ঢাকা ১১:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তরমুজ ফ্রিজে রাখবেন না যে কারণে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:৫৭:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫
  • ১১ বার

গ্রীষ্মকালীন ফলগুলোর মধ্যে তরমুজ জনপ্রিয় একটি ফল। পানিশূন্যতা পূরণের পাশাপাশি শরীর ঠাণ্ডা রাখতে গরমে এই ফলটির জুড়ি মেলা ভার। লাল রঙের তরমুজে ৯২ ভাগই পানি, ৬ ভাগ চিনি এবং এতে অন্য উপাদান রয়েছে ২ ভাগ। ভিটামিন ‘এ’-তে ভরা সুস্বাদু এ ফলে রয়েছে অসংখ্য উপকারিতা। অনেকেই আছেন, যারা তরমুজ ফ্রিজে রেখে খান। কিন্তু আপনি কি জানেন, ফ্রিজে রাখা তরমুজ স্বাস্থ্যের জন্য ডেকে আনতে পারে বিপদ!

বিশেষজ্ঞরা বলেন, তরমুজ ফ্রিজে রাখলে এর পুষ্টিগুণ হারিয়ে যায়। এ ব্যাপারে জার্নাল অব অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড ফুড কেমিস্ট্রিতে প্রকাশিত একটি গবেষণা বলছে, ঘরের উষ্ণতাতেই সবচেয়ে ভালো থাকে তরমুজ। এ ক্ষেত্রে ৭০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা প্রায় ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতায় সবচেয়ে বেশি পুষ্টিগুণ মেলে তরমুজ থেকে।

কিন্তু ফ্রিজে রাখার সঙ্গে সঙ্গেই পুষ্টিগুণ নষ্ট হতে থাকে তরমুজের। পাশাপাশি স্বাভাবিকের চেয়ে ঠাণ্ডা তরমুজ শরীরে রক্ত চলাচলের স্বাভাবিক ছন্দের পরিবর্তন করে।তাই পয়সা খরচ করে যে তরমুজ কিনেছেন, তার পুরো পুষ্টিগুণ পেতে ও সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতে তরমুজ ফ্রিজে না রেখেই খাবার পরামর্শ দেন গবেষকরা।

চলুন জেনে নেওয়া যাক কাটা তরমুজ ফ্রিজে রাখার ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে-

ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি

কাটা তরমুজ ফ্রিজে রাখলে তাতে ব্যাকটেরিয়া জন্মানোর সম্ভাবনা থাকে, যা খাদ্য বিষক্রিয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। ফ্রিজের ঠাণ্ডা পরিবেশে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ধীর হলেও কাটা ফলের উন্মুক্ত পৃষ্ঠে ব্যাকটেরিয়া দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।

পুষ্টিগুণ হ্রাস

ফ্রিজে তরমুজ রাখলে এর পুষ্টিগুণ কমে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, ঘরের তাপমাত্রায় রাখা তরমুজে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা বেশি থাকে। ফ্রিজে রাখলে এই উপকারী উপাদানের পরিমাণ হ্রাস পায়, যা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়।

স্বাদ ও গুণগত মানের পরিবর্তন

ফ্রিজে রাখা তরমুজের স্বাদ, রং এবং গুণগত মান পরিবর্তিত হতে পারে। ফ্রিজের ঠাণ্ডা পরিবেশে তরমুজের প্রাকৃতিক মিষ্টতা এবং রসালো ভাব কমে যেতে পারে, যা খাওয়ার আনন্দ নষ্ট করে।

তরমুজ খেলে যেসব উপকার পাবেন-

হার্টের সুস্থতায়

তরমুজ খেলে ক্ষতিকারক কোলেস্টেরলকে দূরে রাখা যায়, যা হার্ট সংক্রান্ত রোগগুলোকে প্রতিরোধ করতে পারে। এতে উপস্থিত সিট্রোলিন হার্টের জন্য খুবই ভালো।

শরীর আর্দ্র রাখতে

তরমুজে রয়েছে ৯০ শতাংশ পানি, যা শরীরকে বেশ আর্দ্র রাখে।

হজম ক্ষমতা বাড়াতে

এই ফলটিতে প্রচুর পরিমাণে পানি রয়েছে, যা হজম ক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া এর ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ও খাবার হজম করিয়ে পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।

ক্যানসার প্রতিরোধ

তরমুজে থাকা লাইকোপেন ক্যানসারের প্রবণতা অনেকটা কমিয়ে আনে। এই লাইকোপেনের জন্যই তরমুজের রং গাঢ় লাল হয় এবং এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর, যা ক্যানসার রোধ করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি

তরমুজ ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।এ ছাড়া এতে রয়েছে ভিটামিন বি৬, যা অ্যান্টিবডি গঠন করতে সাহায্য করে। এর ফলে শ্বেত রক্তকণিকা সঠিক পরিমাণে তৈরি হয়।

পেশির ব্যথা উপশম

তরমুজে থাকা অ্যামাইনো অ্যাসিড সিট্রুলিন ব্যায়ামের পারফরম্যান্সের উন্নতিতে সহায়ক হতে পারে। এটি একই সঙ্গে পেশির ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।

ত্বকের স্বাস্থ্য সুরক্ষা

তরমুজে থাকা ভিটামিন ‘এ’ ও ভিটামিন ‘সি’ ত্বক সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ভিটামিন ‘সি’ ত্বককে কোমল ও চুল শক্ত রাখতে সহায়তা করে। অন্যদিকে ভিটামিন ‘এ’ ত্বকে নতুন কোষ গজানোর পাশাপাশি কোষের ক্ষতিপূরণে সহায়তা করে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

তরমুজ ফ্রিজে রাখবেন না যে কারণে

আপডেট টাইম : ০৬:৫৭:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫

গ্রীষ্মকালীন ফলগুলোর মধ্যে তরমুজ জনপ্রিয় একটি ফল। পানিশূন্যতা পূরণের পাশাপাশি শরীর ঠাণ্ডা রাখতে গরমে এই ফলটির জুড়ি মেলা ভার। লাল রঙের তরমুজে ৯২ ভাগই পানি, ৬ ভাগ চিনি এবং এতে অন্য উপাদান রয়েছে ২ ভাগ। ভিটামিন ‘এ’-তে ভরা সুস্বাদু এ ফলে রয়েছে অসংখ্য উপকারিতা। অনেকেই আছেন, যারা তরমুজ ফ্রিজে রেখে খান। কিন্তু আপনি কি জানেন, ফ্রিজে রাখা তরমুজ স্বাস্থ্যের জন্য ডেকে আনতে পারে বিপদ!

বিশেষজ্ঞরা বলেন, তরমুজ ফ্রিজে রাখলে এর পুষ্টিগুণ হারিয়ে যায়। এ ব্যাপারে জার্নাল অব অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড ফুড কেমিস্ট্রিতে প্রকাশিত একটি গবেষণা বলছে, ঘরের উষ্ণতাতেই সবচেয়ে ভালো থাকে তরমুজ। এ ক্ষেত্রে ৭০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা প্রায় ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতায় সবচেয়ে বেশি পুষ্টিগুণ মেলে তরমুজ থেকে।

কিন্তু ফ্রিজে রাখার সঙ্গে সঙ্গেই পুষ্টিগুণ নষ্ট হতে থাকে তরমুজের। পাশাপাশি স্বাভাবিকের চেয়ে ঠাণ্ডা তরমুজ শরীরে রক্ত চলাচলের স্বাভাবিক ছন্দের পরিবর্তন করে।তাই পয়সা খরচ করে যে তরমুজ কিনেছেন, তার পুরো পুষ্টিগুণ পেতে ও সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতে তরমুজ ফ্রিজে না রেখেই খাবার পরামর্শ দেন গবেষকরা।

চলুন জেনে নেওয়া যাক কাটা তরমুজ ফ্রিজে রাখার ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে-

ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি

কাটা তরমুজ ফ্রিজে রাখলে তাতে ব্যাকটেরিয়া জন্মানোর সম্ভাবনা থাকে, যা খাদ্য বিষক্রিয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। ফ্রিজের ঠাণ্ডা পরিবেশে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ধীর হলেও কাটা ফলের উন্মুক্ত পৃষ্ঠে ব্যাকটেরিয়া দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।

পুষ্টিগুণ হ্রাস

ফ্রিজে তরমুজ রাখলে এর পুষ্টিগুণ কমে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, ঘরের তাপমাত্রায় রাখা তরমুজে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা বেশি থাকে। ফ্রিজে রাখলে এই উপকারী উপাদানের পরিমাণ হ্রাস পায়, যা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়।

স্বাদ ও গুণগত মানের পরিবর্তন

ফ্রিজে রাখা তরমুজের স্বাদ, রং এবং গুণগত মান পরিবর্তিত হতে পারে। ফ্রিজের ঠাণ্ডা পরিবেশে তরমুজের প্রাকৃতিক মিষ্টতা এবং রসালো ভাব কমে যেতে পারে, যা খাওয়ার আনন্দ নষ্ট করে।

তরমুজ খেলে যেসব উপকার পাবেন-

হার্টের সুস্থতায়

তরমুজ খেলে ক্ষতিকারক কোলেস্টেরলকে দূরে রাখা যায়, যা হার্ট সংক্রান্ত রোগগুলোকে প্রতিরোধ করতে পারে। এতে উপস্থিত সিট্রোলিন হার্টের জন্য খুবই ভালো।

শরীর আর্দ্র রাখতে

তরমুজে রয়েছে ৯০ শতাংশ পানি, যা শরীরকে বেশ আর্দ্র রাখে।

হজম ক্ষমতা বাড়াতে

এই ফলটিতে প্রচুর পরিমাণে পানি রয়েছে, যা হজম ক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া এর ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ও খাবার হজম করিয়ে পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।

ক্যানসার প্রতিরোধ

তরমুজে থাকা লাইকোপেন ক্যানসারের প্রবণতা অনেকটা কমিয়ে আনে। এই লাইকোপেনের জন্যই তরমুজের রং গাঢ় লাল হয় এবং এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর, যা ক্যানসার রোধ করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি

তরমুজ ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।এ ছাড়া এতে রয়েছে ভিটামিন বি৬, যা অ্যান্টিবডি গঠন করতে সাহায্য করে। এর ফলে শ্বেত রক্তকণিকা সঠিক পরিমাণে তৈরি হয়।

পেশির ব্যথা উপশম

তরমুজে থাকা অ্যামাইনো অ্যাসিড সিট্রুলিন ব্যায়ামের পারফরম্যান্সের উন্নতিতে সহায়ক হতে পারে। এটি একই সঙ্গে পেশির ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।

ত্বকের স্বাস্থ্য সুরক্ষা

তরমুজে থাকা ভিটামিন ‘এ’ ও ভিটামিন ‘সি’ ত্বক সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ভিটামিন ‘সি’ ত্বককে কোমল ও চুল শক্ত রাখতে সহায়তা করে। অন্যদিকে ভিটামিন ‘এ’ ত্বকে নতুন কোষ গজানোর পাশাপাশি কোষের ক্ষতিপূরণে সহায়তা করে।