বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস। ১৯৮৭ সালের ১১ জুলাই বিশ্বের জনসংখ্যা ৫০০ কোটিতে উপনীত হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯০ সালে তারিখটিকে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ।
দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য, ‘জেন্ডার সমতাই শক্তি: নারী ও কন্যাশিশুর মুক্ত উচ্চারণে হোক পৃথিবীর অবারিত সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন’।
সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি গুরুত্বের সঙ্গে পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।
২০২২ সালের জনশুমারি থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আমাদের দেশে নারী ও পুরুষের অনুপাত ১০০: ৯৮.০৪। এবারের প্রতিপাদ্যের আলোকে আমাদের দেশে জেন্ডার সমতা ও নারীর অধিকার সমুন্নত রাখা এবং নারী ও কন্যাশিশুর শক্তিকে কাজে লাগানোর বিষয়টি গণপরিসরে ব্যাপক আসবে, এমনটিই কাম্য।
২০২২ সালের জনশুমারি ও গৃহগণনার তথ্যমাফিক বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬। জনঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ১ হাজার ১১৯। মোট প্রজননের হার জাতীয়ভাবে ২ দশমিক ৩ হলেও অঞ্চলভেদে এর তারতম্য রয়েছে। আমাদের বর্তমান জনসংখ্যানীতি ২০১২ সালে গৃহীত হয়। বাংলাদেশ জনসংখ্যানীতি ২০১২-এর উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে মোট প্রজননের হার ২ দশমিক ১ অর্জনের পথেই রয়েছি আমরা।
জাতিসংঘ ও এর অঙ্গসংগঠন গত তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসে বিশ্ববাসীকে শিশু, কিশোর-কিশোরী, তরুণ প্রজন্ম, সক্ষম দম্পতি, তাদের ছোট পরিবার গঠন, প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা, মা ও শিশুমৃত্যু রোধে স্বাস্থ্যসেবা, বাল্যবিবাহ না হওয়া, সহিংসতা, বৈষম্য ও মানবাধিকার নিয়ে প্রকৃতি-পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা প্রভৃতি বিষয়ে নানা সচেতনতামূলক বাণী দিয়ে আসছে। উদ্দেশ্য, বিশ্বে যেন জনবিস্ফোরণ না ঘটে। যেন কাক্সিক্ষত পর্যায়ে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এ ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশেও প্রতিবছর ১১ জুলাই বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসটি পালিত হয় অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে।
বিশ্বজুড়ে জনবিস্ফোরণের বোঝা এই একটি পৃথিবীর পক্ষে বহন করা বা মানুষ-প্রকৃতি-পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে। বর্তমান বিশ্বে প্রতি ১০ থেকে ১৫ বছরে ১০০ কোটি জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমন বৃদ্ধির প্রবণতা শুরু হয়েছে ১৯৮৭ সাল থেকে। তখন বিশ্বে জনসংখ্যা ছিল ৫০০ কোটি। জনসংখ্যা বৃদ্ধির এ প্রবণতায় ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্ব জনসংখ্যার যে চিত্রটি দাঁড়াবে, তা হিসাব করে জনমিতিবিদরা উদ্বেগের সঙ্গে বলেছেন-হয়তো একটা পৃথিবীতে এত মানুষের তখন সংকুলান হবে না। প্রয়োজন হবে আরও তিনটি পৃথিবীর।