ঢাকা ০৫:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গত দশ মাসে ২৫৭৫ নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:৪৩:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৩
  • ৫৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দেশে গত ১০ মাসে ২ হাজার ৫৭৫ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এসবের মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৩৯৭ জন, দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১১৫ জন, ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ৩১ জনকে। ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যা করেছে ১২ জন এবং ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে ৮৯ জনের সঙ্গে।

এ ছাড়া বৃহৎ সংখ্যার মধ্যে হত্যা করা হয়েছে ৪৩৩ জনকে, রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে ২৩১ জনের, শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে ২১১ জন, আত্মহত্যা করেছে ২০৭ জন, অপহরণের শিকার হয়েছে ১২২ জন এবং যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে ১৪২ জন।

আজ শনিবার (২৫ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন পরিষদের লিগ্যালএইড সম্পাদক রেখা সাহা। পরিষদটি ১২টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে।

লিখিত বক্তব্যে রেখা সাহা বলেন, আজ ২৫ নভেম্বর। আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস। আজ থেকেই শুরু হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ। সারা বিশ্বে নারীর প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধিতে উদ্বিগ্ন নারী সমাজের পক্ষ থেকে ৪২ বছর আগে ১৯৮১ সালে ল্যাটিন আমেরিকায় নারীদের এক সম্মেলনে ২৫ নভেম্বর আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়। ১৯৯৩ সালে ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত মানবাধিকার সম্মেলন দিবসটিকে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৯৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর জাতিসংঘ এ দিবসটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়। পরবর্তী সময়ে জাতিসংঘ নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও বন্ধের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রচার-প্রচারণা বেগবান করার উদ্দেশ্যে ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার মানবাধিকার দিবস পর্যন্ত ১৬ দিনের কর্মসূচি গ্রহণ করে, একইসঙ্গে সদস্য রাষ্ট্রসমূহকে এ সময়কালে কর্মসূচি গ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানায়। সে হিসেবে আমরাও কর্মসূচি গ্রহণ করেছি।

নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ব্যক্তি/পরিবার ও নাগরিক সমাজের করণীয়— পারিবারিক পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে এবং সহনশীলতার সংস্কৃতি চর্চায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে, পরিবারে শিশু-কিশোরদের নারীদের সম্মান দেওয়ার শিক্ষা দিতে হবে এবং তাদের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করতে হবে, পরিবারের সবক্ষেত্রে পুত্র ও কন্যার সমঅধিকার নিশ্চিত করতে হবে, পরিবারের অভ্যন্তরে যৌতুক, বাল্যবিবাহ, পারিবারিক সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে, সহিংসতার শিকার নারী ও কন্যার প্রতি সংবেদনশীল আচরণ করতে হবে এবং ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে তাদের সহযোগিতা করতে হবে, ধর্ষণের ঘটনায় যেকোনো ধরনের সালিশী মীমাংসা এবং ধর্ষণকারীর সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ বন্ধ করতে হবে এবং নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে শক্তিশালী সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

গণমাধ্যমের করণীয়— গণমাধ্যমে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে; জেন্ডারভিত্তিক শ্রম বিভাজনের সংস্কৃতি পরিবর্তনের জন্য গণমাধ্যমে প্রচার প্রচারণার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে; নারী ও কন্যার প্রতি অনলাইনে সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রতিকারের লক্ষ্যে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করতে হবে।

নারী আন্দোলনের করণীয়— নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ আন্দোলন শক্তিশালী করতে হবে; নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে তরুণ প্রজন্মসহ সকল শ্রেণিপেশার পুরুষদের যুক্ত করে জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে এবং নারীদের মধ্যে আত্মশক্তি, আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলার জন্য উদ্দীপনামূলক নতুন নতুন কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম, সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানুসহ অন্যরা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

গত দশ মাসে ২৫৭৫ নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার

আপডেট টাইম : ০৫:৪৩:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৩

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দেশে গত ১০ মাসে ২ হাজার ৫৭৫ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এসবের মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৩৯৭ জন, দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১১৫ জন, ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ৩১ জনকে। ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যা করেছে ১২ জন এবং ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে ৮৯ জনের সঙ্গে।

এ ছাড়া বৃহৎ সংখ্যার মধ্যে হত্যা করা হয়েছে ৪৩৩ জনকে, রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে ২৩১ জনের, শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে ২১১ জন, আত্মহত্যা করেছে ২০৭ জন, অপহরণের শিকার হয়েছে ১২২ জন এবং যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে ১৪২ জন।

আজ শনিবার (২৫ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন পরিষদের লিগ্যালএইড সম্পাদক রেখা সাহা। পরিষদটি ১২টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে।

লিখিত বক্তব্যে রেখা সাহা বলেন, আজ ২৫ নভেম্বর। আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস। আজ থেকেই শুরু হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ। সারা বিশ্বে নারীর প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধিতে উদ্বিগ্ন নারী সমাজের পক্ষ থেকে ৪২ বছর আগে ১৯৮১ সালে ল্যাটিন আমেরিকায় নারীদের এক সম্মেলনে ২৫ নভেম্বর আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়। ১৯৯৩ সালে ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত মানবাধিকার সম্মেলন দিবসটিকে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৯৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর জাতিসংঘ এ দিবসটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়। পরবর্তী সময়ে জাতিসংঘ নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও বন্ধের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রচার-প্রচারণা বেগবান করার উদ্দেশ্যে ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার মানবাধিকার দিবস পর্যন্ত ১৬ দিনের কর্মসূচি গ্রহণ করে, একইসঙ্গে সদস্য রাষ্ট্রসমূহকে এ সময়কালে কর্মসূচি গ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানায়। সে হিসেবে আমরাও কর্মসূচি গ্রহণ করেছি।

নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ব্যক্তি/পরিবার ও নাগরিক সমাজের করণীয়— পারিবারিক পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে এবং সহনশীলতার সংস্কৃতি চর্চায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে, পরিবারে শিশু-কিশোরদের নারীদের সম্মান দেওয়ার শিক্ষা দিতে হবে এবং তাদের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করতে হবে, পরিবারের সবক্ষেত্রে পুত্র ও কন্যার সমঅধিকার নিশ্চিত করতে হবে, পরিবারের অভ্যন্তরে যৌতুক, বাল্যবিবাহ, পারিবারিক সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে, সহিংসতার শিকার নারী ও কন্যার প্রতি সংবেদনশীল আচরণ করতে হবে এবং ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে তাদের সহযোগিতা করতে হবে, ধর্ষণের ঘটনায় যেকোনো ধরনের সালিশী মীমাংসা এবং ধর্ষণকারীর সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ বন্ধ করতে হবে এবং নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে শক্তিশালী সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

গণমাধ্যমের করণীয়— গণমাধ্যমে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে; জেন্ডারভিত্তিক শ্রম বিভাজনের সংস্কৃতি পরিবর্তনের জন্য গণমাধ্যমে প্রচার প্রচারণার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে; নারী ও কন্যার প্রতি অনলাইনে সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রতিকারের লক্ষ্যে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করতে হবে।

নারী আন্দোলনের করণীয়— নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ আন্দোলন শক্তিশালী করতে হবে; নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে তরুণ প্রজন্মসহ সকল শ্রেণিপেশার পুরুষদের যুক্ত করে জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে এবং নারীদের মধ্যে আত্মশক্তি, আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলার জন্য উদ্দীপনামূলক নতুন নতুন কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম, সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানুসহ অন্যরা।