ঢাকা ১০:৫৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শাপলা বিক্রি করে চলছে শতাধিক পরিবার

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১৯:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ অগাস্ট ২০১৬
  • ৩৪৫ বার

জাতীয় ফুল শাপলা এখন জনপ্রিয় সবজিতে পরিণত হয়েছে। সাধারণ মানুষ সেই শাপলা এখন মজাদার তরকারি হিসেবে খাচ্ছে। অন্যদিকে শাপলা ফুল বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান, লৌহজং ও শ্রীনগর উপজেলার শতাধিক পরিবার।

চার থেকে পাঁচ মাস কৃষিজমি পানির নিচে থাকায় কৃষকের হাতে কোনো কাজ থাকে না। তাই তারা এসময় এলাকার খাল-বিল থেকে শাপলা সংগ্রহ করে জীবন চালায়।

এদিকে বর্ষার এই মৌসুমে জেলার বিভিন্ন জায়গায় শাপলার যেমন হাট বসছে, তেমনি বাড়ি বাড়ি ফেরি করেও বিক্রি করা হচ্ছে শাপলা।

তেমন কোনো পুঁজির প্রয়োজন না হওয়ায় বিভিন্ন বয়সের লোক এ পেশায় অংশ নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে।

লতব্দী ইউনিয়নের চর নিমতলার বিল থেকে শাপলা সংগ্রহকারী মো. মিজান জানান, একেকজন কমপক্ষে ৪০ থেকে ৫০ মুঠো শাপলা সংগ্রহ করতে পারে। পাইকাররা সংগ্রহকারীর কাছ থেকে এসব শাপলা সংগ্রহ করে একত্রিত করে।

সিরাজদীখানের রসুনিয়া, ইমামগঞ্জ তালতলায়, হাসাড়া, ছনবাড়ীর মোড় ও আড়িয়াল বিলের পাশে শাপলার পাইকারি বাজার রয়েছে। পাইকাররা এখান থেকে শাপলা ক্রয় করে ঢাকার যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন পাইকারি বাজারে বিক্রি করেন।

ঢাকার পাইকার ছহির মিঞা জানান, শাপলা সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে এক মুঠো ২০ টাকায় ক্রয় করা হয়। গাড়ি ভাড়া গড়ে তিন টাকা, লেবার এক টাকা, আড়ত খরচ দুই টাকাসহ মোট ২৭ থেকে ২৮ টাকা খরচ পড়ে। সেই শাপলার মুঠো যাত্রাবাড়ী আড়তে বিক্রি হয় ৫০/৬০ টাকায়।

সূত্র মতে, বর্ষায় ডুবে যাওয়া ধান, পাট ও ধঞ্চে ক্ষেতে শাপলা বেশি জন্মায়। এছাড়া জেলার খাল-বিলেও শাপলা ফুল ফোটে। আষাঢ় থেকে শুরু করে ভাদ্র মাস পর্যন্ত পাওয়া যায় দেশের জাতীয় ফুল শাপলা।

শাপলা সংগ্রহকারীরা ভোরে নৌকা নিয়ে ডুবে যাওয়া জমিতে ও বিলের মধ্যে ঘুরে ঘুরে শাপলা তোলেন।

কয়েকজন শাপলা সংগ্রহকারী জানান, একেকজন কমপক্ষে ৪০ থেকে সর্বোচ্চ ৭০ মুঠো (৭০-৮০ পিসে ১ মুঠো) সংগ্রহ করতে পারে। পাইকাররা এসব শাপলা সংগ্রহকারীর কাছ থেকে সংগ্রহ করে একত্রে করেন। দিন শেষে ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা আয় করেন। বছরে তারা চার মাস এ কাজ করেন।

উপজেলার রসুনিয়া গ্রামের পাইকার সিরাজ মিয়া জানান, শাপলা সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে প্রতিদিন প্রায় দেড় হাজার থেকে দুই হাজার মুঠো শাপলা ক্রয় করেন। সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে এক মুঠো শাপলা ২০-৩০ টাকায় কেনেন তিনি।

এই বিষয়ে জেলার কৃষি কর্মকর্তা জানান, শাপলা আসলে কোনো কৃষিপণ্যের আওয়াতাভুক্ত নয়। এটি প্রাকৃতিকভাবে কৃষিজমি, পুকুর কিংবা ডোবায় জন্ম নেয়। এই বিষয়ে আমাদের কোনো পরামর্শ দেয়ার সুযোগ হয়ে উঠে না। তবে আমরা চেষ্টা করি কৃষকদের সহায়তা করার। এছাড়া আমরা কৃষকদের শাপলা বেশিদিন সংরক্ষণ করার পরামর্শ দিয়ে থাকি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

শাপলা বিক্রি করে চলছে শতাধিক পরিবার

আপডেট টাইম : ১২:১৯:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ অগাস্ট ২০১৬

জাতীয় ফুল শাপলা এখন জনপ্রিয় সবজিতে পরিণত হয়েছে। সাধারণ মানুষ সেই শাপলা এখন মজাদার তরকারি হিসেবে খাচ্ছে। অন্যদিকে শাপলা ফুল বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান, লৌহজং ও শ্রীনগর উপজেলার শতাধিক পরিবার।

চার থেকে পাঁচ মাস কৃষিজমি পানির নিচে থাকায় কৃষকের হাতে কোনো কাজ থাকে না। তাই তারা এসময় এলাকার খাল-বিল থেকে শাপলা সংগ্রহ করে জীবন চালায়।

এদিকে বর্ষার এই মৌসুমে জেলার বিভিন্ন জায়গায় শাপলার যেমন হাট বসছে, তেমনি বাড়ি বাড়ি ফেরি করেও বিক্রি করা হচ্ছে শাপলা।

তেমন কোনো পুঁজির প্রয়োজন না হওয়ায় বিভিন্ন বয়সের লোক এ পেশায় অংশ নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে।

লতব্দী ইউনিয়নের চর নিমতলার বিল থেকে শাপলা সংগ্রহকারী মো. মিজান জানান, একেকজন কমপক্ষে ৪০ থেকে ৫০ মুঠো শাপলা সংগ্রহ করতে পারে। পাইকাররা সংগ্রহকারীর কাছ থেকে এসব শাপলা সংগ্রহ করে একত্রিত করে।

সিরাজদীখানের রসুনিয়া, ইমামগঞ্জ তালতলায়, হাসাড়া, ছনবাড়ীর মোড় ও আড়িয়াল বিলের পাশে শাপলার পাইকারি বাজার রয়েছে। পাইকাররা এখান থেকে শাপলা ক্রয় করে ঢাকার যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন পাইকারি বাজারে বিক্রি করেন।

ঢাকার পাইকার ছহির মিঞা জানান, শাপলা সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে এক মুঠো ২০ টাকায় ক্রয় করা হয়। গাড়ি ভাড়া গড়ে তিন টাকা, লেবার এক টাকা, আড়ত খরচ দুই টাকাসহ মোট ২৭ থেকে ২৮ টাকা খরচ পড়ে। সেই শাপলার মুঠো যাত্রাবাড়ী আড়তে বিক্রি হয় ৫০/৬০ টাকায়।

সূত্র মতে, বর্ষায় ডুবে যাওয়া ধান, পাট ও ধঞ্চে ক্ষেতে শাপলা বেশি জন্মায়। এছাড়া জেলার খাল-বিলেও শাপলা ফুল ফোটে। আষাঢ় থেকে শুরু করে ভাদ্র মাস পর্যন্ত পাওয়া যায় দেশের জাতীয় ফুল শাপলা।

শাপলা সংগ্রহকারীরা ভোরে নৌকা নিয়ে ডুবে যাওয়া জমিতে ও বিলের মধ্যে ঘুরে ঘুরে শাপলা তোলেন।

কয়েকজন শাপলা সংগ্রহকারী জানান, একেকজন কমপক্ষে ৪০ থেকে সর্বোচ্চ ৭০ মুঠো (৭০-৮০ পিসে ১ মুঠো) সংগ্রহ করতে পারে। পাইকাররা এসব শাপলা সংগ্রহকারীর কাছ থেকে সংগ্রহ করে একত্রে করেন। দিন শেষে ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা আয় করেন। বছরে তারা চার মাস এ কাজ করেন।

উপজেলার রসুনিয়া গ্রামের পাইকার সিরাজ মিয়া জানান, শাপলা সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে প্রতিদিন প্রায় দেড় হাজার থেকে দুই হাজার মুঠো শাপলা ক্রয় করেন। সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে এক মুঠো শাপলা ২০-৩০ টাকায় কেনেন তিনি।

এই বিষয়ে জেলার কৃষি কর্মকর্তা জানান, শাপলা আসলে কোনো কৃষিপণ্যের আওয়াতাভুক্ত নয়। এটি প্রাকৃতিকভাবে কৃষিজমি, পুকুর কিংবা ডোবায় জন্ম নেয়। এই বিষয়ে আমাদের কোনো পরামর্শ দেয়ার সুযোগ হয়ে উঠে না। তবে আমরা চেষ্টা করি কৃষকদের সহায়তা করার। এছাড়া আমরা কৃষকদের শাপলা বেশিদিন সংরক্ষণ করার পরামর্শ দিয়ে থাকি।