বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের সাড়ে তিন মাসের মাথায় অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ভারতের লোকসভা নির্বাচন। ভোট পূর্ববর্তী ভারতের সব জনমত জরিপই বলছে, বাংলাদেশের মতো ভারতের নির্বাচনেও ক্ষমতায় পরিবর্তনের তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই।
এ কারণেই সম্ভবত এই নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের আগ্রহ কিছুটা স্তিমিত। তবুও ঐতিহাসিকভাবে দিল্লিতে কী হচ্ছে তা সব সময়ই বাংলাদেশকে প্রভাবিত করে।
ভারতের নির্বাচনের ঠিক আগে ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদি সরকার বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) কার্যকর করার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। এই পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুরা ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার কি না, সে বিষয়টিও ভারতের রাজনৈতিক এজেন্ডায় পরিণত হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা অনেকেই বলছেন, সিএএ বাস্তবায়নের পর ‘এনআরসি’ বা জাতীয় নাগরিকপঞ্জি বাস্তবায়নেরও পরিকল্পনা রয়েছে বিজেপির।
এই এনআরসি কার্যকর হলে আসাম ও পশ্চিমবঙ্গে বহু মুসলিম ভারতের নাগরিকত্ব হারাতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন তারা, এবং যথারীতি এর প্রভাব পড়বে বাংলাদেশ সীমান্তে।
নতুন এই আইনটির কারণেই অতীতের যে কোনও নির্বাচনের চেয়ে ভারতের এবারের নির্বাচনে ‘বাংলাদেশ ইস্যু’টি জড়িয়ে রয়েছে খুব নিবিড়ভাবে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, এমনিতেই এই আইনটি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। নির্বাচনের আগে এই নাগরিকত্ব আইনের ইমপ্যাক্ট বাংলাদেশে পড়বেই।
সম্প্রতি বাংলাদেশের নির্বাচনে ভারতের ভূমিকা নিয়েও এক ধরনের আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে বাংলাদেশের রাজনীতিতে। যে কারণে ভারতের নির্বাচনের আগে সেটা নিয়েও নানামুখী আলোচনা ও বিশ্লেষণ রয়েছে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে।
ভারতের ক্ষমতা কাঠামোতে পরিবর্তন আসুক আর নাই বা আসুক, এমন অন্তত পাঁচটি কারণ চিহ্নিত করা যেতেই পারে যেগুলোর জন্য বাংলাদেশের মানুষ ভারতের আসন্ন নির্বাচনের দিকে সতর্ক নজর রাখবে।
নাগরিকত্ব আইন
ভারতে গত সপ্তাহে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট (সিএএ) কার্যকর করার পর থেকে এ নিয়ে নানা তর্কবিতর্ক চলছে পশ্চিমবঙ্গ ও আসামসহ সে দেশের নানা জায়গায়।
ওই আইন অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ওই তিন দেশের যে সমস্ত হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন ও পারসিদের মতো ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা সাম্প্রদায়িক নির্যাতন ও নিপীড়নের কারণে ভারতে চলে এসেছিলেন তাদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
এখন এর অর্থ দাঁড়ায়, আইনটি কার্যকর হলে ২০১৪ সালের পর থেকে যারা বাংলাদেশ থেকে গিয়ে গত প্রায় সাড়ে নয় বছরে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন তাদের বাংলাদেশে ফেরত আসতে হবে। তখন এই প্রশ্নটিও উঠবে যে এই সংখ্যা তাহলে কত হতে পারে?
এদিকে গত ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের ক্ষমতায় রয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার।
এই সরকারের আমলে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা নিরাপত্তার কারণে দেশ ছেড়েছে কেন, এমন অস্বস্তিকর প্রশ্নও তখন সামনে আসতে পারে। সেই সঙ্গেই প্রশ্ন উঠবে, তারা যদি বাংলাদেশে ফেরত আসতে চায় তাহলে বাংলাদেশ কি তাদের গ্রহণ করতে রাজি হবে?
ফলে ভারতের নির্বাচনের ঠিক আগে এই আইন চালু হওয়ায় বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ বিষয়টি নিয়ে নানামুখী আলোচনা করছে।
রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক কারণ
আগামী ১৯শে এপ্রিল থেকে শুরু হচ্ছে ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ, যা চলবে দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে।
প্রতিবেশী দেশ হিসেবে গত দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক বেশ ঘনিষ্ঠ। কিন্তু নির্বাচনের পরে দেশটিতে সম্ভাব্য সরকার ও নীতি বদলের প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশেও।
সে কারণে ভারতের নির্বাচন এগিয়ে এলেই সে দিকে সতর্ক নজর রাখে বাংলাদেশের বড় রাজনৈতিক দলগুলো।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দুটি দেশের ভোটের সময়ই রাষ্ট্র ক্ষমতায় কোন দল আসছে, সেটা পারস্পরিকভাবে দুই দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ ছিল সব সময়। তবে বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ থাকলে সেটা ভারতের বিজেপি বা কংগ্রেস, উভয় দলের জন্যই স্বস্তির।
বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে, তখন ভারতের ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস। ঐতিহ্যগতভাবে মূলত কংগ্রেসের সঙ্গেই আওয়ামী লীগের দীর্ঘ দিনের সুসম্পর্ক। কিন্তু ২০১৪ সালে বিজেপি ভারতের ক্ষমতায় আসার পরে সেই সরকারেরও জোরালো সমর্থন পেয়েছে আওয়ামী লীগ।
নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসায় তখন অনেকের ধারণা ছিল আওয়ামী লীগের প্রতি ভারতের নতুন সরকারের সমর্থন এতটা নিরঙ্কুশ হবে না।
কিন্তু গত দশ বছরে বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কোনও পরিবর্তন আসেনি। উল্টো ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অতীতের যে কোনও সময়ের চেয়ে অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ হয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন। সেই নির্বাচনের আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বেশ আগ্রহ দেখায়। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে তখন ভিসা নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
পশ্চিমা দেশগুলোর সেই চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের নির্বাচনের আগে ভারত তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে।
পর্যবেক্ষকরা অনেকেই মনে করেন, ভারতের কারণেই শেষ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অনেকটা নমনীয় অবস্থান নিতে বাধ্য হয়।
যে কারণে শেষ পর্যন্ত ৭ই জানুয়ারির নির্বাচনে জিতে টানা চতুর্থ বারের মতো ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ।
বাংলাদেশের বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরের ধারণা, ভারতের প্রত্যক্ষ মদদেই বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ দিনের পর দিন ক্ষমতায় থেকে যেতে পারছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের ক্ষমতার অলিন্দে কে থাকবে, তা নির্ধারণে সবচেয়ে বড় নির্ণায়ক শক্তি হয়ে গেছে ভারত।
তিস্তা চুক্তি ও অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন
অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যেকার একটি দীর্ঘমেয়াদী ও জটিল ইস্যু।
দু’দেশের মধ্যে ১৯৯৬ সালে গঙ্গা নদীর পানিবণ্টনের চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও তিস্তাসহ আলোচনায় থাকা ৮টি নদীর পানি ভাগাভাগির ব্যাপারে এখনো কোনো সুরাহা হয়নি।
আওয়ামী লীগ সরকারের টানা ১৫ বছরের মেয়াদে নানা ইস্যুতে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক অনেক শক্তিশালী হলেও অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন নিয়ে সংকট কিন্তু রয়েই গেছে। যে সব বিষয়ে দুদেশের মধ্যে একটা দূরত্ব রয়েছে তার মধ্যে দুটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হল তিস্তা চুক্তি সম্পাদন ও গঙ্গা চুক্তির নবায়ন।
গঙ্গা চুক্তির পর আলোচনায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছিল তিস্তা নদীর পানি ভাগাভাগির বিষয়টি।
২০১১ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের আমলে তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরের ব্যাপারে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরোধিতায় তা আর বাস্তবায়ন করা যায়নি।
অন্যদিকে, ১৯৯৬ সালে গঙ্গার পানি বণ্টনের জন্য দুই দেশের মধ্যে ৩০ বছর মেয়াদি চুক্তি সই করা হয়। ২০২৬ সালে এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে। এছাড়া অভিন্ন আরও ছয়টি নদীর পানি বণ্টনের প্রস্তাবিত চুক্তি নিয়ে নানা আলোচনা হলেও সেগুলো এখনও সম্পাদিত হয়নি।
এদিকে জানুয়ারিতে বাংলাদেশের নির্বাচনের পর সরকার গঠিত হলে নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ পরের মাসেই ভারত সফর করেন।
দেশে ফিরেই তিনি জানান, ভারতের নির্বাচনের পর দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তি এবং গঙ্গা চুক্তির নবায়ন নিয়ে ঢাকা ও দিল্লি একসঙ্গে মিলে কাজ করবে বলে সম্মত হয়েছে।
এদিকে বিগত এক দশক ধরে বিজেপি ভারতের ক্ষমতায় থাকলেও পশ্চিমবঙ্গে কিন্তু একটানা এক যুগেরও বেশি সময় ধরে শাসন করছে মমতা ব্যানার্জীর নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস।
সেই রাজ্য সরকারের মতামত উপেক্ষা করে ভারতের নতুন কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাদেশের সাথে তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন চুক্তি করবে, এমনটা কিন্তু মনে করছেন না বাংলাদেশের কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।
সীমান্তে হত্যাকাণ্ড
ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশকে তিন দিক থেকে ঘিরে রেখেছে প্রতিবেশী ভারত। চার হাজার কিলোমিটারেরও বেশি দীর্ঘ স্থল-সীমান্ত রয়েছে দুই দেশের মধ্যে।
বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠন ‘আইন ও সালিশ কেন্দ্রে’র হিসাব অনুযায়ী শুধুমাত্র ২০২৩ সালেই এই সীমান্তে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের হাতে মারা গেছেন ৩০জন বাংলাদেশি নাগরিক।
তার আগের বছর, অর্থাৎ ২০২২ সালে সীমান্তে নিহতের সংখ্যা ছিল ২৩ জন। এর মধ্যে ১৬ জনই মারা গিয়েছিলেন বিএসএফের গুলিতে।
আর ২০২১ সালে এই সংখ্যাটা ছিলো ১৭। এছাড়াও সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের অপহরণের খবরও মেলে প্রায়ই।
আসলে বিগত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ ও ভারতের দুই সরকারের মধ্যে সম্পর্কের প্রভূত উন্নতি হলেও সীমান্তে তার কোনও প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না।
এমন অবস্থায় সীমান্ত-হত্যা বন্ধে দুই দেশের মধ্যে বেশ কয়েক দফা আলোচনা হলেও তাতে সীমান্ত পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন ঘটেনি।
সীমান্তে প্রাণহানি বন্ধ করার লক্ষ্য নিয়ে ২০১৮ সালের এপ্রিলে একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হয় দুই দেশের মধ্যে। সেখানে সীমান্ত অতিক্রমের ঘটনাগুলোতে প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার না করতে সহমতও হয় দুই দেশ।
কিন্তু এরপরও সীমান্তে এই সব হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা যায়নি কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন সময়। বিশ্লেষকরা বলছেন, আসলে সীমান্ত হত্যা কমানোর জন্য দুই দেশের আন্তরিক প্রচেষ্টা বা সদিচ্ছা না থাকার কারণেই এটি কমছে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ভারত ও চীন তাদের সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধে চুক্তি করেছে যে ওই দুই দেশের সীমানার দুই কিলোমিটারের মধ্যে কোনও অস্ত্র আনা যাবে না, কোনও ফায়ারিং হবে না।
তিনি প্রশ্ন তুলছেন, ভারত ও চীন যদি এটা করতে পারে তাহলে বাংলাদেশ-ভারত কেন করতে পারছে না?
ট্রানজিট ও বন্দর ব্যবহার
বাংলাদেশে এখন একটানা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে বেশ একটা দৃশ্যমান পরিবর্তন এসেছে।
এই সময়কালে দুই দেশের মধ্যে ছিটমহল বিনিময়-সহ স্থল সীমান্ত চুক্তি, সড়ক পথে ট্রানজিট, চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্র বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দেওয়াসহ নানা চুক্তি হয়েছে দুই দেশের মধ্যে।
ভারতকে ট্রানজিট ও ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা প্রদানের বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশে নানা তর্ক বিতর্ক ছিল বহুদিন থেকে।
২০১০ সালে তখনকার সরকার সে সময় বিশেষজ্ঞ ও আমলাদের সমন্বয়ে এই বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটি গঠন করে।
অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতাসহ বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করে ওই কমিটির প্রতিবেদনে ভারতকে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
সে সময় ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্ট ফি বা মাশুল নিয়েও বিতর্ক দেখা দেয়। বাংলাদেশের নীতি-নির্ধারকদের মধ্যে কেউ কেউ কোনও মাশুল না নেওয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন।
সম্প্রতি ভারতকে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ। ভারতকে সেই সুযোগ দেওয়া হলেও স্থলবন্দর, বিমানবন্দর ও সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে নেপাল কিংবা ভুটানে পণ্য রফতানি করার জন্য এখনও অনুমতি পায়নি বাংলাদেশ।
ভারতকে ট্রানজিট ও ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা দেওয়ার বিনিময় বাংলাদেশের প্রাপ্তি কী, তা নিয়ে যথারীতি নানা আলোচনা রয়েছে বাংলাদেশে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকার ১৫ বছরে বাংলাদেশ-ভারত এই দুই দেশের মধ্যে ট্রানজিট ও বন্দর ব্যবহারসহ যে সব চুক্তি হয়েছে তা অতীতে কখনও হয়নি।
তবে ভারতকে ‘একতরফাভাবে’ অনেক কিছু দেওয়া হলেও তার বিনিময়ে বাংলাদেশ ‘তেমন কিছু পায়নি’ – এই অভিযোগও আছে।
স্বাভাবিকভাবে ভারতে নির্বাচনের আগে প্রশ্ন উঠেছে ভারতে যদি নতুন কোনও সরকার ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের স্বার্থ কতখানি পূরণ হবে?