ঢাকা ০৮:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
দেশ ও জাতি গঠনে “দৈনিক আমার দেশ” পত্রিকার কাছে নেত্রকোণার জনগণের প্রত্যাশা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত ভুল অস্ত্রোপচার, যা ঘটেছিল প্রিয়াঙ্কা সঙ্গে সচিবালয়ে উপদেষ্টা হাসান আরিফের তৃতীয় জানাজা সম্পন্ন সাবেক সচিব ইসমাইল রিমান্ডে অবশেষে বিল পাস করে ‘শাটডাউন’ এড়াল যুক্তরাষ্ট্র চাঁদাবাজদের ধরতে অভিযান শুরু হচ্ছে: ডিএমপি কমিশনার নির্বাচনের পর নিজের নিয়মিত কাজে ফিরে যাবেন ড. ইউনূস ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, আহত ১৬ জুলাই আন্দোলন বিগত বছরগুলোর অনিয়মের সমষ্টি: ফারুকী তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ‘সড়কে নৈরাজ্যের সঙ্গে রাজনৈতিক প্রভাব জড়িত

কেন ধূমপান করছেন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:০৩:২৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ জুলাই ২০২৩
  • ১২৮ বার

শুধু ধূমপায়ী এই অপরাধ করছেন না; তামাকের সাথে জড়িত ব্যবসায়ী, সিগারেট ও তামাকজাত পণ্য উৎপাদনের সাথে জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও এই একই অপরাধের সাথে জড়িত। কারণ, ধূমপান শুধু ধূমপায়ীর স্বাস্থ্যগত ক্ষতি করছে না, তামাকের ধোঁয়া পরোক্ষভাবে সবচেয়ে বেশী ক্ষতি করছে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও যুক্তরাজ্যের দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণায় উঠে এসেছে, ঢাকা সিটি কর্পোরেশন ও আশেপাশের এলাকার ৯৫ শতাংশ শিশুর শরীরে ক্ষতিকর নিকোটিনের উপস্থিতি রয়েছে। আর এর পেছনে কারণ হচ্ছে পরোক্ষ ধূমপান। বাসায় বাবা, বড় ভাই বা অন্য কেউ ধূমপান করে, এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় শিশু। রাস্তায়, বাসে, দোকানে, হোটেলে অনেকে সিগারেট খান। সেই ধোঁয়া যায় শিশুর শরীরে।

এ নিয়ে প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়, শরীরে নিকোটিন যাওয়ায় এই শিশুরা এখন হৃদরোগের ঝুঁকিতে পড়বে। তাদের ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া, হাঁপানিসহ অন্যান্য শ্বাসকষ্টজনিত রোগ দেখা দিতে পারে। নিকোটিনের কারণে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে। তাদের প্রজনন অঙ্গের ক্ষতি হবে। দেখা দেবে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, বধিরতা, মাথাব্যথা, মাথাঘোরা, ঝিমুনি। তাদের স্বাভাবিক বেড়ে ওঠা ও মানসিক বৃদ্ধি ব্যহত হতে পারে। আর, ক্যান্সার তো আছেই।

মোট কথা, নিকোটিন হচ্ছে বিষ। বিষ খেলে যেমন মানুষের মৃত্যু হয় তেমনি নিকোটিন গ্রহণ করলেও মানুষ মারা যায়।

রিপোর্টে আরও বলা হয় পরোক্ষ ধূমপানে গর্ভস্থ সন্তানেরও মারাত্মক ক্ষতি হয়। কারণ, গর্ভস্থ সন্তানের শরীরে যে রক্ত বাহিত হয় তার অক্সিজেনের ধারণক্ষমতা কমিয়ে দেয় তামাকের কার্বন মনো-অক্সাইড। নিকোটিন গর্ভফুলের রক্ত সরবরাহ হ্রাস করে।

ফলে মায়ের শরীর থেকে পর্যাপ্ত পুষ্টি গর্ভস্থ সন্তানের শরীরে যেতে পারে না। তাই শিশুর বৃদ্ধিও ব্যহত হয়। এছাড়া, ধূমপানের কারণে গর্ভপাত কিংবা অপরিণত শিশু জন্মাতে পারে। এ অপরিণত শিশুরা আবার সংক্রমণ বা অন্য কোনো মৃত্যুর ঝুঁকির মধ্যে থাকে।

ধূমপানের কুফল সম্পর্কে কমবেশি আমরা সবাই জানি, ধূমপায়ীও জানেন। কিন্তু তারপরেও মাদকাসক্তদের মতো এই নেশাগ্রস্ত ধূমপায়ীরা অবলীলায় ধূমপান করে যাচ্ছেন। এবং ধূমপায়ীর সংখ্যা পাশ্চাত্যে কমতে শুরু করলেও আমাদের দেশে বাড়ছে। কারণ, ব্যবসায়ীদের সম্মিলিত ধূমপান আগ্রাসনের কারণে। তামাক আগ্রাসনের কারণে।

তরুণসমাজকে গ্রাস করছে ই-সিগারেট, ভ্যাপিং ও তামাক

প্রিয় সুহৃদ! সিগারেটের পাশাপাশি নতুন আরেক ভয়ঙ্কর বিপদ নিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে ই-সিগারেট বা ভ্যাপিং সিগারেট বিশেষত তরুণ সমাজের মাঝে। দেশে ই-সিগারেটের ব্যবহার উদ্বেগজনকহারে বাড়ছে। এতে তরুণ এবং যুবসমাজকে দ্রুত গ্রাস করছে। যা জনস্বাস্থ্যের জন্যে অত্যন্ত হুমকিস্বরূপ বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ই-সিগারেট এবং ভ্যাপিং, সিগারেটের মতোই স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে বলেও তারা মনে করেন। তাই দ্রুত আইন সংশোধন করে তা বন্ধ করা উচিৎ বলে তারা মত দিয়েছেন।

ভারত, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড সিঙ্গাপুরসহ ৩২টি দেশ ই-সিগারেট এবং ভ্যাপিং পণ্য বিক্রয় নিষিদ্ধ করেছে। যুক্তরাজ্যসহ বহু দেশ এসব পণ্য নিষিদ্ধের জন্যে কাজ করছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, আইনটির সংশোধন ঈদের পরপরই কেবিনেটে যাচ্ছে। রিপোর্টে বলা হয় বাংলাদেশে দাবী উঠেছে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে অবশ্যই ই-সিগারেট বন্ধে আইন প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন করতে হবে।

বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. এ. বি. এম. আবদুল্লাহ এ বিষয়ে বলেন- ‘ই-সিগারেট এবং ভ্যাপিং সিগারেটের মতোই স্বাস্থ্যের জন্যে ক্ষতিকর’। ই-সিগারেটে স্বাস্থ্যের অনেক ঝুঁকি রয়েছে। এতে অ্যাজমা, হাঁপানী, ফুসফুসের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, হৃদরোগ হতে পারে। তাই এ বিষয়ে আইন করে পণ্যটি নিষিদ্ধ করার পরামর্শ দেন তিনি। তিনি বলেন, শুধু আইন করে বসে থাকলে হবে না, তা কার্যকরও করতে হবে, ভবিষ্যত প্রজন্মকে রক্ষা করতে হবে।

২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতি ৩০,৫৬০ কোটি টাকা!
বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের চিত্রও অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বাংলাদেশে ৩৫ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় তিন কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন।

ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহারকারী দুই কোটি ২০ লক্ষ এবং ধূমপায়ী এক কোটি ৯২ লাখ। তামাক ব্যবহারজনিত রোগে দেশে প্রতিবিছর এক লাখ ৬১ হাজার মানুষ অকালে মৃত্যুবরণ করে।

২০১৯ সালে প্রকাশিত ‘ইকোনোমিক কস্ট অব টোব্যাকো ইউজ ইন বাংলাদেশ; এ হেলথ কস্ট অ্যাপ্রোচ’ শীর্ষক গবেষণা ফলাফলে দেখা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারে অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৩০,৫৬০ কোটি টাকা।

র্বাংলাদেশেও ইমার্জিং ট্যোবাকো প্রডাক্টসের ব্যবহার তরুণ এবং যুব সমাজের মধ্যে বৃদ্ধি পাচ্ছে যা জনস্বাস্থ্যের জন্যে অত্যন্ত উদ্বেগজনক। রাস্তাঘাট, ক্যাম্পাস, তরুণদের আড্ডাস্থল, বিভিন্ন মার্কেট এবং রাস্তার মোড়ে গড়ে ওঠা ভ্যপিং ক্লাবে এসব পণ্যের ব্যবহার ব্যাপক হারে চোখে পড়ছে। ঢাকাসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে গড়ে উঠেছে অসংখ্য অনলাইন বিক্রয়কেন্দ্র।

তামাক ও সিগারেটের আগ্রাসন নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। তবে, তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে উঠতে পারে, যদি আমরা তামাক ও সব ধরনের সিগারেটকে মাদক হিসেবে গণ্য করে এটিও মাদকের ন্যায় বর্জনীয়- এই ভাবনাকে সামাজিক ভাবনায় রূপান্তরিত করি।

আসুন, এই ভাবনাকে আমরা সামাজিক ভাবনায় রূপান্তরিত করি। মাদক গ্রহণ যেমন পাপ, সিগারেট ও তামাক গ্রহণকেও সেইরকম পাপ হিসেবে গণ্য করার পাশাপাশি ধূমপান ও ই-ভ্যাপিংকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করি।

পরিচিত ধূমপায়ীরা এই অপরাধ ও পাপ থেকে যাতে বিরত থাকতে পারেন সেইজন্যে নিয়মিত তাদের জন্যে দোয়া করি। আমরা আমাদের এই ভাবনার সামাজিকায়ন অর্থাৎ আবালবৃদ্ধবণিতার মধ্যে সংঘবদ্ধভাবে এই ভাবনার প্রসার ঘটাতে পারলে অবশ্যই ধীরে ধীরে বাংলাদেশ ধূমপানের সংকট থেকে মুক্ত হবে।

পরম করুণাময় আমাদের সহায় হোন। ভালো থাকুন। নিজের কাজ সবচেয়ে ভালোভাবে করুন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

দেশ ও জাতি গঠনে “দৈনিক আমার দেশ” পত্রিকার কাছে নেত্রকোণার জনগণের প্রত্যাশা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

কেন ধূমপান করছেন

আপডেট টাইম : ০১:০৩:২৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ জুলাই ২০২৩

শুধু ধূমপায়ী এই অপরাধ করছেন না; তামাকের সাথে জড়িত ব্যবসায়ী, সিগারেট ও তামাকজাত পণ্য উৎপাদনের সাথে জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও এই একই অপরাধের সাথে জড়িত। কারণ, ধূমপান শুধু ধূমপায়ীর স্বাস্থ্যগত ক্ষতি করছে না, তামাকের ধোঁয়া পরোক্ষভাবে সবচেয়ে বেশী ক্ষতি করছে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও যুক্তরাজ্যের দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণায় উঠে এসেছে, ঢাকা সিটি কর্পোরেশন ও আশেপাশের এলাকার ৯৫ শতাংশ শিশুর শরীরে ক্ষতিকর নিকোটিনের উপস্থিতি রয়েছে। আর এর পেছনে কারণ হচ্ছে পরোক্ষ ধূমপান। বাসায় বাবা, বড় ভাই বা অন্য কেউ ধূমপান করে, এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় শিশু। রাস্তায়, বাসে, দোকানে, হোটেলে অনেকে সিগারেট খান। সেই ধোঁয়া যায় শিশুর শরীরে।

এ নিয়ে প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়, শরীরে নিকোটিন যাওয়ায় এই শিশুরা এখন হৃদরোগের ঝুঁকিতে পড়বে। তাদের ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া, হাঁপানিসহ অন্যান্য শ্বাসকষ্টজনিত রোগ দেখা দিতে পারে। নিকোটিনের কারণে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে। তাদের প্রজনন অঙ্গের ক্ষতি হবে। দেখা দেবে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, বধিরতা, মাথাব্যথা, মাথাঘোরা, ঝিমুনি। তাদের স্বাভাবিক বেড়ে ওঠা ও মানসিক বৃদ্ধি ব্যহত হতে পারে। আর, ক্যান্সার তো আছেই।

মোট কথা, নিকোটিন হচ্ছে বিষ। বিষ খেলে যেমন মানুষের মৃত্যু হয় তেমনি নিকোটিন গ্রহণ করলেও মানুষ মারা যায়।

রিপোর্টে আরও বলা হয় পরোক্ষ ধূমপানে গর্ভস্থ সন্তানেরও মারাত্মক ক্ষতি হয়। কারণ, গর্ভস্থ সন্তানের শরীরে যে রক্ত বাহিত হয় তার অক্সিজেনের ধারণক্ষমতা কমিয়ে দেয় তামাকের কার্বন মনো-অক্সাইড। নিকোটিন গর্ভফুলের রক্ত সরবরাহ হ্রাস করে।

ফলে মায়ের শরীর থেকে পর্যাপ্ত পুষ্টি গর্ভস্থ সন্তানের শরীরে যেতে পারে না। তাই শিশুর বৃদ্ধিও ব্যহত হয়। এছাড়া, ধূমপানের কারণে গর্ভপাত কিংবা অপরিণত শিশু জন্মাতে পারে। এ অপরিণত শিশুরা আবার সংক্রমণ বা অন্য কোনো মৃত্যুর ঝুঁকির মধ্যে থাকে।

ধূমপানের কুফল সম্পর্কে কমবেশি আমরা সবাই জানি, ধূমপায়ীও জানেন। কিন্তু তারপরেও মাদকাসক্তদের মতো এই নেশাগ্রস্ত ধূমপায়ীরা অবলীলায় ধূমপান করে যাচ্ছেন। এবং ধূমপায়ীর সংখ্যা পাশ্চাত্যে কমতে শুরু করলেও আমাদের দেশে বাড়ছে। কারণ, ব্যবসায়ীদের সম্মিলিত ধূমপান আগ্রাসনের কারণে। তামাক আগ্রাসনের কারণে।

তরুণসমাজকে গ্রাস করছে ই-সিগারেট, ভ্যাপিং ও তামাক

প্রিয় সুহৃদ! সিগারেটের পাশাপাশি নতুন আরেক ভয়ঙ্কর বিপদ নিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে ই-সিগারেট বা ভ্যাপিং সিগারেট বিশেষত তরুণ সমাজের মাঝে। দেশে ই-সিগারেটের ব্যবহার উদ্বেগজনকহারে বাড়ছে। এতে তরুণ এবং যুবসমাজকে দ্রুত গ্রাস করছে। যা জনস্বাস্থ্যের জন্যে অত্যন্ত হুমকিস্বরূপ বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ই-সিগারেট এবং ভ্যাপিং, সিগারেটের মতোই স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে বলেও তারা মনে করেন। তাই দ্রুত আইন সংশোধন করে তা বন্ধ করা উচিৎ বলে তারা মত দিয়েছেন।

ভারত, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড সিঙ্গাপুরসহ ৩২টি দেশ ই-সিগারেট এবং ভ্যাপিং পণ্য বিক্রয় নিষিদ্ধ করেছে। যুক্তরাজ্যসহ বহু দেশ এসব পণ্য নিষিদ্ধের জন্যে কাজ করছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, আইনটির সংশোধন ঈদের পরপরই কেবিনেটে যাচ্ছে। রিপোর্টে বলা হয় বাংলাদেশে দাবী উঠেছে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে অবশ্যই ই-সিগারেট বন্ধে আইন প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন করতে হবে।

বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. এ. বি. এম. আবদুল্লাহ এ বিষয়ে বলেন- ‘ই-সিগারেট এবং ভ্যাপিং সিগারেটের মতোই স্বাস্থ্যের জন্যে ক্ষতিকর’। ই-সিগারেটে স্বাস্থ্যের অনেক ঝুঁকি রয়েছে। এতে অ্যাজমা, হাঁপানী, ফুসফুসের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, হৃদরোগ হতে পারে। তাই এ বিষয়ে আইন করে পণ্যটি নিষিদ্ধ করার পরামর্শ দেন তিনি। তিনি বলেন, শুধু আইন করে বসে থাকলে হবে না, তা কার্যকরও করতে হবে, ভবিষ্যত প্রজন্মকে রক্ষা করতে হবে।

২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতি ৩০,৫৬০ কোটি টাকা!
বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের চিত্রও অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বাংলাদেশে ৩৫ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় তিন কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন।

ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহারকারী দুই কোটি ২০ লক্ষ এবং ধূমপায়ী এক কোটি ৯২ লাখ। তামাক ব্যবহারজনিত রোগে দেশে প্রতিবিছর এক লাখ ৬১ হাজার মানুষ অকালে মৃত্যুবরণ করে।

২০১৯ সালে প্রকাশিত ‘ইকোনোমিক কস্ট অব টোব্যাকো ইউজ ইন বাংলাদেশ; এ হেলথ কস্ট অ্যাপ্রোচ’ শীর্ষক গবেষণা ফলাফলে দেখা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারে অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৩০,৫৬০ কোটি টাকা।

র্বাংলাদেশেও ইমার্জিং ট্যোবাকো প্রডাক্টসের ব্যবহার তরুণ এবং যুব সমাজের মধ্যে বৃদ্ধি পাচ্ছে যা জনস্বাস্থ্যের জন্যে অত্যন্ত উদ্বেগজনক। রাস্তাঘাট, ক্যাম্পাস, তরুণদের আড্ডাস্থল, বিভিন্ন মার্কেট এবং রাস্তার মোড়ে গড়ে ওঠা ভ্যপিং ক্লাবে এসব পণ্যের ব্যবহার ব্যাপক হারে চোখে পড়ছে। ঢাকাসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে গড়ে উঠেছে অসংখ্য অনলাইন বিক্রয়কেন্দ্র।

তামাক ও সিগারেটের আগ্রাসন নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। তবে, তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে উঠতে পারে, যদি আমরা তামাক ও সব ধরনের সিগারেটকে মাদক হিসেবে গণ্য করে এটিও মাদকের ন্যায় বর্জনীয়- এই ভাবনাকে সামাজিক ভাবনায় রূপান্তরিত করি।

আসুন, এই ভাবনাকে আমরা সামাজিক ভাবনায় রূপান্তরিত করি। মাদক গ্রহণ যেমন পাপ, সিগারেট ও তামাক গ্রহণকেও সেইরকম পাপ হিসেবে গণ্য করার পাশাপাশি ধূমপান ও ই-ভ্যাপিংকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করি।

পরিচিত ধূমপায়ীরা এই অপরাধ ও পাপ থেকে যাতে বিরত থাকতে পারেন সেইজন্যে নিয়মিত তাদের জন্যে দোয়া করি। আমরা আমাদের এই ভাবনার সামাজিকায়ন অর্থাৎ আবালবৃদ্ধবণিতার মধ্যে সংঘবদ্ধভাবে এই ভাবনার প্রসার ঘটাতে পারলে অবশ্যই ধীরে ধীরে বাংলাদেশ ধূমপানের সংকট থেকে মুক্ত হবে।

পরম করুণাময় আমাদের সহায় হোন। ভালো থাকুন। নিজের কাজ সবচেয়ে ভালোভাবে করুন।