ঢাকা ১১:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫, ২৯ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পার্বত্য অঞ্চলের রাতের আঁধারকে আলোকিত করেছে সোলার প্যানেল

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:০০:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ জুন ২০২৩
  • ১৩১ বার

মো.রেজুয়ান খানঃ
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় নিয়েছিলেন। পিতার ইচ্ছা পূরণে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবরই ছিলেন সিদ্ধহস্ত। সরকারের দায়িত্বভার গ্রহণের পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণের জন্য এক প্রান্ত থেকে শেষ প্রান্ত বিদ্যুতের আলো পৌঁছে দিতে এতটুকুও কার্পণ্য করেন নি। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছানোর নিরন্তর প্রচেষ্টা তিনি অব্যাহত রেখেছেন। দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলের জনগণও এখন বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে। সন্ধ্যের পর পার্বত্য অঞ্চল এখন আর আগের মতো আঁধার আর সুনসান নীরবতায় ঢাকা থাকে না।

প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলের প্রতিটি ঘরে ঘরে বিনামূল্যে সোলার প্যানেলের আলো পৌঁছে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, পার্বত্য চট্টগ্রামে ভৌগোলিক দুর্গমতার কারণে প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোকে জাতীয় গ্রীডলাইনে বিদ্যুতের আওতায় আনা আগামি কয়েক দশকে সম্ভব নয়। পার্বত্য অঞ্চলের দুর্গম এলাকায় শত শত বছর ধরে শত শত মানুষ দুর্গম জঙ্গলের গহীনে পাহাড়ের কোলে বসবাস করে আসছে। ছোটো ছোটো পাড়া গড়ে তোলে সেখানে ২০ থেকে ৮০ পরিবার বসবাস করছে। পার্বত্য অঞ্চল যুগের পর যুগ ছিল অন্ধকারাচ্ছন্ন। সরকারের সামাজিক সেবাগুলোর মধ্যে বিশেষ করে বিদ্যুৎ সেবা দুর্গম পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের কাছে সহজে পৌঁছানো সম্ভব ছিল না।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পার্বত্য তিন জেলার ২৬টি উপজেলায় বিদ্যুৎ সুবিধা বঞ্চিত ৪০ হাজার মানুষের জন্য সোলার হোম সিস্টেম সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বিতরণ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া কমিউনিটি সিস্টেমে পাড়াকেন্দ্র, ছাত্র হোস্টেল, অনাথ আশ্রম কেন্দ্র ও এতিমখানায় সোলারের আলো পৌঁছে দেওয়ারও নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।

সোলার প্যানেল হলো ছোটো আকারে একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণ কেন্দ্র। সোলার প্যানেল বিভিন্ন ফটোভোল্টাইক (পিভি) ভোল্টেজ ও ওয়াটজে বিভক্ত থাকে। সোলার হোম সিস্টেম একেকটি ১০০ ওয়াট পিক ক্ষমতা সম্পন্ন হয়। সোলার কমিউনিটি সিস্টেম ৩০০ ওয়াট পিক ক্ষমতাসম্পন্ন। সোলার প্যানেল সূর্যের আলো থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে। ২০ বছরের ওয়েরেন্টিসহ সোলার প্যানেল বিদ্যুৎ উৎপন্ন ও বিতরণ এর জন্য একটি চার্জ কন্ট্রোলার আছে। চার্জ কন্ট্রোলারটি চার্জার ব্যাটারি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। চার্জার ব্যাটারির ওজন ২৫ থেকে ২৬ কেজি হয়ে থাকে। ব্যাটারিটি জেলযুক্ত থাকে। এটাতে পানি দেওয়ার প্রয়োজন হয় না।

সোলার হোম সিস্টেম প্যানেলের সাহায্যে ৪টি এলইডি বাল্ব, একটি পাখা, একটি টিভি ও একটি মোবাইল চার্জার চালানো যায়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এর তত্ত্বাবধানে সোলার প্রকল্পের মাধ্যমে ৪০ হাজার সোলার হোম সিস্টেম এবং ২ হাজার ৫শ’টি প্রতিষ্ঠানকে কমিউনিটি সোলার প্যানেল বিতরণ কাজ ২০২৩ সালের জুন মাসের মধ্যে সম্পন্ন হচ্ছে। ৩ জুন ২০২৩ খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার বাটনাতলী দুর্গম এলাকায় ৯৫৪ পরিবারের মাঝে সোলার হোম সিস্টেম বিতরণ করা হয়। নির্বাচিত উপকারভোগীদের মাঝে বান্দরবান জেলায় ১৪ হাজার পরিবার, রাঙ্গামাটি জেলায় ১৩ হাজার পরিবার এবং খাগড়াছড়ি জেলায় ১৩ হাজার পরিবারকে সোলার হোম সিস্টেম বিতরণ করা হয়েছে।

একইভাবে বান্দরবান জেলায় ৯০০টি প্রতিষ্ঠান, রাঙ্গমাটি জেলায় ৮০০ প্রতিষ্ঠান ও খাগড়াছড়ি জেলায় ৮০০ প্রতিষ্ঠানকে সোলার কমিউনিটি সিস্টেম বিতরণের জন্য বিভাজন করা হয়েছে। সকল উপকারভোগীদের মাঝে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সোলার প্যানেল বিতরণ করা হয়েছে। সোলার প্যানেল সঠিকভাবে পরিচালনা ও ব্যবহার পদ্ধতি আয়ত্তে রাখার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী প্রত্যেক পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে ৬৫০ টাকা ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। ২১৭ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে জুলাই ২০২০ সাল থেকে জুন ২০২৩-এর মধ্যে সোলার প্যানেল প্রকল্পটির ২য় পর্যায়ের কাজ সম্পন্ন হবে। প্রধানমন্ত্রীর ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গিকার ও নির্দেশনাকে বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড।

পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেন সোলার প্যানেলের মাধ্যমে আলোর হাট বসেছে। সোলার প্যানেলের আলো দেখতে পেয়ে পাহাড়ি দুর্গম এলাকার মানুষ অনেক খুশি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ সবখানেই আলোর ঝলসানি। পাহাড়ি সহজ সরল বৃদ্ধ, নবীন সবাই এখন অন্ধকারের বুকে আলো জ্বলতে দেখছে। বিনামূল্যে সৌর বিদ্যুতের সুবিধা পেয়ে পার্বত্য অঞ্চলের জনগণের জীবন মান আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে। যার সুফল দেশের অর্থনীতির গতিকেও সম্প্রসারিত করেছে। আগে যেখানে সন্ধ্যে নামলেই পাহাড়িরা কুপি, হারিকেন আর জোনাকি পোকার নিভু নিভু আলো দেখতো, এখন সেখানকার মানুষ সোলার প্যানেলের আলোর ঝলসানো ফোয়ারা দেখছে।

সৌর আলোয় মানুষ রাতে এখন আগের চেয়ে কর্মে বেশি মনোনিবেশ করছে। আলোয় আলোয় এখানকার মানুষের জীবন সুখ ও আনন্দে উপভোগ্য হয়ে উঠেছে। রেডিও, টিভি, কম্পিউটার, মোবাইল, ডিশ এ্যান্টেনাসহ প্রযুক্তির ছোঁয়ায় এখানকার কিশোর, কিশোরী, যুবক, যুবতীরা মেতে ওঠেছে সর্বত্রই। কমিউনিটি সিস্টেমের মাধ্যমে বিদ্যুত বঞ্চিত পাড়াকেন্দ্র, ছাত্র হোস্টেল, অনাথ আশ্রম কেন্দ্র ও এতিমখানায় অধ্যয়নরত ছাত্রছাত্রীরা পড়াশুনায় আগের চেয়ে অনেক ভালো করছে।

তারা জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে বিজয় ছিনিয়ে নিচ্ছে। সোলার প্যানেলের আলো পেয়ে উপকারভোগীদের মধ্যে আনন্দের সীমা ছাড়িয়ে গেছে। রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার ওয়াগ্গা ইউনিয়নের বল্টুগাছেমন পাড়া গ্রামের মিতা চাকমা উচ্ছাসের সাথে বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের পাহাড়িদের জন্য বিদ্যুতের সুবিধা করে দিয়েছেন। কই আগের কোনো সরকারই তো পাহাড়ি জনগণের জন্য কিছু করে নাই। ঘরে সোলার বিদ্যুত পাওয়ায় আমার ৩ ছেলে মেয়ে পড়াশুনায় আগের চেয়ে অনেক মনোযোগী হয়েছে। স্কুলে তারা ভালো করছে। রাতে আমাদের কাজকামে অনেক সুবিধা হচ্ছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

পার্বত্য অঞ্চলের রাতের আঁধারকে আলোকিত করেছে সোলার প্যানেল

আপডেট টাইম : ০৯:০০:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ জুন ২০২৩

মো.রেজুয়ান খানঃ
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় নিয়েছিলেন। পিতার ইচ্ছা পূরণে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবরই ছিলেন সিদ্ধহস্ত। সরকারের দায়িত্বভার গ্রহণের পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণের জন্য এক প্রান্ত থেকে শেষ প্রান্ত বিদ্যুতের আলো পৌঁছে দিতে এতটুকুও কার্পণ্য করেন নি। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছানোর নিরন্তর প্রচেষ্টা তিনি অব্যাহত রেখেছেন। দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলের জনগণও এখন বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে। সন্ধ্যের পর পার্বত্য অঞ্চল এখন আর আগের মতো আঁধার আর সুনসান নীরবতায় ঢাকা থাকে না।

প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলের প্রতিটি ঘরে ঘরে বিনামূল্যে সোলার প্যানেলের আলো পৌঁছে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, পার্বত্য চট্টগ্রামে ভৌগোলিক দুর্গমতার কারণে প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোকে জাতীয় গ্রীডলাইনে বিদ্যুতের আওতায় আনা আগামি কয়েক দশকে সম্ভব নয়। পার্বত্য অঞ্চলের দুর্গম এলাকায় শত শত বছর ধরে শত শত মানুষ দুর্গম জঙ্গলের গহীনে পাহাড়ের কোলে বসবাস করে আসছে। ছোটো ছোটো পাড়া গড়ে তোলে সেখানে ২০ থেকে ৮০ পরিবার বসবাস করছে। পার্বত্য অঞ্চল যুগের পর যুগ ছিল অন্ধকারাচ্ছন্ন। সরকারের সামাজিক সেবাগুলোর মধ্যে বিশেষ করে বিদ্যুৎ সেবা দুর্গম পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের কাছে সহজে পৌঁছানো সম্ভব ছিল না।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পার্বত্য তিন জেলার ২৬টি উপজেলায় বিদ্যুৎ সুবিধা বঞ্চিত ৪০ হাজার মানুষের জন্য সোলার হোম সিস্টেম সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বিতরণ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া কমিউনিটি সিস্টেমে পাড়াকেন্দ্র, ছাত্র হোস্টেল, অনাথ আশ্রম কেন্দ্র ও এতিমখানায় সোলারের আলো পৌঁছে দেওয়ারও নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।

সোলার প্যানেল হলো ছোটো আকারে একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণ কেন্দ্র। সোলার প্যানেল বিভিন্ন ফটোভোল্টাইক (পিভি) ভোল্টেজ ও ওয়াটজে বিভক্ত থাকে। সোলার হোম সিস্টেম একেকটি ১০০ ওয়াট পিক ক্ষমতা সম্পন্ন হয়। সোলার কমিউনিটি সিস্টেম ৩০০ ওয়াট পিক ক্ষমতাসম্পন্ন। সোলার প্যানেল সূর্যের আলো থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে। ২০ বছরের ওয়েরেন্টিসহ সোলার প্যানেল বিদ্যুৎ উৎপন্ন ও বিতরণ এর জন্য একটি চার্জ কন্ট্রোলার আছে। চার্জ কন্ট্রোলারটি চার্জার ব্যাটারি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। চার্জার ব্যাটারির ওজন ২৫ থেকে ২৬ কেজি হয়ে থাকে। ব্যাটারিটি জেলযুক্ত থাকে। এটাতে পানি দেওয়ার প্রয়োজন হয় না।

সোলার হোম সিস্টেম প্যানেলের সাহায্যে ৪টি এলইডি বাল্ব, একটি পাখা, একটি টিভি ও একটি মোবাইল চার্জার চালানো যায়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এর তত্ত্বাবধানে সোলার প্রকল্পের মাধ্যমে ৪০ হাজার সোলার হোম সিস্টেম এবং ২ হাজার ৫শ’টি প্রতিষ্ঠানকে কমিউনিটি সোলার প্যানেল বিতরণ কাজ ২০২৩ সালের জুন মাসের মধ্যে সম্পন্ন হচ্ছে। ৩ জুন ২০২৩ খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার বাটনাতলী দুর্গম এলাকায় ৯৫৪ পরিবারের মাঝে সোলার হোম সিস্টেম বিতরণ করা হয়। নির্বাচিত উপকারভোগীদের মাঝে বান্দরবান জেলায় ১৪ হাজার পরিবার, রাঙ্গামাটি জেলায় ১৩ হাজার পরিবার এবং খাগড়াছড়ি জেলায় ১৩ হাজার পরিবারকে সোলার হোম সিস্টেম বিতরণ করা হয়েছে।

একইভাবে বান্দরবান জেলায় ৯০০টি প্রতিষ্ঠান, রাঙ্গমাটি জেলায় ৮০০ প্রতিষ্ঠান ও খাগড়াছড়ি জেলায় ৮০০ প্রতিষ্ঠানকে সোলার কমিউনিটি সিস্টেম বিতরণের জন্য বিভাজন করা হয়েছে। সকল উপকারভোগীদের মাঝে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সোলার প্যানেল বিতরণ করা হয়েছে। সোলার প্যানেল সঠিকভাবে পরিচালনা ও ব্যবহার পদ্ধতি আয়ত্তে রাখার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী প্রত্যেক পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে ৬৫০ টাকা ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। ২১৭ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে জুলাই ২০২০ সাল থেকে জুন ২০২৩-এর মধ্যে সোলার প্যানেল প্রকল্পটির ২য় পর্যায়ের কাজ সম্পন্ন হবে। প্রধানমন্ত্রীর ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গিকার ও নির্দেশনাকে বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড।

পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেন সোলার প্যানেলের মাধ্যমে আলোর হাট বসেছে। সোলার প্যানেলের আলো দেখতে পেয়ে পাহাড়ি দুর্গম এলাকার মানুষ অনেক খুশি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ সবখানেই আলোর ঝলসানি। পাহাড়ি সহজ সরল বৃদ্ধ, নবীন সবাই এখন অন্ধকারের বুকে আলো জ্বলতে দেখছে। বিনামূল্যে সৌর বিদ্যুতের সুবিধা পেয়ে পার্বত্য অঞ্চলের জনগণের জীবন মান আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে। যার সুফল দেশের অর্থনীতির গতিকেও সম্প্রসারিত করেছে। আগে যেখানে সন্ধ্যে নামলেই পাহাড়িরা কুপি, হারিকেন আর জোনাকি পোকার নিভু নিভু আলো দেখতো, এখন সেখানকার মানুষ সোলার প্যানেলের আলোর ঝলসানো ফোয়ারা দেখছে।

সৌর আলোয় মানুষ রাতে এখন আগের চেয়ে কর্মে বেশি মনোনিবেশ করছে। আলোয় আলোয় এখানকার মানুষের জীবন সুখ ও আনন্দে উপভোগ্য হয়ে উঠেছে। রেডিও, টিভি, কম্পিউটার, মোবাইল, ডিশ এ্যান্টেনাসহ প্রযুক্তির ছোঁয়ায় এখানকার কিশোর, কিশোরী, যুবক, যুবতীরা মেতে ওঠেছে সর্বত্রই। কমিউনিটি সিস্টেমের মাধ্যমে বিদ্যুত বঞ্চিত পাড়াকেন্দ্র, ছাত্র হোস্টেল, অনাথ আশ্রম কেন্দ্র ও এতিমখানায় অধ্যয়নরত ছাত্রছাত্রীরা পড়াশুনায় আগের চেয়ে অনেক ভালো করছে।

তারা জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে বিজয় ছিনিয়ে নিচ্ছে। সোলার প্যানেলের আলো পেয়ে উপকারভোগীদের মধ্যে আনন্দের সীমা ছাড়িয়ে গেছে। রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার ওয়াগ্গা ইউনিয়নের বল্টুগাছেমন পাড়া গ্রামের মিতা চাকমা উচ্ছাসের সাথে বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের পাহাড়িদের জন্য বিদ্যুতের সুবিধা করে দিয়েছেন। কই আগের কোনো সরকারই তো পাহাড়ি জনগণের জন্য কিছু করে নাই। ঘরে সোলার বিদ্যুত পাওয়ায় আমার ৩ ছেলে মেয়ে পড়াশুনায় আগের চেয়ে অনেক মনোযোগী হয়েছে। স্কুলে তারা ভালো করছে। রাতে আমাদের কাজকামে অনেক সুবিধা হচ্ছে।