ঢাকা ০৬:১১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উপজেলা নির্বাচন : ভোটে যেতে কৌশল খুঁজছে বিএনপি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৪৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • ৩৮ বার
আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে অংশগ্রহণ করবে না। তবে দলের নেতাদের মধ্যে যাঁরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে চান, তাঁদের ক্ষেত্রে দলের কৌশল কী হবে তা নিয়ে আলোচনা চলছে। বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, কোন প্রক্রিয়ায় দলের নেতারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন, সেই কৌশল খোঁজা হচ্ছে।

বিএনপির নীতিনির্ধারকরা বলছেন, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কয়েকজন শীর্ষ পর্যায়ের নেতা কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার পর উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে দলে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হয়েছে।

দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের অনেকে ‘কৌশলে’ নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন।

দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের আলোচনায় নির্বাচনে অংশ নিতে একটি কৌশল গুরুত্ব পাচ্ছে বেশি। তা হলো নির্বাচন নিয়ে বিএনপির নীরব ভূমিকা পালন করা। যাঁরা নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী, তাঁরা প্রার্থী হলে দল থেকে আপত্তি না করা।

প্রার্থীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া।

জানতে চাইলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী কালের কণ্ঠকে বলেন, এই সরকারের অধীনে কোনো ধরনের নির্বাচনে না যাওয়ার পূর্ব সিদ্ধান্ত এখনো আছে। তার পরও দলের নীতিনির্ধারকরা কোনো সিদ্ধান্ত নিলে সেটি জানানো হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেন, নির্বাচনের বিষয়ে নীরব থেকে প্রার্থীদের বিষয়ে নমনীয় হওয়াও একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল।

দল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়া হবে না। প্রার্থী হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নেবে না দল। প্রার্থীকে স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে নির্বাচন করতে হবে। এই কৌশলে নেতাদের প্রার্থী হওয়ার সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ বিষয়ে দলের নেতারা রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক লাভ-ক্ষতির হিসাব কষছেন।

দীর্ঘদিন নির্বাচনবিমুখ হলে নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয় বলে অনেক নেতার বিশ্লেষণে উঠে এসেছে।

নির্বাচনবিরোধী নেতাদের মত হলো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাঠ পর্যায়ে আওয়ামী লীগ এখন নানা ভাগে বিভক্ত। উপজেলা নির্বাচনে সেই বিভক্তি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে আরো ভয়ংকর হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই নির্বাচনে অংশ না নিয়ে আওয়ামী লীগকে ফাঁকা মাঠ ছেড়ে দেওয়ার পক্ষে দলটির কোনো কোনো নেতা।

সম্প্রতি ইসি ঘোষণা দিয়েছে আগামী ৪ মে থেকে চার ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হবে। সে অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপ ১১ মে, তৃতীয় ধাপ ১৮ মে ও চতুর্থ ধাপ ২৫ মে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট হবে।

বিএনপি সূত্র জানায়, ইসির ঘোষণার পর থেকে বিএনপির একটি পক্ষ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য নানা যুক্তি তুলে ধরার চেষ্টা করে। এসব নেতার বক্তব্য হচ্ছে, দল আন্দোলনও করবে না, নির্বাচনও করবে না, তাহলে নেতাকর্মীদের ধরে রাখবে কোন প্রক্রিয়ায়। তাঁরা মনে করেন, উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিলে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা মাঠে সক্রিয় হবেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় কালের কণ্ঠকে বলেন, উপজেলা নির্বাচন নিয়ে দলে আনুষ্ঠানিক আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হবে। সেই পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তিনি এও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জাতীয় সংসদ, স্থানীয় সরকার কিংবা স্কুল কমিটির নির্বাচন, কোনোটিই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে মানুষের কোনো আগ্রহ নেই।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

উপজেলা নির্বাচন : ভোটে যেতে কৌশল খুঁজছে বিএনপি

আপডেট টাইম : ১০:৪৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে অংশগ্রহণ করবে না। তবে দলের নেতাদের মধ্যে যাঁরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে চান, তাঁদের ক্ষেত্রে দলের কৌশল কী হবে তা নিয়ে আলোচনা চলছে। বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, কোন প্রক্রিয়ায় দলের নেতারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন, সেই কৌশল খোঁজা হচ্ছে।

বিএনপির নীতিনির্ধারকরা বলছেন, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কয়েকজন শীর্ষ পর্যায়ের নেতা কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার পর উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে দলে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হয়েছে।

দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের অনেকে ‘কৌশলে’ নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন।

দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের আলোচনায় নির্বাচনে অংশ নিতে একটি কৌশল গুরুত্ব পাচ্ছে বেশি। তা হলো নির্বাচন নিয়ে বিএনপির নীরব ভূমিকা পালন করা। যাঁরা নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী, তাঁরা প্রার্থী হলে দল থেকে আপত্তি না করা।

প্রার্থীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া।

জানতে চাইলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী কালের কণ্ঠকে বলেন, এই সরকারের অধীনে কোনো ধরনের নির্বাচনে না যাওয়ার পূর্ব সিদ্ধান্ত এখনো আছে। তার পরও দলের নীতিনির্ধারকরা কোনো সিদ্ধান্ত নিলে সেটি জানানো হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেন, নির্বাচনের বিষয়ে নীরব থেকে প্রার্থীদের বিষয়ে নমনীয় হওয়াও একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল।

দল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়া হবে না। প্রার্থী হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নেবে না দল। প্রার্থীকে স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে নির্বাচন করতে হবে। এই কৌশলে নেতাদের প্রার্থী হওয়ার সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ বিষয়ে দলের নেতারা রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক লাভ-ক্ষতির হিসাব কষছেন।

দীর্ঘদিন নির্বাচনবিমুখ হলে নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয় বলে অনেক নেতার বিশ্লেষণে উঠে এসেছে।

নির্বাচনবিরোধী নেতাদের মত হলো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাঠ পর্যায়ে আওয়ামী লীগ এখন নানা ভাগে বিভক্ত। উপজেলা নির্বাচনে সেই বিভক্তি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে আরো ভয়ংকর হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই নির্বাচনে অংশ না নিয়ে আওয়ামী লীগকে ফাঁকা মাঠ ছেড়ে দেওয়ার পক্ষে দলটির কোনো কোনো নেতা।

সম্প্রতি ইসি ঘোষণা দিয়েছে আগামী ৪ মে থেকে চার ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হবে। সে অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপ ১১ মে, তৃতীয় ধাপ ১৮ মে ও চতুর্থ ধাপ ২৫ মে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট হবে।

বিএনপি সূত্র জানায়, ইসির ঘোষণার পর থেকে বিএনপির একটি পক্ষ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য নানা যুক্তি তুলে ধরার চেষ্টা করে। এসব নেতার বক্তব্য হচ্ছে, দল আন্দোলনও করবে না, নির্বাচনও করবে না, তাহলে নেতাকর্মীদের ধরে রাখবে কোন প্রক্রিয়ায়। তাঁরা মনে করেন, উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিলে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা মাঠে সক্রিয় হবেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় কালের কণ্ঠকে বলেন, উপজেলা নির্বাচন নিয়ে দলে আনুষ্ঠানিক আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হবে। সেই পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তিনি এও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জাতীয় সংসদ, স্থানীয় সরকার কিংবা স্কুল কমিটির নির্বাচন, কোনোটিই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে মানুষের কোনো আগ্রহ নেই।