চট্টগ্রাম নগরে মশার প্রকোপ কমাতে আগামী সপ্তাহ থেকে কার্যক্রম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। নগরের লালদিঘী পারে অবস্থিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবনের সম্মেলনকক্ষে বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে তিনি এ ঘোষণা দেন।
এদিন চসিকের ষষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের ৩৮তম সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে মেয়র বলেন, ‘ঢাকার মতো চট্টগ্রামেও মশা দ্রুত বাড়ছে। আগামী সপ্তাহ থেকে স্প্রেম্যান থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট লোকবল বাড়িয়ে মশা নিধনে প্রতিটি ওয়ার্ডে আরো ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।
ডেঙ্গুর প্রকোপ প্রতিরোধে এখনই উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। কাউন্সিলরদের মাঠে থেকে তদারকি করতে হবে এ কার্যক্রম।’মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘অনেকে মনে করে টনকে টন মশার ওষুধ মারলেই মশা কমবে, এটা ঠিক না। আমাদেরকে পরিবেশগত ভারসাম্যের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে।
একসময় শহরে ব্যাঙ পাওয়া যেত, যেটা মশার লার্ভা খেয়ে মশা কমাতে সহায়তা করত। বিভিন্ন ধরনের উপকারী কীটপতঙ্গ পাওয়া যেত, যা পাওয়া যাচ্ছে না। মশার ওষুধের প্রতি মশার প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি হয়েছে। এখন ওষুধ মেরেও মশা মারা যাচ্ছে না।মশা নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে গবেষণা প্রয়োজন।’
জনগণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে চসিক মেয়র বলেন, ‘আমাদের পরিচ্ছন্নতা বিভাগ নালাগুলো পরিষ্কার করছে। অনেক সময় দেখা যায়, নালায় ডাবের খোসা থেকে লেপ-তোষক সব ফেলা হয়েছে, যা জলাবদ্ধতা তৈরি করে মশার প্রজননক্ষেত্রে পরিণত হচ্ছে। জনগণ সচেতন না হলে মশার প্রকোপ কমানো কঠিন হবে। জনগণ বাড়িতে থাকা জমা পানি প্রতি তিন দিনে এক দিন ফেলে দিলে এবং যত্রতত্র ময়লা ফেলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি থেকে জনগণকে বিরত রাখতে পারলে পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটবে।
সিডিএ ৩৬টা খালে যে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প করছে সেগুলোতে বাঁধ দিতে হয়েছে। সিডিএ বর্ষার আগে বাঁধ ও খালের মাটি অপসারণ করলে জলাবদ্ধতা ও মশার প্রকোপ কমবে।’আর্থিক সমস্যায় চট্টগ্রামের উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘চট্টগ্রাম দেশের দ্বিতীয় শহর। চট্টগ্রামকে ঘিরে বে-টার্মিনাল, শিল্প পার্ক, গভীর সমুদ্রবন্দরসহ অনেকগুলো বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ প্রকল্পগুলোকে সফল করতে যে ধরনের অবকাঠামো চট্টগ্রামের দরকার তা কেবল শুধু হোল্ডিং ট্যাক্স আর ট্র্রেড লাইসেন্সের আয় দিয়ে তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব নয়।’
সভায় চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রউফ, ট্রাফিক বিভাগের এডিসি মো. কাজী হুমায়ুন রশীদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।