ঢাকা ০১:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৩০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরকারকে আলোচনায় বসার আহ্বান এরশাদের

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:১৪:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ জুলাই ২০১৬
  • ২৭৭ বার

দেশের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাস ও জঙ্গি হামলা বন্ধে সরকারকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ।

তিনি বলেন, ‘আসুন সবাই একসঙ্গে বসি। আলোচনা করি। আলোচনার মাধ্যমে একটা সুরাহা করি। পৃথিবীর মানুষ দেখুক আমরা একসঙ্গে বসতে পারি।’

শনিবার রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে এইচএম এরশাদ এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘সারা দেশ রক্তে ভাসছে। সস্ত্রাসী কর্মকাণ্ড একটি দলের মাঝে সীমাবদ্ধ ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে এর পরিধি বিস্তৃতি লাভ করেছে। আমরা রক্তে ভেজা নয়, বৃষ্টি ভেজা দেশ চাই।’

সাবেক রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি বলবো- সরকার জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। আজ সারা বাংলাদেশের মানুষ নিরাপত্তাহীনতা ভুগছে। মানুষ আতংকিত। এমন বাংলাদেশ তো আমরা চাইনি।’

তিনি বলেন, ‘যারা সন্ত্রাসী হামলা করেছে, তারা জেএমবি-আনসারুল্লাহ নয়, তারা ইউনিভার্সিটির ছাত্র। সবচেয়ে বিপজ্জনক হচ্ছে, তারা আত্মঘাতী। তারা জীবন দিতে এসেছে। যারা জীবন দিতে পারে, তারা জীবন নিতেও পারে।’

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের সরকার বুঝতে হবে- কেন শিক্ষিত ছাত্ররা, ধনীর দুলালরা অস্ত্র হাতে নিয়েছে। কী কারণে তাদের মনে অশান্তির সৃষ্টি হল। কী কারণে তারা এতজন বিদেশীকে হত্যা করল।’

এ জন্য বেকারত্বকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘যারা বেকার তারা সমাজের বোঝা, পরিবারের বোঝা। সরকারের পক্ষ থেকে কর্মসংস্থানের কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। এ কারণে এ ধরনের প্রতিহিংসার মধ্যে ঢুকেছে।’

সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলা প্রসঙ্গে সমাবেশে জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা আমাদের দেশে আগে ঘটেনি। হঠাৎ কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটলো- তার কারণ খুঁজে বের করতে অনেক গভীরে যেতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘দেশে যখন রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়, তখন এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে।’

গোয়েন্দা সংস্থার সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রওশন এরশাদ বলেন, ‘গোয়েন্দা বিভাগ কাজ করে বলে মনে হয় না। গুলশানের মতো কঠোর নিরাপত্তা এলাকায় কীভাবে ছেলেরা মডার্ন অস্ত্র নিয়ে ঢুকলো? কেন তাদেরকে গোয়েন্দারা ধরতে পারলো না?’

তিনি বলেন, ‘গুলশানের হামলার ঘটনায় টিভিতে দেখছিলাম- পুলিশ সন্ত্রাসীদের উদ্দেশ্য করে গুলি করছিল, পুলিশের রাইফেল দিয়ে গুলি বের হয় না। তারা রাইফেল পরিষ্কার করছে।’

জাতীয় পার্টির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলের কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের, মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এস এম ফয়সাল চিশতী, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু এমপি প্রমুখ।

এরআগে থেমে থেমে বৃষ্টি উপেক্ষা করে জাতীয় পার্টির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ছোট ছোট মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেয়।

সমাবেশ শেষে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে গান পরিবেশন করেন রওশন এরশাদ। এ সময় নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে কণ্ঠ মেলান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সরকারকে আলোচনায় বসার আহ্বান এরশাদের

আপডেট টাইম : ১১:১৪:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ জুলাই ২০১৬

দেশের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাস ও জঙ্গি হামলা বন্ধে সরকারকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ।

তিনি বলেন, ‘আসুন সবাই একসঙ্গে বসি। আলোচনা করি। আলোচনার মাধ্যমে একটা সুরাহা করি। পৃথিবীর মানুষ দেখুক আমরা একসঙ্গে বসতে পারি।’

শনিবার রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে এইচএম এরশাদ এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘সারা দেশ রক্তে ভাসছে। সস্ত্রাসী কর্মকাণ্ড একটি দলের মাঝে সীমাবদ্ধ ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে এর পরিধি বিস্তৃতি লাভ করেছে। আমরা রক্তে ভেজা নয়, বৃষ্টি ভেজা দেশ চাই।’

সাবেক রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি বলবো- সরকার জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। আজ সারা বাংলাদেশের মানুষ নিরাপত্তাহীনতা ভুগছে। মানুষ আতংকিত। এমন বাংলাদেশ তো আমরা চাইনি।’

তিনি বলেন, ‘যারা সন্ত্রাসী হামলা করেছে, তারা জেএমবি-আনসারুল্লাহ নয়, তারা ইউনিভার্সিটির ছাত্র। সবচেয়ে বিপজ্জনক হচ্ছে, তারা আত্মঘাতী। তারা জীবন দিতে এসেছে। যারা জীবন দিতে পারে, তারা জীবন নিতেও পারে।’

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের সরকার বুঝতে হবে- কেন শিক্ষিত ছাত্ররা, ধনীর দুলালরা অস্ত্র হাতে নিয়েছে। কী কারণে তাদের মনে অশান্তির সৃষ্টি হল। কী কারণে তারা এতজন বিদেশীকে হত্যা করল।’

এ জন্য বেকারত্বকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘যারা বেকার তারা সমাজের বোঝা, পরিবারের বোঝা। সরকারের পক্ষ থেকে কর্মসংস্থানের কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। এ কারণে এ ধরনের প্রতিহিংসার মধ্যে ঢুকেছে।’

সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলা প্রসঙ্গে সমাবেশে জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা আমাদের দেশে আগে ঘটেনি। হঠাৎ কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটলো- তার কারণ খুঁজে বের করতে অনেক গভীরে যেতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘দেশে যখন রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়, তখন এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে।’

গোয়েন্দা সংস্থার সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রওশন এরশাদ বলেন, ‘গোয়েন্দা বিভাগ কাজ করে বলে মনে হয় না। গুলশানের মতো কঠোর নিরাপত্তা এলাকায় কীভাবে ছেলেরা মডার্ন অস্ত্র নিয়ে ঢুকলো? কেন তাদেরকে গোয়েন্দারা ধরতে পারলো না?’

তিনি বলেন, ‘গুলশানের হামলার ঘটনায় টিভিতে দেখছিলাম- পুলিশ সন্ত্রাসীদের উদ্দেশ্য করে গুলি করছিল, পুলিশের রাইফেল দিয়ে গুলি বের হয় না। তারা রাইফেল পরিষ্কার করছে।’

জাতীয় পার্টির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলের কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের, মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এস এম ফয়সাল চিশতী, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু এমপি প্রমুখ।

এরআগে থেমে থেমে বৃষ্টি উপেক্ষা করে জাতীয় পার্টির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ছোট ছোট মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেয়।

সমাবেশ শেষে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে গান পরিবেশন করেন রওশন এরশাদ। এ সময় নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে কণ্ঠ মেলান।