২০১১ সালের ঘটনা তার চোখে পড়ার কথা নয়। ফুটবল বিশ্বকাপ বাছাইয়ের অ্যাওয়ে ম্যাচে লেবাননের কাছে চার গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। তবে বৃষ্টিসিক্ত নিজেদের মাঠে হোম ম্যাচে ২-০ গোলে জিতে ‘প্রতিশোধই’ নেওয়া হয়েছিল। সেই সময় আলেক্সান্দার ইলিচ সৌদি আরবের আল আহলি ক্লাবের সহকারী কোচ। এবার লেবাননের কোচ হয়ে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিতে যাচ্ছেন তিনি। ভারতে বেঙ্গালুরুর টুর্নামেন্টে ফিফা র্যাংকিংয়ে এগিয়ে থেকে টুর্নামেন্টে অন্যতম ফেভারিট লেবানন। এই টুর্নামেন্টে খেলছে বাংলাদেশও। তাই পুরোনো বিষয়টি মনে করিয়ে দিতেই ৫৩ বছর বয়সী সার্বিয়ান কোচ অবাকই হয়েছেন!
কোচিং ক্যারিয়ারে ইলিচ মধ্যপ্রাচ্যের দলগুলোর ডাগআউটে বেশি সময় কাটাচ্ছেন। লেবাননকে দিয়েই প্রথমবার কোনও জাতীয় দলের হয়ে ডাগআউটে দাঁড়ানোর অভিজ্ঞতা হয়েছে। ২০২২ সালে দায়িত্ব নিয়ে এখন পর্যন্ত জয়ের মুখ দেখতে পারেনি তার দল। তবে ২১ জুন থেকে শুরু হওয়া সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ঘিরে আশাবাদী। এই প্রথম দক্ষিণ এশিয়ার বাইরে থেকে লেবানন ও কুয়েত খেলছে। লেবানন কোচ এটিকে দেখছেন ইতিবাচক দৃষ্টিতে, ‘আমরা সাফের মতো টুর্নামেন্টে খেলতে পেরে খুশি। এখানে অন্য সাতটি দেশও থাকবে। এই টুর্নামেন্টে সবগুলো ম্যাচের মাধ্যমে আমরা আমাদের সবশেষ অবস্থানটা দেখতে পাবো।’
লেবানন ফেভারিট দল হয়েও অন্যদের বেশ সমীহ করছে। অন্তত সার্বিয়ান কোচ তাই বলছেন, ‘আমার মনে হয় প্রতিটি দলের সামনে সমান সুযোগ রয়েছে। তাদের পারফরম্যান্স ম্যাচের মাধ্যমে সরাসরি দেখানোর সুযোগ, তাদের ফুটবল জ্ঞানও। তবে এটা ঠিক, কুয়েত অন্যতম ফেভারিট দল, ভারতও রয়েছে। এটা মানতেই হচ্ছে। কুয়েতের বিপক্ষে কয়েক মাস আগে আমাদের খেলার অভিজ্ঞতা হয়েছে। তাদের দলটি মানসম্মত।’
লেবানন দলকে নতুন করে গড়ে তুলছেন তিনি। নতুনদের কাছে প্রত্যাশা তার একটু বেশি, ‘আমাদের দলটি বলতে গেলে নতুন। তাদের অনেক কিছু প্রমাণ করার আছে। অবশ্যই আমি মনে করি এই টুর্নামেন্টের মাধ্যমে সেই সুযোগ রয়েছে। আমরা কোন অবস্থায় আছি কিংবা কোথায় নিজেদের দেখতে চাই সেটাও।’
নিজেদের ট্রফি জেতার লক্ষ্যের কথা জানিয়ে দিতে ভুল করেননি ইলিচ। যদিও সরাসরি কিছু বলতে চাননি, ‘আমি একজন কোচ হয়ে প্রতিপক্ষ সব দলকে সম্মান করি। তাদের ফুটবল জ্ঞানকে সমানভাবে মূল্য দেই। আমি মনে করি এই টুর্নামেন্টের মূল্য রয়েছে। প্রতিটি ম্যাচেই নিজেদের প্রমাণের কিছু রয়েছে। সম্ভবত যারা টুর্নামেন্টে সেরাটা খেলবে, তারাই ট্রফি জিতবে। আমরা অনুশীলন শুরু করেছি। এই টুর্নামেন্টকে সিরিয়াসভাবেই নিচ্ছি। আমাদের শীর্ষে যাওয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।’
২০১১ সালে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে লেবাননকে বাংলাদেশ হারানোর প্রসঙ্গটা একটু দেরিতেই তার কাছে তোলা হলো। মনে করিয়ে দিতেই ইলিচ বললেন, ‘এটা আমার জন্য দারুণ একটা তথ্য। তবে সেই ম্যাচ সম্পর্কে আমার ধারণা নেই। ওই সময়টা বর্তমানের সঙ্গে তুলনা করতে পারি না। প্রত্যেকেই ফেভারিট হিসেবে খেলতে পছন্দ করে। সামনের ফলাফল দিয়ে আমাদের উচিত সেই মর্যাদা লাভ করা। আমি এই মুহূর্তে আমার দল নিয়ে ব্যস্ত আছি। কীভাবে আমাদের প্রতিনিধিত্ব থাকবে সেটা নিয়ে আছি। সময় গড়াতেই প্রতিপক্ষ সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেবো। বাংলাদেশও এর মধ্যে থাকবে।’
২০১০ সালে জোরান দর্দেভিচের হাত ধরে এসএ গেমস ফুটবলে বাংলাদেশ সোনার পদক পেয়েছিল। দর্দেভিচকে চিনতে পেরে ইলিচ জানালেন, ‘জোরান দর্দেভিচকে কিছুটা চিনতে পেরেছি। এটা জেনে ভালো লাগছে যে সার্বিয়ান কোচরা এখানে সাফল্য পেয়েছে। তাদের সম্পর্কে ভালো ধারণা আছে। আমাদের কোচদের মধ্যে আসলে সম্ভাবনা আছে।’