আইপিএল ক্রিকেটে কোন ক্রিকেটার কত টাকার বিনিময়ে আপনার প্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজিতে খেলছেন, তা তো ঘরে বসেই টিভিতে সরাসরি সম্প্রচার দেখে অনেক আগেই যেনে যান। ফলে, যে ব্যাপারটি আপনার নখদর্পণে, সেটা নিয়ে নিশ্চয় আলোচনা করে দরকার নেই। তাহলে অন্য ব্যাপার নিয়ে কথা বলা যাক। আচ্ছা, আইপিএ ক্রিকেটে কোন ব্যাপারটি আপনার সবচয়ে নজর কাড়ে? একমিনিটও না ভেবে শোনা মাত্রই নিশ্চিত বলে উঠবেন – চিয়ারলিডার্স। ওই আইপিএলের সময়ই তো সুদর্শনা বিদেশিনীদের চোখে পড়ে। স্বপ্লবসনাতে সবসময়ই সব পুরুষের মন বাঁধা।
তবে, এই প্রতিবেদন ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে সব ক্রিকেট অনুরাগীদের জন্যই। তাই জিজ্ঞাসা করছি, জানেন, ওঁরা কিন্তু আসলে চুক্তিবদ্ধ ডান্সার? তাই সম্মানের চোখে দেখুন। ভোগ্যপণ মোটেই নয়। লোলুপ দৃষ্টি বা খাটো চোখে দেখবেন না। ওঁরা কিন্তু শিল্পী। বলতে পারবেন, ওঁরা কত পারশ্রমিক পায়? আইপিএল ক্রিকেটে আটটি ফ্র্যাঞ্চাইজিরই নিজস্ব চিয়ারলিডার্স আছে চুক্তিবদ্ধ। আর দল বিশেষে, পারিশ্রমিকেরও ফারাক রয়েছে বিস্তর। আজ তা নিয়েই আলোচনা করা যাক –
৮. দিল্লি ডেয়ারডেভিলস
জিএমআর গ্রুপের মালিকানাধীন দিল্লি ফ্র্যাঞ্চাইজি। গত দশ বছরে এখনও পর্যন্ত একবারও আইপিএল ট্রফি জিতে পারেননি ডেয়ারডেভিলসরা। যাইহোক, চিয়ারলিডারদের ম্যাচপ্রতি সাড়ে ৯ হাজার থেকে ১০ হাজার ভারতীয় মুদ্রা পারিশ্রমিক দেওয়া হয় এখানে। দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের চিয়ারলিডারদের বার্ষিক আয় আড়াই লক্ষ থেকে ২ লাথ ৬০ হাজার টাকা।
৭. চেন্নাই সুপার কিংস
আইপিএল ক্রিকেটের সবচেয়ে সফল দল সবকিছু বিচার করলে। আট বছরের মধ্যে দু’বার ট্রফি জিতেছে ইন্ডিয়া সিমেন্টসের মালিকানাধীন এই টিম। তাছাড়া, প্রত্যেকবারই কোয়ালিফায়ারে খেলেছে। এখানে চিয়ারলিডাররা ম্যাচ প্রতি আয় করেন সাড়ে ৯ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা। আর বছরে আয় আড়াই লক্ষ থেকে ২ লক্ষ ৬০ হাজার ভারতীয় মুদ্রা।
৬. সানরাইজার্স হায়দরাবাদ
২০০৯ সালের আইপিএল চ্যাম্পিয়ন ডেকান চার্জাস দেউলিয়া হয়ে টিম তুলে নেওয়ার পর ২০১৩ সাল থেকে সানরাইজার্স তার জায়গায় খেলছে। কালানিথি মারানের সান গ্রুপের এই ফ্র্যাঞ্চাইজি অল্প সময়েই দারুণ উন্নতি করেছে। ২০১৬ সালে টিম আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়। এখানে চিয়ারলিডাররা সাড়ে ৯ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা ম্যাচপ্রতি পারিশ্রমিক পান। বছরে আয় ২ লাখ ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
৫. কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব
আইপিএল ক্রিকেটের এই টিমটি গত দশ বছরে একবারও ট্রফি আনতে না পারলেও ফাইনাল খেলেছে একবার। বলিউড অভিনেত্রী প্রীতি জিন্টার টিম ফুল এন্টারটেইনমেন্ট দেওয়ার চেষ্টা করে ফ্যানদের। আর তার বিনিময়ে সাড়ে ৯ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পারিশ্রমিক দেওয়া হয় ম্যাচপ্রতি চিয়ারলিডারদের। বছরে মোট আয় ২ লক্ষ ৫০-৬০ হাজার ভারতীয় মুদ্রা।
৪. রাজস্থান রয়্যালস
উদ্বোধনী আইপিএল চ্যাম্পিয়ন রাজস্থান রয়্যালস প্রতি বছরই দারুণ ক্রিকেট তুলে ধরে। যদি গত দু’বছর চেন্নাই সুপার কিংসের সঙ্গে নির্বাসিত ছিল টিম। দুই টিমই এবার কামব্যাক করছে আইপিএলে। রাজস্থান ফ্র্যাঞ্চাইজি তাদের চিয়ার লিডারদের জন্য ম্যাচ প্রতি সাড়ে ১১ হাজার টাকা থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ করে। বছরে দেয় ৩ লক্ষ ২০-২২ হাজার টাকা।
৩. রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর
দেশ থেকে কর ফাঁকি দিয়ে পালানো মদব্যবসায়ী বিজয় মালিয়ার টিম। ইউবি গ্রুপের এই টিম গত দশ বছরে একবারও কাপ জিততে পারেনি। কিন্তু, প্রত্যেক বছর দারুণ উপভোগ্য সবম্যাচ উপহার দেয়। চার-ছয় যত পড়ে, চিয়ারলিডারদের খাটনি ততটা। ফলে মাইনেও সেরকম দিতে হবে ম্যাচ পিছু। ১৬ হাজার টাকার মতো পারিশ্রমিক দেওয়া হয় ম্যাচ প্রতি। আর বোনাস সাড়ে ৩ হাজারের মতো। বছরে চিয়ারলিডার্সদের আয় ৫ লক্ষ ১০-২৫ হাজার টাকা।
২. মুম্বই ইন্ডিয়ান্স
ট্রফি জয়ের দিক থেকে আইপিএল ক্রিকেটে সবচেয়ে সফল টিম। রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের ভারতীয় ধনকুবের মুকেশ আম্বানির স্ত্রী দলের মালকিন। তিনবার আইপিএল বিজেতা এমআই ফ্র্যাঞ্চাইজি এবারে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন। ব্র্যান্ড ভ্যালুতেও সবার উপরে। এখানে চিয়ারলিডাররা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আয় করেন। ১৬ হাজার টাকার মতো পারিশ্রমিক দেওয়া হয় ম্যাচ প্রতি। সঙ্গে বোনাসের ব্যবস্থা সাড়ে ৬ হাজার টাকা। বছরে আয় ৮ লক্ষ থেকে ৮ লক্ষ ২০ হাজার ভারতীয় মুদ্রা।
১. কলকাতা নাইট রাইডার্স
জনপ্রিয়তার দিক থেকে কেকেআর যেমন সেরাদের সেরা, তেমনই বাদশাহর দিলও অনেক বড়। বলিউডের কিংখানের টিম দু’বার আইপিএল ট্রফি জিতেছে। মালিক হিসেবে কর্মচারীদের ভালো দেখভাল করার জন্য শাহরুখের সুনাম রয়েছে। আইপিএল ক্রিকেটে সবচেয়ে পারিশ্রমিক কলকাতা নাইট রাইডার্সের চিয়ারলিডাররাই পেয়ে থাকেন। ম্যাচ প্রতি মাইনে ১৯ থেকে ২০ হাজার ভারতীয় মুদ্রা। আর বোনাস দেওয়া হয় সাড়ে ৬ হাজার টাকা। সবমিলিয়ে বছরে আয় ১১ লক্ষ ২০-৪০ হাজার ভারতীয় মুদ্রা।