ঢাকা ১১:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২০৪১ সালের মধ্যে এ দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ নগরে বসবাস করবে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:১৫:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ জুলাই ২০২৩
  • ৮০ বার

বর্তমান বিশ্বে ৫০ শতাংশের বেশি জনসংখ্যা নগরে বসবাস করছে। উন্নয়নশীল দেশগুলো এই দ্রুত নগরায়ণের ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ অত্যন্ত দ্রুতগতিতে নগরায়ণের দিকে যাচ্ছে। বাংলাদেশ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০২১-৪১) অনুসারে, ২০৪১ সালের মধ্যে এ দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ নগরে বসবাস করবে।

আর দ্রুত নগরায়ণের এই প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ছে রাজধানী ঢাকার ওপর। গতকাল শনিবার সকালে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) আয়োজিত ‘নগর দুর্যোগ ঝুঁকি ও করণীয় : প্রেক্ষিত ঢাকা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা এসব তথ্য তুলে ধরেন।

গোলটেবিল আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা জানান, বিবিএস-২০১১ মোতাবেক, নগরে বসবাসরত জনসংখ্যার প্রায় ৪৫ শতাংশ মানুষ ঢাকায় বসবাস করছে, যা বর্তমানে আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমান ড্যাপ অনুযায়ী, ঢাকার জনঘনত্ব ৩০০ থেকে ৮০০/একর, যা নগরটিকে করে তুলেছে অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ।

এ ছাড়া বিভিন্ন গবেষণা থেকে উঠে এসেছে যে নগরের প্রায় ৭৩ শতাংশ অবকাঠামোই অপরিকল্পিত। ইউএন-হ্যাবিট্যাটের প্রকাশনা থেকে তথ্য পাওয়া গেছে যে ঢাকায় পাবলিক স্পেস ও রাস্তার জন্য বরাদ্দ করা জমির পরিমাণ মাত্র ১৩.৫ শতাংশ।

এসব কারণ ঢাকার নগর দুর্যোগ মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে বিশাল অন্তরায় হিসেবে ভূমিকা পালন করছে। গোলটেবিল আলোচনায় নগরকেন্দ্রিক দুর্যোগ ঝুঁকি কমাতে আট দফা সুপারিশ করেছে বিআইপি।

বিআইপির আটটি সুপারিশের মধ্যে রয়েছে সিটি করপোরেশনের প্রণয়ন করা ভূমিকম্প কন্টিনজেন্সি প্ল্যান বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা (অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলো যথাযথ চিহ্নিতকরণ ও এসংক্রান্ত জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা); দুর্যোগবিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলি, ২০১৯-এ বর্ণিত যেসব সংস্থার কন্টিনজেন্সি প্ল্যান তৈরির কথা উল্লেখ রয়েছে তা অতি দ্রুত প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা; ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের দ্রুত কার্যক্রম গ্রহণ করে জলাধারগুলো চিহ্নিত করে বিশেষ করে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাকে প্রাধান্য দেওয়া; বিল্ডিং কোড প্রয়োগ সম্পর্কিত প্রস্তাবিত সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করা; পর্যায়ক্রমে সব ধরনের পেশাজীবী নিবন্ধন কার্যক্রম চালু করা; ইলেকট্রনিক কনস্ট্রাকশন পারমিটিং সিস্টেম কার্যকর করা; কাঠামো নকশা, যন্ত্রকৌশল নকশা, বৈদ্যুতিক নকশা ও প্লাম্বিং নকশা পরীক্ষা করা এবং প্রয়োগ নিশ্চিত করা।

বিআইপির সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসানের সঞ্চালনায় গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ একটি আদর্শ দেশ। দেশের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টেকনিক নিয়ে আমরা গর্বিত। তবে গত ছয় বছরে আমাদের দেশের এক লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হয়েছে।

এটা পৃথিবীর সব দেশেই হয়। আমাদের দেশেও হয়েছে। তবে এ ক্ষতির পরিমাণ আরো কমিয়ে আনতে হবে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

২০৪১ সালের মধ্যে এ দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ নগরে বসবাস করবে

আপডেট টাইম : ১১:১৫:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ জুলাই ২০২৩

বর্তমান বিশ্বে ৫০ শতাংশের বেশি জনসংখ্যা নগরে বসবাস করছে। উন্নয়নশীল দেশগুলো এই দ্রুত নগরায়ণের ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ অত্যন্ত দ্রুতগতিতে নগরায়ণের দিকে যাচ্ছে। বাংলাদেশ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০২১-৪১) অনুসারে, ২০৪১ সালের মধ্যে এ দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ নগরে বসবাস করবে।

আর দ্রুত নগরায়ণের এই প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ছে রাজধানী ঢাকার ওপর। গতকাল শনিবার সকালে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) আয়োজিত ‘নগর দুর্যোগ ঝুঁকি ও করণীয় : প্রেক্ষিত ঢাকা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা এসব তথ্য তুলে ধরেন।

গোলটেবিল আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা জানান, বিবিএস-২০১১ মোতাবেক, নগরে বসবাসরত জনসংখ্যার প্রায় ৪৫ শতাংশ মানুষ ঢাকায় বসবাস করছে, যা বর্তমানে আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমান ড্যাপ অনুযায়ী, ঢাকার জনঘনত্ব ৩০০ থেকে ৮০০/একর, যা নগরটিকে করে তুলেছে অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ।

এ ছাড়া বিভিন্ন গবেষণা থেকে উঠে এসেছে যে নগরের প্রায় ৭৩ শতাংশ অবকাঠামোই অপরিকল্পিত। ইউএন-হ্যাবিট্যাটের প্রকাশনা থেকে তথ্য পাওয়া গেছে যে ঢাকায় পাবলিক স্পেস ও রাস্তার জন্য বরাদ্দ করা জমির পরিমাণ মাত্র ১৩.৫ শতাংশ।

এসব কারণ ঢাকার নগর দুর্যোগ মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে বিশাল অন্তরায় হিসেবে ভূমিকা পালন করছে। গোলটেবিল আলোচনায় নগরকেন্দ্রিক দুর্যোগ ঝুঁকি কমাতে আট দফা সুপারিশ করেছে বিআইপি।

বিআইপির আটটি সুপারিশের মধ্যে রয়েছে সিটি করপোরেশনের প্রণয়ন করা ভূমিকম্প কন্টিনজেন্সি প্ল্যান বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা (অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলো যথাযথ চিহ্নিতকরণ ও এসংক্রান্ত জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা); দুর্যোগবিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলি, ২০১৯-এ বর্ণিত যেসব সংস্থার কন্টিনজেন্সি প্ল্যান তৈরির কথা উল্লেখ রয়েছে তা অতি দ্রুত প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা; ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের দ্রুত কার্যক্রম গ্রহণ করে জলাধারগুলো চিহ্নিত করে বিশেষ করে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাকে প্রাধান্য দেওয়া; বিল্ডিং কোড প্রয়োগ সম্পর্কিত প্রস্তাবিত সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করা; পর্যায়ক্রমে সব ধরনের পেশাজীবী নিবন্ধন কার্যক্রম চালু করা; ইলেকট্রনিক কনস্ট্রাকশন পারমিটিং সিস্টেম কার্যকর করা; কাঠামো নকশা, যন্ত্রকৌশল নকশা, বৈদ্যুতিক নকশা ও প্লাম্বিং নকশা পরীক্ষা করা এবং প্রয়োগ নিশ্চিত করা।

বিআইপির সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসানের সঞ্চালনায় গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ একটি আদর্শ দেশ। দেশের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টেকনিক নিয়ে আমরা গর্বিত। তবে গত ছয় বছরে আমাদের দেশের এক লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হয়েছে।

এটা পৃথিবীর সব দেশেই হয়। আমাদের দেশেও হয়েছে। তবে এ ক্ষতির পরিমাণ আরো কমিয়ে আনতে হবে।’