ঢাকা ০৮:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫, ২৯ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মানুষের মতো পাখিদেরও ‘ডিভোর্স’ হয়

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:৪৩:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই ২০২৩
  • ১১৯ বার

মানুষের মতো পাখিদেরও ডিভোর্স হয়! তাদের মধ্যেও দাম্পত্যের মতো সম্পর্ক তৈরি হয় এবং এ সম্পর্ক বিশেষ কিছু কারণে ভেঙে যায়। পাখিদের নিয়ে সম্প্রতি এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণায় উঠে এসেছে, পুরুষ পাখি যৌনতার ক্ষেত্রে বহুগামী, কিন্তু মাদি বা মেয়ে পাখি এরকম নয়।

বিবাহিত দম্পতিরা মতানৈক্য বা নানা কারণে একে অপরের থেকে আলাদা হয়ে যায়।

তার জন্য দীর্ঘ আদালতের কার্যক্রম পেরিয়ে তবে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ সম্পন্ন হয়। একই ধরনের আচরণ বা ঘটনা এখন পাখিদের মধ্যে পরিলক্ষিত হয়েছে।

পাখিরা তাদের সঙ্গীর সঙ্গ নানা কারণে ত্যাগ করে চলে যায়, আর এটাকে ‘বিচ্ছেদ’ হিসাবেও দেখা যেতে পারে। এই আচরণ বিভিন্ন প্রজাতির পাখিদের মধ্যেই লক্ষ্য করেছেন বিজ্ঞানীরা। পাখিরা প্রধানত তাদের একগামী সামাজিক মিলন পদ্ধতির জন্য পরিচিত, যেখানে তাদের সাধারণত অন্তত একটি প্রজনন মরশুমের জন্য একেক মিলন-সঙ্গী থাকে। তবে নানা কারণে পাখিরা তাদের সঙ্গীর সঙ্গ ত্যাগ করে অন্য সঙ্গী বেছে নিচ্ছে।

গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন যে, পাখিদের মধ্যে ‘বিবাহবিচ্ছেদ’-এর পেছনের কারণগুলো মানুষের মধ্যেও দেখা যায়। যেমন, যৌনতা নিয়ে দ্বন্দ্ব এবং পার্শ্ববর্তী পরিবেশ থেকে চাপ ইত্যাদি।

প্রসিডিংস অফ দ্য রয়্যাল সোসাইটি নামের জার্নালে প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক গবেষণায়, চীন এবং জার্মানির বিজ্ঞানীরা পাখিদের মধ্যে এই ‘বিবাহবিচ্ছেদ’-এর হারকে প্রভাবিত করে এমন প্রাথমিক কারণগুলোকে শনাক্ত করতে ২৩২টি পাখির প্রজাতির বিচ্ছেদের হার সম্পর্কিত অসংখ্য তথ্য পরীক্ষা করেছেন।

পাখিদের বিচ্ছেদের হার, উভয় লিঙ্গের মিলনের অসঙ্গতি, বহুবার সঙ্গী বদলের প্রবণতা, দূর-দূরান্তে স্থানান্তর এবং প্রাপ্তবয়স্ক পাখির মৃত্যু সহ বিভিন্ন কারণের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বিশ্লেষণ করেছে।

গবেষকরা দেখেছেন, পুরুষ পাখিরা যৌনতার ক্ষেত্রে বহুগামী, কিন্তু মাদি বা মেয়ে পাখিরা এরকম একেবারেই নয়। গবেষকদের বিশ্বাস, পাখিদের বিচ্ছেদের হারের সঙ্গে এর একটি ইতিবাচক সম্পর্ক রয়েছে। তবে গবেষকরা এটাও দেখেছেন যে, মাইগ্রেশনের দূরত্ব পাখির বিচ্ছেদের হারকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করে।

গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্যগুলো যে ইঙ্গিত পাওয়া যায় তা হলো- উচ্চ বিচ্ছেদের হারের পাশাপাশি পাখির প্রজাতিগুলো একে অপরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ প্রজনন সম্পর্কের যথেষ্ট প্রমাণও স্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হয়েছে। আর এখান থেকেই পুরুষ পাখিদের বহুগামিতার ইঙ্গিত মিলেছে।

গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে যে, ‘এই ফলাফলগুলো পাখিদের বিচ্ছেদ এবং সঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র একটি সাধারণ অভিযোজিত (যৌন নির্বাচন দ্বারা চালিত) বা অ-অভিযোজিত কৌশল হতে পারে না। বরং, এটি তাদের মিলন সম্পর্কিত দ্বন্দ্ব এবং মানসিক চাপের প্রতিক্রিয়াগুলির সংমিশ্রণের কারণেও হতে পারে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মানুষের মতো পাখিদেরও ‘ডিভোর্স’ হয়

আপডেট টাইম : ০৭:৪৩:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই ২০২৩

মানুষের মতো পাখিদেরও ডিভোর্স হয়! তাদের মধ্যেও দাম্পত্যের মতো সম্পর্ক তৈরি হয় এবং এ সম্পর্ক বিশেষ কিছু কারণে ভেঙে যায়। পাখিদের নিয়ে সম্প্রতি এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণায় উঠে এসেছে, পুরুষ পাখি যৌনতার ক্ষেত্রে বহুগামী, কিন্তু মাদি বা মেয়ে পাখি এরকম নয়।

বিবাহিত দম্পতিরা মতানৈক্য বা নানা কারণে একে অপরের থেকে আলাদা হয়ে যায়।

তার জন্য দীর্ঘ আদালতের কার্যক্রম পেরিয়ে তবে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ সম্পন্ন হয়। একই ধরনের আচরণ বা ঘটনা এখন পাখিদের মধ্যে পরিলক্ষিত হয়েছে।

পাখিরা তাদের সঙ্গীর সঙ্গ নানা কারণে ত্যাগ করে চলে যায়, আর এটাকে ‘বিচ্ছেদ’ হিসাবেও দেখা যেতে পারে। এই আচরণ বিভিন্ন প্রজাতির পাখিদের মধ্যেই লক্ষ্য করেছেন বিজ্ঞানীরা। পাখিরা প্রধানত তাদের একগামী সামাজিক মিলন পদ্ধতির জন্য পরিচিত, যেখানে তাদের সাধারণত অন্তত একটি প্রজনন মরশুমের জন্য একেক মিলন-সঙ্গী থাকে। তবে নানা কারণে পাখিরা তাদের সঙ্গীর সঙ্গ ত্যাগ করে অন্য সঙ্গী বেছে নিচ্ছে।

গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন যে, পাখিদের মধ্যে ‘বিবাহবিচ্ছেদ’-এর পেছনের কারণগুলো মানুষের মধ্যেও দেখা যায়। যেমন, যৌনতা নিয়ে দ্বন্দ্ব এবং পার্শ্ববর্তী পরিবেশ থেকে চাপ ইত্যাদি।

প্রসিডিংস অফ দ্য রয়্যাল সোসাইটি নামের জার্নালে প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক গবেষণায়, চীন এবং জার্মানির বিজ্ঞানীরা পাখিদের মধ্যে এই ‘বিবাহবিচ্ছেদ’-এর হারকে প্রভাবিত করে এমন প্রাথমিক কারণগুলোকে শনাক্ত করতে ২৩২টি পাখির প্রজাতির বিচ্ছেদের হার সম্পর্কিত অসংখ্য তথ্য পরীক্ষা করেছেন।

পাখিদের বিচ্ছেদের হার, উভয় লিঙ্গের মিলনের অসঙ্গতি, বহুবার সঙ্গী বদলের প্রবণতা, দূর-দূরান্তে স্থানান্তর এবং প্রাপ্তবয়স্ক পাখির মৃত্যু সহ বিভিন্ন কারণের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বিশ্লেষণ করেছে।

গবেষকরা দেখেছেন, পুরুষ পাখিরা যৌনতার ক্ষেত্রে বহুগামী, কিন্তু মাদি বা মেয়ে পাখিরা এরকম একেবারেই নয়। গবেষকদের বিশ্বাস, পাখিদের বিচ্ছেদের হারের সঙ্গে এর একটি ইতিবাচক সম্পর্ক রয়েছে। তবে গবেষকরা এটাও দেখেছেন যে, মাইগ্রেশনের দূরত্ব পাখির বিচ্ছেদের হারকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করে।

গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্যগুলো যে ইঙ্গিত পাওয়া যায় তা হলো- উচ্চ বিচ্ছেদের হারের পাশাপাশি পাখির প্রজাতিগুলো একে অপরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ প্রজনন সম্পর্কের যথেষ্ট প্রমাণও স্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হয়েছে। আর এখান থেকেই পুরুষ পাখিদের বহুগামিতার ইঙ্গিত মিলেছে।

গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে যে, ‘এই ফলাফলগুলো পাখিদের বিচ্ছেদ এবং সঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র একটি সাধারণ অভিযোজিত (যৌন নির্বাচন দ্বারা চালিত) বা অ-অভিযোজিত কৌশল হতে পারে না। বরং, এটি তাদের মিলন সম্পর্কিত দ্বন্দ্ব এবং মানসিক চাপের প্রতিক্রিয়াগুলির সংমিশ্রণের কারণেও হতে পারে।