সিরিজটা টি-টোয়েন্টির, প্রতিপক্ষ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। সেই সিরিজের তিন ম্যাচেই ইংলিশদের হারিয়ে বাংলাওয়াশ করলো বাংলাদেশ। যেই টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে ধরা হতো দুর্বল দল, সেই বাংলাদেশই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংলিশদের হারালো সিরিজের তিন ম্যাচেই। শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ১৬ রানে হারিয়ে ধবলধোলাইয়ের ইতিহাস লিখলো সাকিব আল হাসানের দল।
মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ টি-টোয়েন্টিতে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে লিটন দাস আর নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটে ভর করে ১৫৮ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। আগের দুই ম্যাচ জিতেই সিরিজ নিশ্চিত করে ফেলা বাংলাদেশের সামনে আজ ছিলো ইংলিশদের বাংলা ওয়াশ করার হাতছানি। ব্যাটিং-বোলিং সব জায়গাতেই দুর্দান্ত খেলে ইংলিশদের হারিয়ে বাংলাওয়াশ সম্পন্ন করে টাইগার বাহিনী।
১৫৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামা ইংলিশদের সামনে প্রথম ওভারেই তানভীরের হাতে বল তুলে দেন সাকিব। প্রথম বলেই ডেভিড মালানের কাছে বাউন্ডারি হজম করলেও তৃতীয় বলেই ফিল সল্টকে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন তানভীর। ৫ রানেই প্রথম উইকেট হারায় ইংলিশরা।
দ্বিতীয় ওভারে বল করতে এসে দ্বিতীয় বলেই আবার বাংলাদেশকে উইকেট উপহার দিতে তাসকিন আহমেদ। মালানের বিরুদ্ধে এলবিডব্লিউয়ের আবেদনে আউট দিয়েছিলেন মাঠের আম্পায়ার, তবে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান এই ওপেনার। এরপর অবশ্য পাওয়ার প্লে’র বাকিটা সময় টাইগার বোলারদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছেন মালান আর বাটলার মিলে।
পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভার শেষে ১ উইকেটে ৪৭ রান তুলে ফেলেছে ইংলিশরা। সপ্তম ওভারে সাকিবকে টান চার ছয়ে ১৩ রান তোলেন মালান। ১০ ওভার শেষে নিরবিচ্ছিন্ন এই জুটিতে ১ উইকেটেই ৭৭ রান তোলে ইংল্যান্ড।
তাসকিনের করা ১১তম ওভারে দুই চার মারেন বাটলার আর মালান। পরের ওভারে ইনিংসে প্রথম বল হাতে নেওয়া মেহেদি হসান মিরাজকে চার-ছয় মেরে ১২ রান তোলেন বাটলার। ওভারের শেষ বলে এক রান নিয়ে ৪৩ বলে নিজের ফিফটি পূরণ করেন মালান।
১৩তম ওভারে এসে দলীয় ১০০ রান তোলে ইংলিশরা। ক্রমেই বিপদজনক হয়ে উঠতে থাকা এই জুটিকে থামান মুস্তাফিজ। ১৪তম ওভারে পরপর দুই বলে দুই ব্যাটারকে হারিয়ে চাপে পড়ে যায় ইংলিশরা।
ওভারের প্রথম বলেই ফিফটি করা মালানকে উইকেটের পেছনে বাংলাদেশের আশা জাগিয়ে তোলেন মুস্তাফিজুর রহমান। ৬ চার আর ২ ছয়ে ৪৭ বলে ৫৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন মালান। মালানকে ফিরিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে নিজের ১০০ উইকেট পূরন করেন মুস্তাফিজ।
পরের বলেই বাটলার ফেরেন রান আউট হয়ে। মিরাজের সরাসরি থ্রোতে সাজঘরের পথ ধরেন ৩১ বলে ৪০ করা বাটলার। ১০০ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে ইংলিশরা। উইকেটে নতুন দুই ব্যাটার মঈন আলী আর বেন ডাকেট।
১৫ ওভার শেষে ইংল্যান্ড তোলে ৩ উইকেটে ১০৮ রান। ১৬ তম ওভারে হাসান মাহমুদ বোলিংয়ে এলে তাকে একটি করে চার-ছয় মেরে ১১ রান তোলে মঈন আর ডাকেট। তবে পরের ওভারেই জোড়া উইকেটে মিরপুরের গ্যালারিকে আবারও উল্লাসে মাতান তাসকিন। ওভারের দ্বিতীয় বলে মিরাজের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন ১০ বলে ৯ রান করা মঈন। আর শেষ বলে ডাকেটের স্ট্যাম্প ভেঙে দিয়ে টাইগারদের জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলেন ঢাকা এক্সপ্রেস।
১৮ ওভার শেষে ইংলিশদের রান দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ১২৮। শেষ ১২ বলে জয়ের জন্য দরকার ৩১ রান। ১৯তম ওভারের প্রথম বলেই স্যাম কারানকে ফেরান সাকিব। ওভার থেকে আসে মাত্র ৪ রান। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিলো ২৭ রান। হাসান মাহমুদের প্রথম দুই বলে ২ চার মেরে ইংলিশদের নিভে যাওয়া প্রদীপে আশার আলো জ্বালেন ক্রিস ওকস। তবে আর পারেননি তারা। পরের চার বলে দুর্দান্তভাবে ইংলিশ ব্যাটারদের আটকে দিয়ে বাংলাদেশকে ১৬ রানের জয় এনে দেন হাসান মাহমুদ।