হাওর বার্তা ডেস্কঃ উত্তরের জনপদ গাইবান্ধার উঁচু এলাকা হিসেবে খ্যাত সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট ইউনিয়ন। এঁটেল মাটির এলাকায় হওয়ায় অধিকাংশ বাড়িতে একসময় মাটির ঘর ছিল। তবে আধুনিকতার ছোঁয়ায় ও কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘর।
স্থানীয়রা জানান, ঝড়-বৃষ্টি থেকে বাঁচার পাশাপাশি গরম ও শীতে বসবাসের দারুণ উপযোগী মাটির ঘর। তবে, আধুনিকতায় ছোঁয়ায় এবং কালের বিবর্তনে মাটির ঘর এখন তেমন একটা দেখা যায় না। মাটির ঘরের একটাই সমস্যা, তা হলো প্রবল বর্ষণে ঘরের ক্ষতি হয়। ভূমিকম্প বা বন্যা না হলে একটি মাটির ঘর শত বছরেরও বেশি স্থায়ী হয়।
ধাপেরহাট ইউনিয়নের বোয়ালীদহ গ্রামের মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এঁটেল বা আঠালো মাটি কাদায় পরিণত করে দুই-তিন ফুট চওড়া করে দেওয়াল তৈরি করা হতো। ১০-১৫ ফুট উঁচু দেয়ালে কাঠ বা বাঁশের সিলিং তৈরি করে তার ওপর খড়-কুটা অথবা ঢেউটিনের ছাউনি দেওয়া হতো। আর এই মাটির ঘর অনেক সময় দোতলা পর্যন্ত করা হয়। গৃহিণীরা মাটির দেওয়ালে বিভিন্ন রকমের আলপনা একে ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতেন।’
বড় ছত্রগছা গ্রামের মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘প্রায় ২৫ বছর আগে মাটির ঘর নির্মাণ করছি। এখনো ওই ঘর ভাঙেনি। আর এই ঘরগুলোতে বসবাসে অনেক শান্তি পাওয়া যায়।’
হিংগারপড়া গ্রামের মো. খয়রাজ্জামান সরকার বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বর্ষা মৌসুমে মাটির ঘরের ক্ষতি হয় বলে ইট-সিমেন্টের ঘর নির্মাণে উৎসাহী হচ্ছে মানুষ।’
ধাপেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম মিন্টু বলেন, ‘মাটির ঘর বসবাসের জন্য আরামদায়ক হলেও যুগের বিবর্তনে ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় অধিকাংশই মানুষ মাটির ঘর ভেঙে ইটের ঘর তৈরি করছে।’