ঢাকা ১২:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বয়স্ক ও বিধবা ভাতা বাড়াতে চায় সরকার

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৪২:১১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪
  • ৭১ বার
বয়স্ক-বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা এবং ভাতাভোগীর সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার। সে হিসাবে বয়স্ক ও বিধবা ভাতা বাড়ানোর প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। ভাতা বাড়ানোর এ প্রস্তাব এখন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে পাঠানো হবে। এরপর মন্ত্রিসভা কমিটি এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, দেশের প্রবীণ নাগরিকরা প্রতি মাসে বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন ৬০০ টাকা। আগামী অর্থবছরে ৬০০ থেকে বাড়িয়ে ৭০০ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে সমাজসেবা অধিদপ্তর। একইভাবে বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা মাসিক ৫৫০ থেকে বাড়িয়ে ৭০০ টাকা করার প্রস্তাব রয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার সামাজিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত এক সভায় ভাতা বাড়ানোর প্রস্তাবের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। ভাতা বাড়ানোর পাশাপাশি ভাতাভোগীর সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে ভাতাভোগীর সংখ্যা কতজন বাড়বে সেটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

প্রতিবন্ধী ভাতা শতভাগ নিশ্চিত করা হবে

সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (গ্রেড-১) ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল কালের কণ্ঠকে বলেন, মন্ত্রণালয়ের সমন্বয় সভার পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত অনির্ধারিত এক সভায় ভাতা বাড়ানোর বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তবে ভাতা বাড়ানোর বিষয়ে ভালো কিছু খবর থাকবে। সেটা এপ্রিলের শুরুতে জানতে পারবেন। তিনি বলেন, প্রতিবন্ধী ভাতা শতভাগ নিশ্চিত করা হবে।

জানা গেছে, ২০২৫ সালের মধ্যে ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বের সব পুরুষ এবং ৬২ বছরের ঊর্ধ্বের সব নারীকে ভাতা দেওয়ার পরিকল্পনা আছে সরকারের। এ ছাড়া ২৬২টি উপজেলাকে শতভাগ বয়স্ক ও বিধবা ভাতা প্রদানকারী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

বর্তমানে বয়স্ক ভাতাভোগীর সংখ্যা ৫৮ লাখ এক হাজার। বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতাভোগীর সংখ্যা ২৫ লাখ ৭৫ হাজার। প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীর সংখ্যা ২৯ লাখ। প্রতিবন্ধীরা মাসিক ভাতা পাচ্ছে ৮৫০ টাকা।

গত ৩ মার্চ জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের অধিবেশন শেষে সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের ভাতা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। বয়স্ক-বিধবা ভাতা বাড়াতে জেলা প্রশাসকরাও অনুরোধ করেছেন। আমরা সে অনুযায়ী আমরা কাজ করছি।’

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব খায়রুল আলম সেখ কালের কণ্ঠকে বলেন, ভাতা ও ভাতাভোগীর সংখ্যা কী পরিমাণ বাড়বে সে বিষয়ে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। সরকার তার আয়, সক্ষমতা ও পলিসি অনুযায়ী বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেবে।

২০১৫ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় বেতন কাঠামোর প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা যখন এক লাফে প্রায় দ্বিগুণ করা হয়েছিল, গরিব বয়স্ক নারী-পুরুষ এবং বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতাদের ভাতা ছিল তখন মাসিক ৪০০ টাকা করে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তাঁদের ভাতা ১০০ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ৫০০। এরপর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বয়স্ক ভাতা ১০০ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ৬০০ এবং বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতাদের ভাতা ৫০ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ৫৫০।

এবার মূল্যস্ফীতির বিবেচনায় ভাতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি এতে ইতিবাচক সায় দিয়েছেন। একইভাবে হিজড়া, বেদে, অনগ্রসর ও চা শ্রমিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কার্যক্রম এবং প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি কার্যক্রমের উপকারভোগী ও ভাতা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের।

 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

বয়স্ক ও বিধবা ভাতা বাড়াতে চায় সরকার

আপডেট টাইম : ১১:৪২:১১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪
বয়স্ক-বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা এবং ভাতাভোগীর সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার। সে হিসাবে বয়স্ক ও বিধবা ভাতা বাড়ানোর প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। ভাতা বাড়ানোর এ প্রস্তাব এখন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে পাঠানো হবে। এরপর মন্ত্রিসভা কমিটি এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, দেশের প্রবীণ নাগরিকরা প্রতি মাসে বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন ৬০০ টাকা। আগামী অর্থবছরে ৬০০ থেকে বাড়িয়ে ৭০০ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে সমাজসেবা অধিদপ্তর। একইভাবে বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা মাসিক ৫৫০ থেকে বাড়িয়ে ৭০০ টাকা করার প্রস্তাব রয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার সামাজিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত এক সভায় ভাতা বাড়ানোর প্রস্তাবের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। ভাতা বাড়ানোর পাশাপাশি ভাতাভোগীর সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে ভাতাভোগীর সংখ্যা কতজন বাড়বে সেটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

প্রতিবন্ধী ভাতা শতভাগ নিশ্চিত করা হবে

সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (গ্রেড-১) ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল কালের কণ্ঠকে বলেন, মন্ত্রণালয়ের সমন্বয় সভার পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত অনির্ধারিত এক সভায় ভাতা বাড়ানোর বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তবে ভাতা বাড়ানোর বিষয়ে ভালো কিছু খবর থাকবে। সেটা এপ্রিলের শুরুতে জানতে পারবেন। তিনি বলেন, প্রতিবন্ধী ভাতা শতভাগ নিশ্চিত করা হবে।

জানা গেছে, ২০২৫ সালের মধ্যে ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বের সব পুরুষ এবং ৬২ বছরের ঊর্ধ্বের সব নারীকে ভাতা দেওয়ার পরিকল্পনা আছে সরকারের। এ ছাড়া ২৬২টি উপজেলাকে শতভাগ বয়স্ক ও বিধবা ভাতা প্রদানকারী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

বর্তমানে বয়স্ক ভাতাভোগীর সংখ্যা ৫৮ লাখ এক হাজার। বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতাভোগীর সংখ্যা ২৫ লাখ ৭৫ হাজার। প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীর সংখ্যা ২৯ লাখ। প্রতিবন্ধীরা মাসিক ভাতা পাচ্ছে ৮৫০ টাকা।

গত ৩ মার্চ জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের অধিবেশন শেষে সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের ভাতা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। বয়স্ক-বিধবা ভাতা বাড়াতে জেলা প্রশাসকরাও অনুরোধ করেছেন। আমরা সে অনুযায়ী আমরা কাজ করছি।’

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব খায়রুল আলম সেখ কালের কণ্ঠকে বলেন, ভাতা ও ভাতাভোগীর সংখ্যা কী পরিমাণ বাড়বে সে বিষয়ে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। সরকার তার আয়, সক্ষমতা ও পলিসি অনুযায়ী বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেবে।

২০১৫ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় বেতন কাঠামোর প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা যখন এক লাফে প্রায় দ্বিগুণ করা হয়েছিল, গরিব বয়স্ক নারী-পুরুষ এবং বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতাদের ভাতা ছিল তখন মাসিক ৪০০ টাকা করে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তাঁদের ভাতা ১০০ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ৫০০। এরপর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বয়স্ক ভাতা ১০০ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ৬০০ এবং বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতাদের ভাতা ৫০ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ৫৫০।

এবার মূল্যস্ফীতির বিবেচনায় ভাতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি এতে ইতিবাচক সায় দিয়েছেন। একইভাবে হিজড়া, বেদে, অনগ্রসর ও চা শ্রমিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কার্যক্রম এবং প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি কার্যক্রমের উপকারভোগী ও ভাতা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের।