উজানের ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তা নদীর পানি বিপত্সীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এর ফলে নীলফামারীর ডিমলার পূর্বছাতনাই, খগাখড়িবাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, খালিশা চাঁপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী, গয়াবাড়ী এবং জলঢাকার গোলমুণ্ডা, ডাউয়াবাড়ী, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের তিস্তাবেষ্টিত প্রায় ১৫ গ্রামের পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্র জানায়, উজানে ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে বুধবার সকাল ৬টার দিকে লালমনিরহাটের দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বেড়ে বিপত্সীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপরে ওঠে। (ওই পয়েন্ট বিপত্সীমা ৫২ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার)। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যারাজের সবকটি (৪৪টি) জলকপাট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ।
তিস্তায় পানি বাড়ার কারণে ডিমলার টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চরখড়িবাড়ী গ্রামে এলাকাবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত এক হাজার মিটার দৈর্ঘ্যের একটি বালির বাঁধের প্রায় এক শত মিটার ধসে নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম জানান, তিস্তা নদীতে পানি বাড়ার কারণে টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের তিস্তা নদীবেষ্টিত চরখড়িবাড়ী, পূর্বখড়িবাড়ী, দক্ষিণ খড়িবাড়ী ও উত্তর খড়িবাড়ী গ্রামের ছয় শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সকাল ৬টার দিকে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপত্সীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। সকাল ৯টার দিকে তিন সেন্টিমিটার কমে এবং দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিপত্সীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
কুড়িগ্রামে আগাম বন্যা, ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি এদিকে কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানান, ভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও দুধকুমারসহ কুড়িগ্রামের প্রধান নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। ফলে দেখা দিয়েছে আগাম বন্যা। এতে প্রায় চার হাজার পরিবারের ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলায় ২৩ ও ব্রহ্মপুত্রে ২৯ সেন্টিমিটার পানি বড়েছে। ধরলা নদীর পানি বিপত্সীমার খুব কাছ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বাড়ার ফলে নদ-নদী অববাহিকার চর, দ্বীপচর ও চরগ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিশেষ করে কুড়িগ্রাম সদর ফুলবাড়ী, রাজারহাট ও উলিপুর উপজেলার ধরলা অববাহিকার ৯টি ইউনিয়নের অনেক এলাকা প্লাবিত হওয়ায় বন্যা দেখা দিয়েছে।