ঢাকা ০৭:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ক্যান্সার নিরোধী উদ্ভিদের চাষ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৪২:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ অগাস্ট ২০১৬
  • ৩৬৩ বার

মরণব্যাধী ক্যান্সার প্রতিরোধে ভেষজ গুণ সমৃদ্ধ উদ্ভিদের চাষ হচ্ছে বাংলাদেশে।

বরিশালের গৌরনদী পৌরসভার উত্তর পালরদী এলাকায় রুকোলা নামের এই উদ্ভিদের চাষ করছেন ভেষজ গবেষক মো. আহছান উল্লাহ।

বাংলাদেশের আবহাওয়ায় তিনিই প্রথম রুকোলার চাষ শুরু করেন।

আহছান উল্লাহ ইতিমধ্যে রুকোলার পাতা দিয়ে বিকল্প চা এবং ডায়াবেটিকের জন্য একটি এনপি নাইন নামে প্রাকৃতিক খাবার তৈরি করেছেন, যা বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাতে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

আহছান উল্লাহ জানান, ২০০৬ সালে ইতালি থেকে ঘনিষ্ঠজন মোহাম্মদ খোকন মেজর ও ফুয়াদ হোসেনের মাধ্যমে তিনি রুকোলার বীজ সংগ্রহ করে গবেষণা শুরু করেন।

তিনি জানান, রুকোলা শীতকালীন উদ্ভিদ। দেশে ১২ মাসও চাষ করা সম্ভব। তবে বর্ষা মৌসুমে একটু ভিন্ন প্রক্রিয়ায় চাষ করতে হয়।

রুকোলাকে অপার সম্ভাবনাময় কৃষিপণ্য উল্লেখ করে আহছান উল্লাহ বলেন, এর বীজ দিয়ে ভোজ্যতেল বানানো যায়, যা মানবদেহের বিশেষ উপকারী। এছাড়া ফুলে মধুও হয়।

রুকোলা মূলত সরিষা পরিবারের (Brassicaceae) একটি বর্ষজীবী, দুর্বলকাণ্ড ও সবুজ পাতাবিশিষ্ট উদ্ভিদ, যার বৈজ্ঞানিক নাম Eruca sativa। বীজই হচ্ছে এটির বংশ বিস্তারের একমাত্র মাধ্যম।

বীজ বপনের একমাস পরেই পাতা সংগ্রহ করা হয়। রুকোলার পাতা রসালো, লম্বাটে ও খাঁজযুক্ত। শিকড় ছাড়া এ উদ্ভিদের সব অংশই যেমন- পাতা, ফুল ও বীজ খাবার উপযোগী। তবে পাতাই খাদ্য হিসেবে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়।

রুকোলার সবুজ সতেজ পাতা সরাসরি কাঁচা খাওয়া যায়। এ থেকে হালকা ঝাল, ভাজা চিনা বাদামের স্বাদ ও গন্ধ আসে।

উদ্ভিদটির এমন কিছু রাসায়নিক উপাদান রয়েছে, যা মানব শরীরে যে কোনো ক্যান্সার প্রতিরোধে সফলভাবে কাজ করে।

চিকিৎসকদের মতে, ইতালিসহ ইউরোপের অনেক দেশের চিকিৎসকরা ক্যান্সার ও ডায়াবেটিকস রোগীদের প্রচুর পরিমাণে কাঁচা রুকোলা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

রুকোলার উৎপত্তি স্থান হচ্ছে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল। ইতালিতে রোমানদের সময় থেকে রুকোলার চাষ হয়ে আসছে। এজন্য ধারণা করা হয়, ইতালিই রুকোলার উৎপত্তি স্থান।

ইতালি থেকেই পরে বিভিন্ন দেশে এর বিস্তার লাভ করে। ভারত এবং থাইল্যান্ডে রুকোলা আরগুলা নামে পরিচিত।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ক্যান্সার নিরোধী উদ্ভিদের চাষ

আপডেট টাইম : ১১:৪২:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ অগাস্ট ২০১৬

মরণব্যাধী ক্যান্সার প্রতিরোধে ভেষজ গুণ সমৃদ্ধ উদ্ভিদের চাষ হচ্ছে বাংলাদেশে।

বরিশালের গৌরনদী পৌরসভার উত্তর পালরদী এলাকায় রুকোলা নামের এই উদ্ভিদের চাষ করছেন ভেষজ গবেষক মো. আহছান উল্লাহ।

বাংলাদেশের আবহাওয়ায় তিনিই প্রথম রুকোলার চাষ শুরু করেন।

আহছান উল্লাহ ইতিমধ্যে রুকোলার পাতা দিয়ে বিকল্প চা এবং ডায়াবেটিকের জন্য একটি এনপি নাইন নামে প্রাকৃতিক খাবার তৈরি করেছেন, যা বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাতে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

আহছান উল্লাহ জানান, ২০০৬ সালে ইতালি থেকে ঘনিষ্ঠজন মোহাম্মদ খোকন মেজর ও ফুয়াদ হোসেনের মাধ্যমে তিনি রুকোলার বীজ সংগ্রহ করে গবেষণা শুরু করেন।

তিনি জানান, রুকোলা শীতকালীন উদ্ভিদ। দেশে ১২ মাসও চাষ করা সম্ভব। তবে বর্ষা মৌসুমে একটু ভিন্ন প্রক্রিয়ায় চাষ করতে হয়।

রুকোলাকে অপার সম্ভাবনাময় কৃষিপণ্য উল্লেখ করে আহছান উল্লাহ বলেন, এর বীজ দিয়ে ভোজ্যতেল বানানো যায়, যা মানবদেহের বিশেষ উপকারী। এছাড়া ফুলে মধুও হয়।

রুকোলা মূলত সরিষা পরিবারের (Brassicaceae) একটি বর্ষজীবী, দুর্বলকাণ্ড ও সবুজ পাতাবিশিষ্ট উদ্ভিদ, যার বৈজ্ঞানিক নাম Eruca sativa। বীজই হচ্ছে এটির বংশ বিস্তারের একমাত্র মাধ্যম।

বীজ বপনের একমাস পরেই পাতা সংগ্রহ করা হয়। রুকোলার পাতা রসালো, লম্বাটে ও খাঁজযুক্ত। শিকড় ছাড়া এ উদ্ভিদের সব অংশই যেমন- পাতা, ফুল ও বীজ খাবার উপযোগী। তবে পাতাই খাদ্য হিসেবে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়।

রুকোলার সবুজ সতেজ পাতা সরাসরি কাঁচা খাওয়া যায়। এ থেকে হালকা ঝাল, ভাজা চিনা বাদামের স্বাদ ও গন্ধ আসে।

উদ্ভিদটির এমন কিছু রাসায়নিক উপাদান রয়েছে, যা মানব শরীরে যে কোনো ক্যান্সার প্রতিরোধে সফলভাবে কাজ করে।

চিকিৎসকদের মতে, ইতালিসহ ইউরোপের অনেক দেশের চিকিৎসকরা ক্যান্সার ও ডায়াবেটিকস রোগীদের প্রচুর পরিমাণে কাঁচা রুকোলা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

রুকোলার উৎপত্তি স্থান হচ্ছে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল। ইতালিতে রোমানদের সময় থেকে রুকোলার চাষ হয়ে আসছে। এজন্য ধারণা করা হয়, ইতালিই রুকোলার উৎপত্তি স্থান।

ইতালি থেকেই পরে বিভিন্ন দেশে এর বিস্তার লাভ করে। ভারত এবং থাইল্যান্ডে রুকোলা আরগুলা নামে পরিচিত।