ঢাকা ০৬:২২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেট্রোর চাপে দিশেহারা বাস মালিকরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:০০:৩৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • ৩২ বার

মেট্রোরেল চালুর পর পাল্টে গেছে রাজধানীর মিরপুর-মতিঝিল রুটের দৃশ্য। পথের যানজট অনেকটাই কমেছে। যাত্রীর অভাবে বন্ধ প্রায় অর্ধেক বাস-মিনিবাস। যানবাহন বিক্রির চেষ্টা করছেন অনেক মালিক। আর পরিবহন শ্রমিকরা পেশা পরিবর্তনের উপায় খুঁজছেন।

এ যেন প্রদীপের নীচে অন্ধকার! উপরে যখন ঝা চকচকে আধুনিক গণপরিবহন মেট্রোরেলে যাত্রীদের উপচে পড়া ভীড়, ঠিক তার নীচে ধুকে ধুকে চলা মেয়াদহীন বাস-মিনিবাসে যাত্রী খড়া। আধুনিক যাতায়াতের সুযোগ পেয়ে উত্তরা-মিরপুর-মতিঝিল রুটের যাত্রীরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন ফিটনেস আর শৃঙ্খলাহীন বাস মিনিবাস থেকে। যুগের পর যুগ যাদের হাতে জিম্মি ছিলেন এ পথে যাত্রীরা।

সিটিং সার্ভিসের নামে ওয়েবিলের অত্যাচার, কিংবা ১৫ টাকা জ্বলানির দাম বাড়ায় ২৭ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি। প্রতিবাদ করলে এসব পরিবহন থেকে নামিয়ে দেওয়ার রেকর্ড পর্যন্ত আছে। অথচ সেইসব পরিবহনই এখন যাত্রী খুঁজছে।

মিরপুর ১২ থেকে যাত্রীবাড়িগামী বিকল্প পরিবহনের এই সহকারীর আয় অর্ধেকের নীচে নেমে আসায় তিনি গ্রামে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আধাঘন্টা ডাকাডাকি করেও পিক আওয়ারে তার গাড়িতে উঠেছেন দুজন যাত্রী।

পরিবহন শ্রমিকরা বলছেন, আগে যে পরিমাণ যাত্রী হত তা এখন নাই বললেই চলে। মেট্রোরেল চালুর আগে দৈনিক যে বেতন পাওয়া যেতো তা এখন অর্ধেকে নেমে এসেছে। এখন নিজে চলবো কিভাবে আর সংসারই বা চালাবো কি করে।

শ্রমিকদের হতাশায় দ্বগ্ধ মালিকরাও। চালক খরায় কেউ গাড়ি বন্ধ রেখেছেন, কেউ আবার বাস বিক্রির উপায় খুঁজছেন। বিকল্প পরিবহনের ম্যানেজার মো. সবুজ জানান, যাত্রী স্বল্পতায় ৪৫টি বাসের ২৫টি রাস্তায় নামাতে পারেননি। এ রুটের অন্য পরিহবনগুলোরও প্রায় একই অবস্থা।

পরিবহন নেতারা বলছেন, বাস মালিকদের বাঁচাতে বিকল্প পথ পাচ্ছেন না তারা।

ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বলেন, এখন কোনো রকম টিকে আছে বাস মালিকরা। হয়ত অনেকেই এই গাড়ির ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে পারবে না। সরকার যদি এদের ব্যাপারে কোনো নতুন উদ্যোগ না নেয় তাহলে এ ব্যবসা থেকে মালিকদের সরে যেতে হবে।

এমন বাস্তবতা থেকে পরিবহন মালিকদের শিক্ষা নিতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। জনগনকে জিম্মি করে নয়, বরং নিয়ম মেনে সেবা দেওয়ার মানসিকতা নিয়ে ব্যবসা পরিচালনার পরামর্শ তাদের।

 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

মেট্রোর চাপে দিশেহারা বাস মালিকরা

আপডেট টাইম : ১২:০০:৩৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

মেট্রোরেল চালুর পর পাল্টে গেছে রাজধানীর মিরপুর-মতিঝিল রুটের দৃশ্য। পথের যানজট অনেকটাই কমেছে। যাত্রীর অভাবে বন্ধ প্রায় অর্ধেক বাস-মিনিবাস। যানবাহন বিক্রির চেষ্টা করছেন অনেক মালিক। আর পরিবহন শ্রমিকরা পেশা পরিবর্তনের উপায় খুঁজছেন।

এ যেন প্রদীপের নীচে অন্ধকার! উপরে যখন ঝা চকচকে আধুনিক গণপরিবহন মেট্রোরেলে যাত্রীদের উপচে পড়া ভীড়, ঠিক তার নীচে ধুকে ধুকে চলা মেয়াদহীন বাস-মিনিবাসে যাত্রী খড়া। আধুনিক যাতায়াতের সুযোগ পেয়ে উত্তরা-মিরপুর-মতিঝিল রুটের যাত্রীরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন ফিটনেস আর শৃঙ্খলাহীন বাস মিনিবাস থেকে। যুগের পর যুগ যাদের হাতে জিম্মি ছিলেন এ পথে যাত্রীরা।

সিটিং সার্ভিসের নামে ওয়েবিলের অত্যাচার, কিংবা ১৫ টাকা জ্বলানির দাম বাড়ায় ২৭ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি। প্রতিবাদ করলে এসব পরিবহন থেকে নামিয়ে দেওয়ার রেকর্ড পর্যন্ত আছে। অথচ সেইসব পরিবহনই এখন যাত্রী খুঁজছে।

মিরপুর ১২ থেকে যাত্রীবাড়িগামী বিকল্প পরিবহনের এই সহকারীর আয় অর্ধেকের নীচে নেমে আসায় তিনি গ্রামে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আধাঘন্টা ডাকাডাকি করেও পিক আওয়ারে তার গাড়িতে উঠেছেন দুজন যাত্রী।

পরিবহন শ্রমিকরা বলছেন, আগে যে পরিমাণ যাত্রী হত তা এখন নাই বললেই চলে। মেট্রোরেল চালুর আগে দৈনিক যে বেতন পাওয়া যেতো তা এখন অর্ধেকে নেমে এসেছে। এখন নিজে চলবো কিভাবে আর সংসারই বা চালাবো কি করে।

শ্রমিকদের হতাশায় দ্বগ্ধ মালিকরাও। চালক খরায় কেউ গাড়ি বন্ধ রেখেছেন, কেউ আবার বাস বিক্রির উপায় খুঁজছেন। বিকল্প পরিবহনের ম্যানেজার মো. সবুজ জানান, যাত্রী স্বল্পতায় ৪৫টি বাসের ২৫টি রাস্তায় নামাতে পারেননি। এ রুটের অন্য পরিহবনগুলোরও প্রায় একই অবস্থা।

পরিবহন নেতারা বলছেন, বাস মালিকদের বাঁচাতে বিকল্প পথ পাচ্ছেন না তারা।

ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বলেন, এখন কোনো রকম টিকে আছে বাস মালিকরা। হয়ত অনেকেই এই গাড়ির ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে পারবে না। সরকার যদি এদের ব্যাপারে কোনো নতুন উদ্যোগ না নেয় তাহলে এ ব্যবসা থেকে মালিকদের সরে যেতে হবে।

এমন বাস্তবতা থেকে পরিবহন মালিকদের শিক্ষা নিতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। জনগনকে জিম্মি করে নয়, বরং নিয়ম মেনে সেবা দেওয়ার মানসিকতা নিয়ে ব্যবসা পরিচালনার পরামর্শ তাদের।