বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসাবে যারা বাংলাদেশে আসেন তারা আসল কিনা- তা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেখার দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর।
এর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, আমাদের বিদেশে কোনো অফিস নেই। আমরা দেশেরটা (পর্যবেক্ষক) খোঁজখবর নিতে পারি। যতখানি সম্ভব খোঁজ নিয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে আন্তর্জাতিক সংস্থার কে আসল, কে নকল সেটা আমাদের পক্ষে বলা সম্ভব নয়। সেটা দেখার দায়িত্ব হলো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। যেসব দেশ থেকে পর্যবেক্ষক আসবেন, আশা করা যায় সেসব দেশের যারা বিশেষজ্ঞ রয়েছেন, সেটা নিশ্চিত হয়েই ভিসা দেবেন।
বুধবার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্প্রতি ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম নামের একটি প্রতিষ্ঠান চারজন বিদেশি নাগরিককে বাংলাদেশে নিয়ে আসে। তারা নির্বাচন কমিশনসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই চারজন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নন বলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এমন পরিস্থিতিতে এ মন্তব্য করলেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।
তিনি আরও বলেন, তারা (চারজন বিদেশি) আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক কিনা সে বিষয়ে আলোচনা হয়নি। তারা একটি আন্তর্জাতিক ফোরাম হিসাবে এসেছেন। আমাদের সঙ্গে যারাই আলোচনা করতে চান তাদেরকেই আমরা সময় দিই। সরকার যদি তাদের ভিসা দেয় আমরা তো বুঝতে পারব না তারা পর্যবেক্ষক কিনা।
ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ভবিষ্যতে বিষয়টি দেখব। গণমাধ্যমের সব খবর দেখে তো ব্যবস্থা নিতে পারব না। আমাদের আরও অনেক কাজ আছে।
নির্বাচন পর্যবেক্ষণে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আমন্ত্রণের প্রক্রিয়ার বিষয়ে এ কমিশনার বলেন, কোনো সংস্থাকে কিন্তু নাম ধরে দাওয়াত দেওয়া হয় না। আমরা ওপেন বলি যে আপনারা (বিদেশি পর্যবেক্ষক) আসেন। আমরা যেটা চাইব সেটা হলো নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার যাদের অভিজ্ঞতা আছে এবং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের নির্বাচন যারা পর্যবেক্ষণ করেছেন, সেটা ব্যক্তি হোক আর সংস্থা হোক- তারাই যেন আসেন। তারাই সঠিকভাবে নির্বাচনটা পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করতে পারবেন। যাদের অভিজ্ঞতা নেই তাদের বিষয়টা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেখবে।
মো. আলমগীর বলেন, বিদেশি পর্যবেক্ষক কাউকে ভিসা দেওয়া হবে কিনা সেটা রাষ্ট্রের ব্যাপার। তবে আমাদের পক্ষ থেকে উদারনীতি থাকবে- যত সংখ্যক পর্যবেক্ষক আসতে চায়, আসুক। তিনি বলেন, ভিসার অনাপত্তি দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আর ভিসা দেয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা তৎপরতা দেখাচ্ছেন, এতে কোনো চাপ অনুভব করছেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, অনেক সময় সিইসি, কখনো কখনো কমিশনের সঙ্গে তারা কথা বলেন। তারা নির্বাচন প্রক্রিয়া, আইন-বিধি ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে চান। এছাড়া তারা আর কিছু বলেন না। এতে তো চাপের কোনো সুযোগ নেই।