্ট্রোল রুম, নিকটবর্তী থানা এবং তিনটি এফএনএফ নাম্বারে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ অ্যাপটি উদ্বোধন করবেন বলে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। আগামীকাল বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানেও এই অ্যাপটি উদ্বোধন করা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো আশা প্রকাশ করেছে।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তরের নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক ড. আবুল হোসেন জানান, Google play store অথবা www.mspvaw.gov.bd, www.nhc.gov.bd, www.mowca.gov.bd এবং www.a2i.pmo.gov.bd হতে জয় মোবাইল অ্যাপটি ডাউনলোড করে ইনস্টল করা যাবে।
এই অ্যাপটি ইনস্টল করা থাকলে সহিংসতার শিকার কোন নারী অথবা শিশু বা তার পরিবার মোবাইল আ্যাপসের ‘জরুরী অবস্থা’ লিখিত আইকন স্পর্শ করবেন। যদি সহিংসতার শিকার ব্যক্তি সংকটপূর্ণ অবস্থায় ‘জরুরী অবস্থা’ লিখিত আইকনটি ক্লিক করতে নাও পারেন, মোবাইলের পাওয়ার বাটনে পরপর ৪ বার প্রেস করার পর ভাইব্রেট হবে এবং পঞ্চমবার প্রেস করার পর সহায়তার জন্য একটি বিশেষ বার্তা বিপদকালীন সংরক্ষিত নম্বরে চলে যাবে।
এই অ্যাপসটির বিশেষ সুবিধা হলো এসএমএস বার্তায় জিপিএস লোকেশনও চলে যাবে। যাতে করে পুলিশ ও তার পরিবারের সদস্যরা সহায়তার জন্য যথাস্থানে চলে আসতে পারেন। এর মাধ্যমে মোবাইলের উভয় দিকের ক্যামেরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়ে নির্দিষ্ট সময় পর পর ছবি তুলবে এবং কথোপকথন সংরক্ষণ করবে। ব্যবহারকারী অনলাইনে থাকলে সংরক্ষিত তথ্যসমূহ স্বয়ংক্রিয়ভাবে অ্যাপস-এ নির্ধারিত সার্ভারে পেীঁছে যাবে। এসব তথ্যের ক্ষেত্রে সর্ব্বোচ্চ গোপনীয়তা রক্ষা করারও ব্যবস্থা আছে। সংরক্ষিত তথ্য শুধুমাত্র আদালতের নির্দেশনায় প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।
বাসস’র সাথে আলাপকালে ড. আবুল হোসেন বলেন, বিনামূল্যে এই অ্যাপসটি চালুর জন্য দেশের মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলোকে বলা হয়েছে। তাদের প্রস্তুতিও প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। অ্যাপসটি চালু হলে দেশে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সহজ হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই অ্যাপসের মাধ্যমে নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে নারীর বিজয় নিশ্চিত হবে বলেই এই অ্যাপসের নাম ‘জয় অ্যাপস’ রাখা হয়েছে।
মোবাইল ব্যবহারকারীরা সবাই মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার না করলেও যাতে এই সুবিধা পেতে পারেন সেজন্য আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই এই অ্যাপসটিকে আরো আধুনিক করে অফলাইনেও যাতে এ সুবিধা পাওয়া যায় সে ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে বলে জানান আবুল হোসেন। তবে এ্যানড্রয়েড ফোন সবার ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনার জন্য মোবাইল কোম্পানীগুলোকে যথাসম্ভব কম দামে এ্যানড্রয়েড মোবাইল বাজারে আনার পরামর্শ দেয়া হবে বলেও জানান তিনি। এছাড়াও মোবাইল কোম্পানীগুলো যাতে ভবিষ্যতে জয় অ্যাপসসহ মোবাইল তৈরি করে সেজন্যও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে আলোচনা হচ্ছে। আপাতত: ওয়ালটনকে এ প্রস্তাব দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও প্রকল্প পরিচালক জানান।
এই অ্যাপটির ধারনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নারী নির্যাতন প্রতিরোধে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয়ার পাশাপাশি অধিদপ্তর একটি স্মার্ট অ্যাপসের কথা ভাবছিলো। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্পের সাথে আলোচনা করা হলে তারা বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেন। বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে প্রায় এক বছরের মাথায় এসে এই অ্যাপসটি চালু হতে যাচ্ছে।
আবুল হোসেন বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে যশোর, কেরাণীগঞ্জ এবং টঙ্গীতে পরীক্ষামূলকভাবে এই অ্যাপস চালু করা হবে। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে সারাদেশে এটি ছড়িয়ে দেয়া হবে। – বাসস।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

নির্যাতনের শিকার নারীর তাৎক্ষণিক সহায়তায় চালু হচ্ছে জয় মোবাইল অ্যাপস

আপডেট টাইম : ০১:০০:৪৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৮ অগাস্ট ২০১৬

নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুদের তাৎক্ষণিক সহায়তায় সরকার চালু করতে যাচ্ছে জয় মোবাইল অ্যাপস। এই অ্যাপসের মাধ্যমে নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশু এবং তাদের পরিবার তাৎক্ষণিক সহায়তার জন্য ‘জরুরি অবস্থা’ লিখিত আইকন স্পর্শ করলেই বার্তা পৌঁছে যাবে ন্যাশনাল হেল্পলাইন সেন্টার (১০৯২১), পুলিশ কন্ট্রোল রুম, নিকটবর্তী থানা এবং তিনটি এফএনএফ নাম্বারে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ অ্যাপটি উদ্বোধন করবেন বলে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। আগামীকাল বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানেও এই অ্যাপটি উদ্বোধন করা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো আশা প্রকাশ করেছে।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তরের নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক ড. আবুল হোসেন জানান, Google play store অথবা www.mspvaw.gov.bd, www.nhc.gov.bd, www.mowca.gov.bd এবং www.a2i.pmo.gov.bd হতে জয় মোবাইল অ্যাপটি ডাউনলোড করে ইনস্টল করা যাবে।
এই অ্যাপটি ইনস্টল করা থাকলে সহিংসতার শিকার কোন নারী অথবা শিশু বা তার পরিবার মোবাইল আ্যাপসের ‘জরুরী অবস্থা’ লিখিত আইকন স্পর্শ করবেন। যদি সহিংসতার শিকার ব্যক্তি সংকটপূর্ণ অবস্থায় ‘জরুরী অবস্থা’ লিখিত আইকনটি ক্লিক করতে নাও পারেন, মোবাইলের পাওয়ার বাটনে পরপর ৪ বার প্রেস করার পর ভাইব্রেট হবে এবং পঞ্চমবার প্রেস করার পর সহায়তার জন্য একটি বিশেষ বার্তা বিপদকালীন সংরক্ষিত নম্বরে চলে যাবে।
এই অ্যাপসটির বিশেষ সুবিধা হলো এসএমএস বার্তায় জিপিএস লোকেশনও চলে যাবে। যাতে করে পুলিশ ও তার পরিবারের সদস্যরা সহায়তার জন্য যথাস্থানে চলে আসতে পারেন। এর মাধ্যমে মোবাইলের উভয় দিকের ক্যামেরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়ে নির্দিষ্ট সময় পর পর ছবি তুলবে এবং কথোপকথন সংরক্ষণ করবে। ব্যবহারকারী অনলাইনে থাকলে সংরক্ষিত তথ্যসমূহ স্বয়ংক্রিয়ভাবে অ্যাপস-এ নির্ধারিত সার্ভারে পেীঁছে যাবে। এসব তথ্যের ক্ষেত্রে সর্ব্বোচ্চ গোপনীয়তা রক্ষা করারও ব্যবস্থা আছে। সংরক্ষিত তথ্য শুধুমাত্র আদালতের নির্দেশনায় প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।
বাসস’র সাথে আলাপকালে ড. আবুল হোসেন বলেন, বিনামূল্যে এই অ্যাপসটি চালুর জন্য দেশের মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলোকে বলা হয়েছে। তাদের প্রস্তুতিও প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। অ্যাপসটি চালু হলে দেশে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সহজ হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই অ্যাপসের মাধ্যমে নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে নারীর বিজয় নিশ্চিত হবে বলেই এই অ্যাপসের নাম ‘জয় অ্যাপস’ রাখা হয়েছে।
মোবাইল ব্যবহারকারীরা সবাই মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার না করলেও যাতে এই সুবিধা পেতে পারেন সেজন্য আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই এই অ্যাপসটিকে আরো আধুনিক করে অফলাইনেও যাতে এ সুবিধা পাওয়া যায় সে ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে বলে জানান আবুল হোসেন। তবে এ্যানড্রয়েড ফোন সবার ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনার জন্য মোবাইল কোম্পানীগুলোকে যথাসম্ভব কম দামে এ্যানড্রয়েড মোবাইল বাজারে আনার পরামর্শ দেয়া হবে বলেও জানান তিনি। এছাড়াও মোবাইল কোম্পানীগুলো যাতে ভবিষ্যতে জয় অ্যাপসসহ মোবাইল তৈরি করে সেজন্যও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে আলোচনা হচ্ছে। আপাতত: ওয়ালটনকে এ প্রস্তাব দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও প্রকল্প পরিচালক জানান।
এই অ্যাপটির ধারনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নারী নির্যাতন প্রতিরোধে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয়ার পাশাপাশি অধিদপ্তর একটি স্মার্ট অ্যাপসের কথা ভাবছিলো। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্পের সাথে আলোচনা করা হলে তারা বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেন। বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে প্রায় এক বছরের মাথায় এসে এই অ্যাপসটি চালু হতে যাচ্ছে।
আবুল হোসেন বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে যশোর, কেরাণীগঞ্জ এবং টঙ্গীতে পরীক্ষামূলকভাবে এই অ্যাপস চালু করা হবে। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে সারাদেশে এটি ছড়িয়ে দেয়া হবে। – বাসস।