নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ পৌরসভার টাইলস ব্যবসায়ী মো. ওয়াহিদ হোসেন (৪২) এসিল্যান্ডের গাড়ির চাপায় নিহত হয়েছেন। রবিবার (৩১ মার্চ) আসর নামাজের পর এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)সহ সবাই গাড়ি রেখে কৌশলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরে সোনারগাঁ থানা পুলিশ আহত অবস্থায় ওয়াহিদকে উদ্ধার করে প্রথমে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে রেফার করে।
ঢাকা মেডিক্যাল যাওয়ার পথে সোনারগাঁয়ের টিপুরদি এলাকায় সে মারা যায়। বর্তমানে নিহতের লাশ তার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।নিহত মো. ওয়াহিদ হোসেন সোনারগাঁ পৌরসভার রাইজদিয়া গ্রামের মোসলেউদ্দিনের ছেলে। এক ছেলে ও তিন মেয়ের জনক।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, আসর নামাজ আদায় করে টাইলস্ ব্যবসায়ী ওয়াহিদ পৌরসভার পাশে তার গোডাউনে যান। সেখানে অটোরিকশার চালক টাইলস্ গোডাউনে রাখতে যাওয়ায় ওয়াহিদ অটোরিকশার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। এমন সময় বেপরোয়া গতিতে সোনারগাঁ উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) সরকারি গাড়ি (নারায়ণগঞ্জ-ঠ-১১-০০২১) বাজারের দিক থেকে সোনারগাঁ উপজেলার দিকে আসছিল। অতিরিক্ত গতির কারণে রাস্তার মোড়ে এসে চালক নাদিম হোসেন (২৫) গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা টাইলস্ ব্যবসায়ী ওয়াহিদ ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে ধাক্কা দিয়ে প্রায় এক শ গজ দূরে টিনের সীমানা প্রাচীর ভেঙে নিচু জমিতে পড়ে।
এ সময় আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে গাড়ির নিচ থেকে ওয়াহিদকে টেনে বের করে। এ সুযোগে এসিল্যান্ড ও চালকসহ সবাই ঘটনাস্থল থেকে কৌশলে সরে আসে। পরে সোনারগাঁ থানা পুলিশ আহত ওয়াহিদকে উদ্ধার করে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকায় রেফার করে।নিহত টাইলস্ ব্যবসায়ী ওয়াহিদের বড় ভাইয়ের ছেলে জুবায়ের হোসেন জানান, আমার চাচা ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। আমাদের সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য চিকিৎসার নাটক করেছে।
সে আরো জানান, চাচা আসর নামাজ শেষে বাড়িতে গিয়ে চাচি ও ভাইদের সঙ্গে ইফতার করার জন্য দাঁড়িয়ে ছিল বলেই কান্নায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন।সোনারগাঁ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে মুমূর্ষু অবস্থায় রোগীকে ঢাকায় রেফার করি। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে সে মারা যায়।
সোনারগাঁ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইব্রাহিম কালের কণ্ঠকে বলেন, আচমকা দুর্ঘটনায় আমি খুব মানসিক চাপে আছি। এর বেশি কিছু বলতে পারছি না।
সোনারগাঁ থানার ওসি এসএম কামরুজ্জামান জানান, এ ব্যাপারে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ পাইনি। নিহতের লাশ হাসপাতাল থেকে তার স্বজনরা বাড়িতে নিয়ে গেছেন।
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ্ আল মাহফুজ জানান, এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে। চালকের গাফলতি থাকলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিহতের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করছি।