রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে সৌদি আরবের জেদ্দায় শান্তি আলোচনা শুরু হয়েছে। শনিবার শুরু হওয়া বৈঠকে ইউক্রেনসহ ৪০টি দেশের ঊর্ধ্বতন কূটনীতিকরা উপস্থিত রয়েছেন।
তবে, এতে আমন্ত্রণ পায়নি মস্কো। এ বৈঠকের মাধ্যমে যুদ্ধ বন্ধের জন্য একটি খসড়া তৈরি করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খবর আল-জাজিরার।
এ বৈঠক নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়েরে প্রধান অ্যান্ড্রি ইয়েরমার্ক শুক্রবার এক সম্প্রচার মাধ্যমকে বলেন, ‘সৌদিতে আলোচনা খুব সুখকর হবে না।’ লোহিত সাগরের পাশে থাকা জেদ্দায় হওয়া বৈঠকে ইউক্রেনের হয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইয়েরমার্ক।
গত সপ্তাহে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট কার্যালয় থেকে বলা হয়েছিল, এই বৈঠকে কিয়েভ একটি সেশনের হোস্ট করবে এবং এতে ৪০ দেশের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
ইয়েরমার্ক বলেন, ‘আমাদের মধ্যে অনেক মতবিরোধ রয়েছে। আমরা অনেকের অবস্থান সম্পর্কে জেনেছি। আমাদের নীতিগুলো তাদের জানানো গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের প্রধান কাজ, সবাইকে ইউক্রেনের পক্ষে একত্রিত করা।’
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আগ্রাসন চালায় রাশিয়া, যা এখনও চলমান। এরপরই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে যুদ্ধ বাধে। রাশিয়ার কিয়েভ দখলের চেষ্টা ব্যাহত হলেও তারা পূর্ব ইউক্রেনের অনেক অঞ্চল দখলে নেয়। সেগুলো পুনরুদ্ধারে বর্তমানে লড়ে যাচ্ছে ইউক্রেনীয় বাহিনী।
জেদ্দায় হওয়া আলোচনা বৈঠকের উদ্দেশ্যের কথা জানিয়ে শুক্রবার সোদি আরবের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ) জানিয়েছে, সমস্যা সমাধানে ও চিরস্থায়ী শান্তি প্রণয়নে সৌদির বিশেষজ্ঞরা যাতে অবদান রাখতে পারে সে জন্যই এই বৈঠক। কোন কোন দেশের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেবেন তা না জানিয়ে সংবাদ সংস্থাটি জানায়, এই বৈঠকের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শকরা থাকবেন।
রুশ আগ্রাসনের পর থেকেই মস্কোকে সমর্থন দিয়ে আসছে বেইজিং। এর জেরে দেশটির নেতৃত্বের সমালোচনা করে আসছে কিয়েভকে সমর্থন দেওয়া পশ্চিমারা। এ সত্ত্বেও জেদ্দায় হওয়া বৈঠকে বিশেষ কূটনৈতিক লি হুইকে পাঠানোর কথা শুক্রবার জানিয়েছে চীন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েবিন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক কমিনিউটির সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক চীন। রাজনৈতিকভাবে ইউক্রেন সংকট সমাধানে আমরা গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে চাই।’
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধে গত জুনে কোপেনহাগনে একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে, বৈঠকের পরে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিবৃতি দেয়নি কেউ। জেদ্দার বৈঠকটিও সেই মডেলে করা হচ্ছে। আর এতে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার কর্মকর্তারাও উপস্থিত থাকবেন।
এদিকে, বৈঠকের জন্য শুক্রবার সৌদিতে পৌঁছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। উন্নয়নশীল দেশগুলোর কর্মকর্তা যারা জেদ্দার বৈঠকে অংশ নেবেন তাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। জেলেনস্কি বলেন, ‘এই বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, বিষয়টি খাদ্য নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত। আফ্রিকা, এশিয়া ও বিশ্বের অন্যান্য মহাদেশের লাখ লাখ মানুষের ভাগ্য নির্ভর করছে। কারণ, যত দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হবে ততই সবার জন্য ভালো।’